সুস্থজীবনের জন্য শারিরিক শিক্ষা

  

সাধারণত আমরা জানি সক্ষমতা হল কোন কাজ করার সামর্থ্য। বৃহত্তর অর্থে সক্ষমতা বলতে জৈবিক অস্তিত্ব রক্ষা করে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন ধারণ করা সামর্থকে বোঝায়। এর মধ্যে ব্যক্তির শারীরিক-মানসিক ও সামাজিক দিকের সামর্থ্য হয়ে রয়েছ।তার মানে এই মনে করা যায় যে সক্ষমতা একটি সামগ্রিক ধারণা। সক্ষম ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে মানসিক সুস্থতা ও অনেকটা প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় । আবেগী ভারসাম্য সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে অনেকটা সমর্থক হন। শারীরিক সক্ষমতার এই সামগ্রিক ধারণার ব্যাখ্যা করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো সক্ষমতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

  1. বংশগতি অনুযায়ী শারীরিক স্বাস্থ্য হয়ে ওঠা
  2. দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং বিপদকালীন অবস্থায় প্রয়োজনীয় শক্তি দম সমন্বয় ক্ষমতা ও কৌশল বিনিয়োগ করা
  3. প্রতিদিনের জীবনের প্রয়োজনীয় কাজ কর্মের প্রতি যথাযথ মনোযোগ ও মূল্যবোধ করা
  4. আধুনিক জীবনযাত্রার জটিলতা থেকে চাপমুক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন আবেগিক ভারসাম্য বজায় রাখা
  5. দলের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং সমাজ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয়  সামাজিক চেতনা থাকা
  6. চলার পথে অদ্ভুত সমস্যা বলির সুস্থ সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বৃদ্ধি ও বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা রাখা
  7. গণতান্ত্রিক দেশের দায়িত্বশীল নাগরিকের কর্তব্য পালনের জন্য আবশ্যিক নৈতিকতা অর্জনের দৃঢ়তা বজায় রাখা

সুতরাং সক্ষমতা বলতে ব্যক্তির সামগ্রিক সামর্থককে বোঝানো হয়েছে।





আমাদের শারীরিক সক্ষমতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। ব্যায়াম না করলে কখনো শারীরিক ক্ষমতার অর্জন হয় না। শারীরিক সক্ষমতার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেজন্য সব বয়সের মানুষের নিয়মিতভাবে এক নির্দিষ্ট সময়ে ব্যায়াম করা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন দেখা যায় যা শরীরে সক্ষমতা এবং শরীরকে বৃদ্ধি করে।  শরীরকে সুস্থ এবং স্বাবলম্বী করে তোলে। প্রেম করলে আমাদের শরীরের যা যা পরিবর্তন হয় এবং তার উপকার সম্পর্কে কিছু ধারনা দেয়া হলো।

খেলাধুলা বা ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায় যার ফলে হৃদপিন্ডের কর্ম ক্ষমতাও অনেকটা বৃদ্ধি পায়। আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল না করলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। যার ফলে দেখা যায় অনেক মানুষ তাদের নিজেদের কাজ ঠিকভাবে করতে পারে না। কাজ করতে গেলে তাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শরীর সুস্থ না থাকলে মনও সুস্থ থাকে । তাই শরীরকে সবসময় ব্যামের মধ্য দিয়ে সুস্থ রাখতে হবে। যাতে মনটাও সব সময় সুন্দর থাকে হাসি খুশি থাকে। তাই সকল বয়সের লোকেদের ব্যায়াম করা অত্যন্ত প্রয়োজন। ব্যায়াম করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। গ্রামের ফলে হৃদপিণ্ডের হাট অনেকটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

আমরা জানি একজন সাধারন মানুষের হৃদপিণ্ড প্রতি মিনিট 130 মিলিটার রক্ত চলাচল করার ক্ষমতা রাখে এবং তা ভালোভাবে সঞ্চালন করতে পারে। ব্যায়াম করার সময় তো চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। এই বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরে যে কর্মক্ষমতা আগে থেকে থাকে তার চেয়েও দ্বিগুণ হয়ে যায়। এতে আমাদের হৃদপিণ্ড সকল কর্ম ক্ষমতায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের তুলনায় অনেকটা বেশি হয়ে যায়। শরীরে রক্ত চলাচল শরীরকে দুর্বল করে ফেলে তাই আমাদের প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করা উচিত বা খেলাধুলায় শরীরকে মানিয়ে নেয়া উচিত।

একজন সাধারণ মানুষ পরিশ্রম করলে পালস রেট বেড়ে যায়। পুনরায় স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। ফলে ক্লান্তি সহজে দূর হয় না। অপরদিকে আরেকজন ভালো খেলোয়াড় যখন খেলাধুলা বা ব্যায়াম করে তখন তার পালসেট বেশি বাড়ে না। এবং দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে তার ক্লান্তি খুব তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যায়।

একজন ব্যক্তি তার শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করলে দৈনন্দিন জীবনের সব কার্যক্রম অতিক্রম করে সুস্থ জীবন যাপনে অনুসরণ হবে।

  • যেকোনো শারীরিক কার্যক্রম অনায়াসে করতে পারবে
  • তার জীবনের দুর্ঘটনা  মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে
  • শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করলে মন ভালো থাকে ফলে  কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারবে



 সাধারণত আমরা জানি রক্তকণিকা তিন ধরনের।

১.. লোহিত কণিকা ২.. শ্বেত কণিকা ৩.. অনুচক্রিকা

খেলাধুলা ও ব্যায়াম করার সময় দেখা যায় যে আমরা ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করি । ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ ও প্রশ্বাসের সাথে কার্বন ডাই অক্সাইড বের হয়ে যায়। যার কারণে ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাসের ফলে বুকের প্রেসার অনেকটা বৃদ্ধি পায় ।ফলের শরীরের ক্ষমতাও অনেকটা বৃদ্ধি পায়। 

 

শক্তি বলতে হাতের মাংসপেশীর উন্নতির মাধ্যমে হাতের শক্তি বৃদ্ধি করাকে বোঝায়। সাধারণত ব্যায়াম করার আগে আমাদের প্রত্যেকের নিজ দেহ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। স্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়োজনে এই জ্ঞান আরো জরুরী। প্রত্যেকেরই শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তন্ত্র গুলোর সম্পর্কে ধারণা থাকলে অঙ্গের উন্নতির জন্য নির্দিষ্ট অনুশীলন করা যায় ।পাঁচ ধরনের শারীরিক সক্ষমতার দ্বারা শরীরকে উপযুক্ত করে গঠন করা যায়।

  • ডাম্বেল হাত দিয়ে ধরে উপরে উঠানো ও নামানো
  •  চিত  হয়ে শুয়ে ভার ওপরে তোলা ও নামানো
  •  মাটিতে দুই হাত, বরাবর ফাক রেখে পুশ আপ করা আস্তে আস্তে এক পা উপরের দিকে তুলে পুষ আপ করা
  •  মেডিসিন বল ছড়া
  • মাল্টি জিমে বিভিন্ন প্রকার হাতের ব্যায়াম করা

উল্লেখিত ব্যায়ামগুলো জিম এর প্রশিক্ষকের নির্দেশ নিয়মমাফিক করলে হাত ও কাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে

গতি বলতে বোঝানো হয় দ্রুততাকে। যে বেশি দ্রুততম সাথে যেতে পারে তার গতি বেশি বলে ধরা হয় ।গতি বৃদ্ধির জন্য পায়ের মাংসপেশি শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করা প্রয়োজনগতিশক্তির জন্য যা যা করা দরকার।

  • চিত হয়ে শুয়ে পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে পা উপরে উঠানো নামানো করতে হবে
  • জিমনেসিয়ামে পা দ্বারা লোহার ভার কে ঠেলে ভিতরে ও বাইরে নিতে হবে
  • ২৫ মিটার বা ৫০ মিটার দৌড় বরাবর অনুশীলন করতে হবে
  • ট্রেড মিলের উপর দাঁড়িয়ে দর অনুশীলন করতে হবে
  • বালির মধ্যে কিছুক্ষণ দৌড়ালেও মাংসপেশী সবল হয়

এভাবে অনুশীলন করলে পায়ের মাংসপেশী সবল ও বৃদ্ধি পায় ফলে তার গতি বৃদ্ধি পাবে

সব খেলাধুলার জন্য দম প্রয়োজন। তবে ফুটবল, লম্বা দূরত্বের দৌড়, ম্যারাথন, বাস্কেটবল এ খেলা গুলোতে দম সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় ।দম বাড়ানোর ব্যায়ামগুলো হল

  • আস্তে আস্তে দৌড় তবে অনেকটা সময় ধরে দৌড়াতে হবে
  • উঁচু-নিচু জায়গা দিয়ে বা অসমতল জায়গা দিয়ে দৌড়াতে হবে
  • প্রথম দিন  ১ কিলোমিটার, ৩ দিন পর দেড় কিলোমিটার তার ৭ দিন পর দুই কিলোমিটার এভাবে দূরত্ব বাড়াতে হবে এবং দৌড়াতে হবে


 

শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে অল্প জায়গার মধ্যে কে কত দ্রুততার সাথে কাজ করতে পারে তাকেই ক্ষিপ্রতা বলে। ক্ষিপ্রতা শক্তির ব্যায়ামগুলো হল

  • দ্রুত দৌড়ে যাওয়া ও বাঁশি সংকেতে পেলে থামতে হবে
  • ১০ মিটার দৌড় অত্যন্ত তীব্রতার সাথে দৌড় দিয়ে দাগ ছুয়ে আসা ও যাওয়া করতে হবে এভাবে সময় ধরে দৌড় অনুশীলন করতে হবে।
  • ২০ মিটার দৌড়ের জন্য দুই মিনিট সময় নির্ধারণ করতে হবে এ সময়ের মধ্যে কে কতবার দৌড়াতে পারে তা জেনে যে ভালো করেছে সে বিজয়ী হবে এভাবে পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পাবে

 শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করার জন্য এই শারীরিক ব্যায়ামগুলো করতে হবে

  • একটি উঁচু বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে পা সোজা রেখে শরীর বাকিয়ে দুহাত কানের সাথে রেখে আস্তে আস্তে সামনের দিকে শরীর বাঁকাতে হবে। যার শরীর যত বেশি বাকা হবে তার নমনীয়তা তত বেশি হবে।
  • চিৎ হয়ে শুয়ে দুই কানের কাছে দুই হাত রেখে হাটু ভাজ করে শরীরের উপর দিকে তোলা ও নামানো  একে আর্চিং বলা হয় তা করতে হবে
  • মাটিতে বসে দু পা সামনে সোজা করে রেখে দুহাত কানের সাথে লাগিয়ে পায়ের আঙ্গুল ছোঁয়ার চেষ্টা করতে হবে
  • প্রথম থেকে এই পাঁচটি গুণ অর্জন করতে পারলে তার শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং কাজে-কর্মে উৎসাহ এবং মন বসবে 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url