নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
আমাদের আশেপাশে গাছগুলোর মধ্যে অনেক সুপরিচিত ঔষধি গাছ রয়েছে। আশেপাশের সুপরিচিত
গাছের মধ্যে ঔষধি সম্পন্ন এবং ব্যবহারযোগ্য গাছ হল নিম গাছ। আমরা আরো বলতে পারি
পরিবেশ শুদ্ধ এবং পরিবেশকে জীবাণুমুক্ত রাখতে নিম গাছ
লাগানো হয়ে থাকে।
আপনি কি নিম পাতার উপকার এবং অপকার ব্যবহার বিধি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে এই
আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। নিচে এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নিন নিম পাতার
সমস্ত গুনাগুন উপকারিতা অপকারিতা ব্যবহারবিধি ও নিম পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।নিচে নিম পাতার ব্যবহার বিধি জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
পেজ সুচিপত্রঃ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- নিম গাছ সম্পর্কে কিছু কথা
- নিমপাতার ২০ টি উপকারি গুনাগুণ
- ডায়বেটিক্স নিয়ন্ত্রনে নিম পাতার গুন
- নিম পাতার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
- অজন কমাতে নিমপাতার গুরুত্ব
- এলারজির সমস্যা সমাধানে নিম পাতা
- পেটের সমস্যা দূর করতে নিম পাতার ব্যাবহার
- চুলের জন্য নিমপাতার উপকারিতা
- নিম পাতার অপকারিতা
- নিম পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
- এলারজি / চুল্কানি রূপচর্চা / ত্বকের যত্নে নিম পাতার ব্যাবহার
- নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে শেষ কথা
নিম গাছ অর্থাৎ নিম পাতা সম্পর্কে কিছু কথা
নিম পাতার অনেক উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি রয়েছে। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
ব্যবহার সম্পর্কে প্রত্যেকটি সচেতন মানুষকে জানতে হবে এবং এটা জানা খুবই জরুরী।
আজকের আমার এই আর্টিকেলের মধ্যে আপনি জানতে পারবেন নিম পাতার প্রয়োজনীয় তথ্য
সম্পর্কে। নিম পাতাতে কি কি ঔষধি গুনাগুন রয়েছে আমাদের নিম পাতার উপর সঠিক তথ্য
বা সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে জানিনা কত রোগের জন্য আমাদের অনেক জায়গায়
দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পরকে সমস্ত বিষয়গুলো
নিয়ে আলোচনা করব।
নিম পাতা থেকে শুরু করে নিম গাছের শেখর পর্যন্ত সবগুলোই আমাদের স্বাস্থ্য শরীরের
জন্য উপকারে আসে। নিম গাছটি হলো আমাদের শরীরের জন্য একটি ঔষধি গাছ যার গুনের কথা
বলে শেষ করা যাবে না। ভারত মহাদেশে খ্রিস্ট জন্মের 500 বছর পূর্বে নিম গাছের
অস্তিত্ব পাওয়া যায় অর্থাৎ খ্রিস্টান ধর্ম প্রচালনার আগে নিম গাছের প্রচালনা
শুরু হয়। নিম গাছের অনেক গুনাগুন রয়েছে সেই গুনাগুনকে বিবেচনা করে বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা নিম গাছকে ২১ শতকের বৃক্ষ হিসেবে পরিচিত করেছেন।
আরো পড়ুনঃ
কোটি টাকা আয় করার উপায়
নিম পাতার মধ্যে এমন কিছু ঔষধি গুনাগুন রয়েছে যা আমাদের স্বাস্থ্যের এবং শরীরের
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন মানুষ যদি নিয়মিত নিম পাতার রস খেয়ে থাকে
তাহলে তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি পায় পাশাপাশি তার শরীরের
বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এছাড়া এই গাছটি
প্রাকৃতিকভাবে হওয়ার কারণে তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না বা দেখা যায়
না। সাধারণত নিম পাতার রস খেতে অনেকটা তেতো হয়। অনেকটা পরীক্ষার পরে জানা যায়
যে তেতো জিনিস খেলে শরীরের পক্ষে অনেক উপকার হয় যেমন নিমগাছ।
নিম পাতার বিশটি উপকারী গুনাগুন
নিম পাতার অপকারিতার চেয়ে উপকারী বেশি। নিম পাতার উপকারিতার কোন শেষ নেই। নিম
পাতা এবং নিমগাছ আমাদের জন্য একটি উপর কারীর গাছ হিসেবে জানা যায়। নিম গাছের
উপকারের কথা বলে শেষ করা যাবেনা। নিম গাছের পাতা থেকে শুরু করে শিকড় পর্যন্ত এবং
তার ফল ফুল থেকেও আমরা অনেক উপকার পেয়ে থাকি। নিম গাছের অনেক উপকারিতা
রয়েছে এই গাছকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ঔষধি গাছ বলা হয়। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আছে। আর সেজন্য বিশ্ব সংস্থা
নিমকে 21 শতকের গাছ বলে প্রধান্য করেছেন।
রক্ত পরিষ্কার এ নিম পাতাঃ আমরা যদি নিম পাতার রস খেয়ে থাকি তাহলে রক্ত পরিষ্কার হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন
করে এই নিম পাতার রস। নিম পাতার রস রক্তে থাকা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক রোগ এবং
ক্ষতিকারক জীবাণুগুলো শরীর থেকে বের করে দিয়ে আপনার রক্তকে পরিষ্কার করে রাখে।
আর এজন্যই নিম পাতাগুলো পরিষ্কার পাত্রে ভালো করে বেটে নিতে হবে। বেটে নেওয়ার
পরে পাতার রস বের করে সেই রস আপনাকে খেতে হবে। তাহলে আশা করা যাবে দুই থেকে তিন
দিন খেলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কতটা উপকার হয়েছে।
পাচরা ও ঘোষ নিরাময়ে নিমপাতাঃ শরীরে খোশ বা পচরা বের হলে নিম পাতার ব্যবহার আপনার জন্য অপরিহার্য। খোশ পাচরার
জন্য নিম পাতার সাথে সামান্য কিছু কাঁচা হল পিষে নিবেন তারপরে আপনার শরীরের যে
স্থানে বের হয়েছে সেই আক্রান্ত স্থানে সাত থেকে দশ দিন নিয়মিত ব্যবহার করলে তা
ভালো হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনি যদি আগের কোন কাটা বা ক্ষতস্থান থাকে সেখানেও
লাগাতে পারবেন। তারপর দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে সে জায়গাও ভালো হয়ে গেছে।
মুখের রুচি কমে গেলে নিম পাতার ব্যবহারঃ আপনার মুখের রুচি যদি কমে যায় তাহলে আপনি নিয়মিত কিছুদিন মুখে রুচি ফেরাতে নিম
পাতার গুড়া খেতে পারেন। মুখের রুচি ফেরাতে নিম পাতার গুড়া খুবই কার্যকারী একটি
উপায়। তাই যাদের মুখের রুচিকত সমস্যা আছে তারা সুজির হালুয়ার সাথে নিম পাতার
গুড়া যদি মিশিয়ে খান তাহলে মুখে রুচি ফিরে পাবেন। নিম পাতা গুড়া রুচি বাড়াতে
অনেক সাহায্য করে।
কৃমি নিরাশনে নিমপাতাঃ আপনি যদি আপনার পেটের কৃমি নিরেশন করতে চান তাহলে প্রতিদিন আপনাকে খালি পেটে খেতে
হবে নিম পাতার রস। আপনি যদি নিয়মিত নিম পাতার রস সেবন করেন তাহলে কৃমির হাত থেকে
মুক্তি পাবেন। তবে নিম পাতার রস বাচ্চাদের খাওয়ানোর সময় সচেতন থাকতে হবে কখনোই
ভুলক্রমে এক দিনে বা একাধিক পরিমাণ রস খাওয়ানো যাবে না। তাহলে বাচ্চাদের নানান
ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে । এক সপ্তাহ খান তাহলে আপনার সব কৃমি নিরাসন হয়ে
যাবে
চুলকানিতে নিমপাতাঃ শরীরের অতিরিক্ত চুলকানি নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম পাতা বিশেষভাবে কার্যকারী ঔষধ।
চুলকানি ভালো করতে নিমপাতা আপনাকে দারুন ভাবে সাহায্য করবে। চুলকানি ভালো
করতে আপনি যদি নিম পাতা গরম করা পানি দিয়ে গোসল করেন তাহলে
চুলকানি দ্রুত সময়ে ভালো হয়ে যায়। সেই সাথে নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ একসাথে করে
পিষে চুলকানির স্থানে যদি প্রতিদিন লাগিয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব
চুলকানি ভালো হয়ে যাবে। তবে নিয়মমাফিক আপনাকে প্রায় এক সপ্তাহ প্রতিদিন নিমের
বাটা পানি দিয়ে গোসল করতে হবে এবং নিমের পাতার সাথে কাচা হলুদ বেটে যেসব
জায়গায় চুলকায় সমস্ত জায়গায় লাগাতে হবে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
বাত ব্যথায় নিম পাতার কার্যকারীঃ বাত ব্যথা প্রায় অনেক মানুষেরই হয়ে থাকে। বাত ব্যথার নিরাময়ের জন্য নিমের তেল
বিশেষ উপকারী। নিম পাতার এই তেল দিয়ে প্রতিদিন মেসেজ করলে বাত ব্যথা অনেকটা কমে
যায়। আগে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মতে বাতের ব্যথা কমাতে নিমপাতা এবং নিম ফলের
ব্যবহার করা হতো। এখন বর্তমানে দাঁতের চিকিৎসার জন্য বাত ব্যথার ওষুধ হিসেবে এসব
ব্যবহার করে থাকে।
চুলের খুশকি দূর করতে নিমপাতাঃ আপনারা জানেন না হয়তোবা নিম পাতা খুশকি দূর করতে অনেকটা ওষুধই হিসেবে কাজ করে
থাকে। খুশকি দূর করার জন্য নিমপাতা আপনাকে ভালো করে বাটতে হবে। তারপর সেটা পুরো
মাথাতে লাগাতে হবে কিছুক্ষণ রাখার পরে গরম পানি দিয়ে মাথাটি ধুয়ে ফেলবেন তাহলে
দেখবেন আপনি খুশকির হাত থেকে একদিনে রক্ষা পেয়ে গেছেন। নিম পাতা খুশকি দূর করতে
খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি যদি আক্রান্ত হয়ে থাকেন এই পদ্ধতিটি
অবলম্বন করবেন তাহলে আপনি দেখবেন খুশকি অতি সহজে দূর হয়ে গেছে।
কাশি হলে নিমপাতার ব্যবহারঃ আপনার যদি অতিরিক্ত কাশি হয়ে থাকে তাহলে নিম পাতার রস এক কার্যকারী ভূমিকা পালন
করে। সাধারণত যাদের ঠান্ডা সমস্যা রয়েছে যার ফলে অনেকের কাশি হয়ে থাকে তারা
ঘরোয়া উপায়ে ভালো করতে পারবেন। কাশি ভালো করার জন্য নিম পাতার রস খেতে হবে
কেননা নিম পাতার রস কাশি ভালো করার জন্য বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও
কাশি ভালো করার জন্য নিম পাতার রসের সাথে চাইলে মধু মিস করে খেতে পারেন। আপনার
কাশি ভালো করার জন্য উপরে নিয়মগুলো মেনে দুই থেকে তিন দিন খাবেন তাহলে আপনি
নিজেই ফলাফল পেয়ে যাবেন।
ভাইরাস প্রতিরোধ করতে নিম পাতাঃ ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ করার জন্য উপমহাদেশে অর্থাৎ ভারতে সাধারণত নিম পাতার ব্যবহার
করে থাকে। বর্তমান রোগ গুলো যেমন হাম,পক্স,চুলকানি, অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগ
প্রতিরোধ করার জন্য নিম পাতার ব্যবহার করে থাকেন। সেই সাথে নিম পাতা সিদ্ধ করার
পর যে পানি থাকে সেই পানি ব্যবহার করে গোসল করলে এসব রোগ থেকে অতি সহজে মুক্তি
পাওয়া যায়। আপনি যদি কোন ভাইরাস জনিত রোগ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে এই
কাজগুলো করলে আমার মনে হয় আপনি অতি সহজে ভাইরাসজনিত রোগ থেকে বেঁচে যাবেন। এসব
কিছু আপনার শরীরে বের হবে না।
জন্ডিস হলে নিম পাতাঃ আপনি যদি জন্ডিসের আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে নিম পাতার রস আপনার জন্য কার্যকারী
একটি ঔষধ। অনেকেই জানেন নিম পাতার রস খেলে জন্ডিস আক্রান্ত রুগী জন্ডিস থেকে
মুক্তি পায়। আপনার যদি এমন কোন রোগ অর্থাৎ জন্ডিস হয়ে থাকে তাহলে আপনি
নিয়মিতভাবে নিম পাতার রস খেতে পারেন। যদিও রসটা খেতে খুব তেত হয় তবুও আপনাকে
কিছুদিন খেতে হবে। আশা করি আপনি যদি জন্ডিস হলে নিয়মিত নিম পাতার রসটি খান তাহলে
আপনার রোগটি দূর হয়ে যাবে।
মুখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নিম পাতার ব্যবহারঃ আপনার মুখের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিম পাতা অনেকটা দরকারি ঔষধ কেননা নিম
পাতাতে রয়েছে এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া নামক পদার্থ। আপনি যদি প্রতিনিয়ত নিম
পাতা খান এর ফলে দেখবেন যে মুখের ভিতর অবস্থিত খুব ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকে
সেগুলো মারতে সাহায্য করে। এই নিম পাতা সেই সাথে আরো উপকারে আসে মুখের দুর্গন্ধ
এবং মুখ থেকে রক্ত পড়া এটি রোধ করতে অনেক সাহায্য করে। নিম পাতার রস এজন্য
আমাদের প্রতিনিয়ত খাওয়া দরকার পাশাপাশি নিমের শ্বাস দিয়ে তৈরিকৃত টুথপেস্ট
মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। আশা করা যায় এ থেকে আপনার অনেক উপকার হবে।
রক্তনালী প্রসারে নিমপাতাঃ নিম পাতা ব্যবহার করাতে আপনার রক্তের রক্তনালী প্রসারিত করে রক্ত সরবরাহকে উন্নত
রাখে। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে নিম পাতার রস খান তাহলে আপনার রক্তনালী কে প্রসারিত
করতে অনেকটা সাহায্য করবে। আরো যদি আপনি অনেক উপকার পেতে চান শরীরের জন্য
তাহলে আপনাকে নিয়মিত নিম পাতার যে কচি পাতাগুলো আছে তা রস করে খেতে পারেন।
এতে আপনি দারুন উপকার পাবেন আপনার শরীরের উপর।
ত্বক সৌন্দর্য রাখতে নিমপাতা ঃ আপনার ত্বক সুন্দর্য বৃদ্ধি রাখতে সাহায্য করে নিম পাতা। নিম পাতা ত্বক সৌন্দর্য
বৃদ্ধি রাখতে সাহায্য করে থাকে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের মতে প্রতিনিয়ত খালি পেটে
নিম পাতা খাওয়ার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং ত্বককে সুন্দর মসৃণ রাখতে সাহায্য
করে। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন ধরনের রোগের সম্ভাবনা থাকলে এগুলো অনেক গুণ পরিমাণ
কমিয়ে দেয় এবং ত্বক হয় অনেক বেশি সুন্দর। তাই নিম পাতার বিকল্প নেই তবে
সৌন্দর্য বৃদ্ধি রাখতে হলে আপনাকেও নিয়মিত সেবন করতে হবে নিম পাতা।আশা করি সকল
কিছু আপনি বুঝতে পেরেছেন।
মাথার উকুনের সমস্যার সমাধানে নিম পাতাঃ মাথায় উকুনের সমস্যা যদি আপনার থাকে সমাধানের জন্য নিম পাতা একটি কার্যকারী
ভূমিকা পালন করে থাকে। উকুনের সমস্যার সমাধানের জন্য আপনাকে নিম পাতা ভালোভাবে
বেটে আপনার মাথায় ব্যবহার করে 30 মিনিটের মত রাখতে হবে এবং তারপর সেগুলো ধুয়ে
ফেলতে হবে। আর আপনি যদি এভাবে নিম পাতা কিছুদিন ধরে ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে
মাথা থেকে উকুন চলে যাবে। উকুন দূর করতে নিমপাতা আপনার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন
করে থাকে। তাই যাদের মাথায় উকুন রয়েছে তারা উপরোক্ত পদক্ষেপগুলো নিয়মমাফিক
নিতে পারেন। আশা করি মাথা থেকে আপনার উকুন দূর হয়ে যাবে।
ক্ষতিকর টক্সিন দূর করাঃ এই ক্ষতিকারক টক্সিন দূর করতে নিম পাতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং
অপরিসীম। আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে ক্ষতিকারক টক্সিন এর প্রবেশ ঘটে যা আমরা বুঝতে
পারিনা। আর এসব টক্সিন যদি আমাদের শরীরে থেকে বের না করি তাহলে নানা ধরনের রোগের
সম্ভাবনা হয়ে থাকে। আর এই ক্ষতিকারক টক্সিন গুলো বের করতে নিম পাতা আমাদের জন্য
অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম পাতায় বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান
রয়েছে আর এসব উপাদানগুলো টক্সিন শরীরের থেকে বের করতে সাহায্য করে। তাই উপরোক্ত
বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিম পাতার ব্যবহার করতে হবে।
বসন্ত রোগীদের জন্য নিম পাতার ব্যবহার ঃবসন্ত রোগীদের নিম পাতা অনেক কাজ করে থাকে। বসন্ত রোগীদের
জন্য নিম পাতার বিছানায় শোয়াতে পারেন তবে নিম পাতার রোগী বিভিন্ন রকম ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা করে । তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের একজিমা চুলকানি ইত্যাদি
চর্মরোগ আক্রান্ত হলে নিম পাতা বেটে এর উপরে লাগাতে হবে তাহলে এসব রোগ থেকে
অনেকটা আরামদায়ক পাবে। বসন্ত রোগীদের জন্য নিম পাতার উপকারিতার কথা বলে শেষ করা
যাবেনা। তাই যারা বসন্ত রোগী আছেন তারা উপরের এই উল্লেখিত কাজগুলো নিয়মিতভাবে
করলে এসব রোগ থেকে অনেকটা মুক্তি পাবেন।
ফোড়া ভালো করতে নিমপাতাঃ আপনার শরীরে কোন রকম যদি ফোড়া হয়ে থাকে সেটা ভালো করার জন্য নিম পাতার ব্যবহার
করতে পারেন। আপনার শরীরে যে জায়গায় ফোড়া হয়েছে সেখানে নিম পাতা বেটে লাগিয়ে
দিযন কিছুক্ষণ পর দেখবেন আপনার সেই ফোড়াটি পেকে গিয়ে ফেটে গেছে এবং দু-একদিনের
মধ্যে সেই পড়াটি শুকিয়ে গেছে। এ থেকে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে নিম পাতার গুণ
কতটুকু রয়েছে আমাদের শরীরে রোগের ক্ষেত্রে নিম পাতার গুরুত্ব কতটুকু।
পোকামাকড় দমন করায় নিম পাতার ব্যবহারঃ আপনার বাড়িতে যদি পোকামাকরের আক্রমণ বেশি থাকে তাহলে পোকামাকড় দমনের জন্য
বর্তমান নিমপাতা উল্লেখযোগ্য একটি ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি শুকনো নিমপাতা
ডাল অথবা গম বিভিন্ন পাত্র রাখেন সেসব পাত্রে পোকামাকড় আক্রমণ করতে পারেনা।
এছাড়া নিমপাতা আপনি যদি বেটে তাতে ১০ অনুপাত পানি মিশিয়ে আপনার নিজের জমিতে
প্রয়োগ করেন তাহলে যে ফসলি জমিতে পোকামাকড় থাকে সেগুলো থেকে রক্ষা পাবেন। আবার
আপনি যদি বর্ষাকালে রাখা কাপড় চোপড়ের উপর থেকে বাজে গন্ধ পান সেসব
জায়গায় আপনি যদি নিম পাতা রেখে দেন তাহলে পোকামাকড় হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার
পাশাপাশি বাজে দুর্গন্ধ হাত থেকেও রক্ষা পাবেন।
ব্রণের সমস্যার সমাধানে নিমপাতাঃ ব্রণের সমস্যা সমাধান করতে নিম পাতার রস গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় একটি
ঔষধ। আপনি যদি নিয়মিত ভাবে নিম পাতার রস খান তাহলে আপনার তো অপশন থাকবে এবং
ব্রণের সমস্যা থেকেও অনেক মুক্তি পাবেন। এছাড়াও আপনি যদি নিয়মিতভাবে নিম পাতার
গোড়া পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে নিয়মিতভাবে মুখ ধুতে থাকেন তাহলে
ব্রণের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। সেই সাথে আপনার যদি কোন রকম ব্রণ আগে থেকে হয়ে
থাকে তাহলে সেই ব্রণের ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া কমে যাবে।
এছাড়াও নিম গাছের বাকল এবং নিম গাছের ফল ফুল বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসার
ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আপনি বলতে পারেন নিমগাজ পুরোটাই একটি ঔষধি
উপকারী গাছ। নিম গাছের বিভিন্ন অংশ মানুষের বিভিন্ন রকম উপকারে আসে। তাই আমাদের
সকলের উচিত আমাদের বাড়ির পাশে বা প্রত্যেকটি বাড়িতে নিম গাছ লাগানো। নিম গাছ
লাগানো এবং সঠিকভাবে পরিচর্যা করা তাহলে এ থেকে আমরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে
রক্ষা পাবো।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ নিম পাতার গুণ
আপনাদের যাদের ডায়াবেটিক্স নামক রোগ আছে তাদের জন্য নিম পাতা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণীয় একটি ঔষধ। এমনকি যারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তাদের
জন্য নিম পাতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঔষধ হিসেবে পরিচিত পায়। কারণ নিম পাতা
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে অর্থাৎ নিম পাতা ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের
শর্করা মাত্রা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
বর্তমানে অনেক মানুষ এই ভয়ংকর রোগ ডায়াবেটিক্স এ আক্রান্ত হয়ে
রয়েছে। তাই যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে তারা যদি নিয়মিত ভাবে নিমের পাতার রস
খায় তাহলে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে। প্রতিদিন নিয়মিত যদি নিম
পাতার রস খাওয়া যায় তাহলে তাদের রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই
যাদের ডাইবেটিস সমস্যা আছে তারা প্রতিদিন চেষ্টা করবেন নিয়মিতভাবে নিম পাতার রস
খাওয়ার। আশা করি এতে আপনার অনেক উপকার হবে।
নিম পাতায় রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা
যাদের শরীরে বিভিন্নভাবে রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা কম থাকার জন্য প্রতিনিয়ত অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শরীরের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে
রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য শরীরকে সক্ষমতার দিকে গড়ে নিয়ে যেতে
হবে। নিম পাতার রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নিম
পাতার রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে শক্তিশালী করে থাকে আর এজন্যই সহজে
শরীরের কোন রোগ আক্রমণ করতে পারে না।
আপনি যদি নিয়মিত নিম পাতার রস খেয়ে থাকেন তাহলে শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। তাই
নিয়মিত প্রতিদিনের তালিকায় রাখুন নিম পাতার রস। এতে করে আপনি নিজেই বুঝতে
পারবেন আপনার শরীরের যত রোগ আছে তা নিয়মিত নিম পাতার রস খাওয়ার ফলে আস্তে আস্তে
কমতে থাকবে। এক সময় আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন নিম পাতা আপনার কতটুকু উপকার করেছে।
যার ফলে আমাদের প্রতিনিয়ত নিয়ম করে নিম পাতার রস খাওয়া উচিত।
ওজন কমাতে নিম পাতার গুরুত্ব
ওজন কমাতে নিম পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রিয় পাঠক আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে
নিয়মিত খেতে হবে আপনাকে নিম পাতা। নিম পাতা ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে
থাকে। আপনি যদি নিয়মিত নিম পাতা খান তাহলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি যদি আপনার থাকে
তাহলে সেগুলো ঝরে যাবে। তাছাড়াও নিম পাতার রস শরীরের অতিরিক্ত চর্বি হওয়াকে কমে
ফেলে যাতে আপনার শরীরে কোনরকম চর্বি জমতে না পারে সেদিকে গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয় ।
এই নিম পাতার রস আপনি যদি প্রতিনিয়ত নিয়ম খান তাহলে আপনার ওজন অতি সহজে কমতে
থাকবে। একসময় আপনি নিজে বুঝতে পারবেন আপনার শরীরে ওজন কত ছিল এখন বর্তমানে
কত আছে যার ফলে নিমের পাতা প্রতিনিয়ত সেবন করার কারণে আপনার শরীরের মেদ এবং
শরীরকে সুস্থ রাখছে। শরীরের মেদ এবং শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য তাই আমাদের
প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস খাওয়া উচিত।
এলার্জির সমস্যার সমাধান নিমপাতা
এলার্জির সমস্যার সমাধানের জন্য নিম পাতা অনেকটা বড় অবদান রেখেছে। এলার্জি
সমস্যা সমাধানে নিম পাতা একটি মহা ঔষধ নামে সুবাদি পেয়েছেন। যাদের সাধারণত
এলার্জি সমস্যা রয়েছে তারা যদি নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানিতে গোসল করতে
পারেন তাহলে আপনার এলার্জির যত সমস্যা গুলো আছে তা দূর হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনি
যদি প্রতিনিয়ত ভাবে নিম পাতার রস খান তাহলে আপনার সকল এলার্জির সমস্যা শেষ হয়ে
যাবে। তাই প্রতিনিয়ত আমাদের নিয়ম ভাবে নিম পাতার রস খাওয়া প্রয়োজন।
বর্তমান সময়ে প্রায় বেশিরভাগ লোকের এলার্জির সমস্যা রয়েছে। অনেক ওষুধ খেয়েও
তাদের কোন উপকার হয় না যার কারণে তাদের সমস্যা থেকেই যায়। আমার মতে একবার হলেও
এই নিম পাতার রস বা নিম পাতা সেদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করলে বুঝতে পারবেন যে আপনার
অ্যালার্জি সমস্যা সমাধান হচ্ছে কিনা। আমার মতে এলার্জির সমস্যা সমাধানের প্রধানত
ঔষধ হল নিম পাতার রস অথবা নিম পাতা সেদ্ধ করা পানি।
উপরোক্ত বিষয়গুলো আপনি যদি নিয়মমাফিক ভাবে মেনে চলতে পারেন অন্তত 7 থেকে 10 দিন
একইভাবে নিয়ম গুলো মেনে চললে দশ দিন পর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনি এলার্জির
সমস্যা থেকে চিরতরে মুক্তি পেয়েছেন। আশা করি আপনি এতে অনেক উপকার পাবেন।
পেটের সমস্যা দূর করতে নিম পাতার ব্যবহার
সাধারণত মানুষের পেটের সমস্যা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই আপনি যদি পেটের
সমস্যা দূর করতে চান তাহলে নিম পাতা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি
প্রতিনিয়ত ভাবে খালি পেটে নিম পাতার রস খান তাহলে আপনার পেটের যত সমস্যা আছে তা
দূর হয়ে যাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই।
মানুষের পেটের সমস্যা হল বড় সমস্যা পেট শান্তি তো দুনিয়া শান্তি। নিম পাতার রসে
রয়েছে এক ধরনের উপকারী উপাদান যা আপনি শরীরের পাকস্থলীকে অবস্থিত খারাপ
ব্যাকটেরিয়া গুলো মেরে ফেলতে সাহায্য করে। প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস খেলে অতি
সহজে পেটের ব্যাকটেরিয়া সাথে সাথে অন্য যত রোগ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করতে
না পারে সেদিকেও সতর্ক হয়ে থাকেন।
এর ফলে পেট খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে অর্থাৎ পেট খারাপের কথা না বললেই
চলে। সেই সাথে আপনার যদি গ্যাস্ট্রিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাও কমে যায়। তাই
আপনি যদি পেটের সমস্যা দূর করতে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস খেতে
হবে। নিম পাতার উপকারেরকথা বলে শেষ করা যাবে না এটা নিয়মিত খেলে আপনি বুঝতে
পারবেন আপনার শরীরের জন্য কতটুকু উপকার হয়েছে।
চুলের জন্য নিম পাতার উপকারিতা
নিম পাতা সাধারণত আপনার শরীর বা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য না এটা আরো বিভিন্ন রকম
রোগের ক্ষেত্রেও ঔষধ হিসেবে কাজ করে। রূপচর্চা, শরীর কমানো, গ্যাস্ট্রিকের
প্রবলেম, অর্থাৎ আরও রোগের থেকেও মুক্তি দেয়।
সাধারণত চুলের জন্য নিম পাতার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে যেমন.......
- আপনি যদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে নিম পাতার রস মাথায় লাগান এর ফলে আপনার মাথার চুলকানি। ভালো হয়ে যাবে এবং কি নিম পাতার রস নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে থাকে।
- আপনার মাথার খুশকি দূর করতে নিম পাতার রস বিশেষভাবে কাজ করে থাকে। আপনি যদি নিম পাতার সিদ্ধ করা পানিটি গোসলে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মাথার খুশকি থেকে মুক্তি পাবেন।
- বাজারে নিমের তেল পাওয়া যায় সেই তেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে এবং ভ্যাট এসিড থাকে যা চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। নিয়মিতভাবে ব্যবহারে করলে চুল ঘন এবং কালো হয় এবং চুলকেও মজবুত করতে সাহায্য করে।
- আপনার মাথায় যদি উকুনের সমস্যা থাকে তাহলে উকুনের সমস্যা সমাধানে নিম পাতার রস বিশেষভাবে কাজ করে। টক দই ও নিম পাতার গুঁড়া আপনি যদি মাথায় ব্যবহার করে থাকেন তাহলে মাথার উকুন সাথে সাথে দূর হয়ে যায় এবং আপনার মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
- আপনি যদি নিম পাতার রস এবং নারকেল তেল মাথায় ব্যবহার করে থাকেন তাহলে মাথার চুল বৃদ্ধি পায় এবং চুলের গোড়া শক্ত এবং মজবুত হয়।
বর্তমান সময়ে অনেকেরই চুলের সমস্যা রয়েছে। আমার মতে আপনি যদি নিম পাতার
ব্যবহার করতে থাকেন তাহলে আপনি সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন। তাই চেষ্টা
করবেন প্রতিনিয়ত নিম পাতার ব্যবহার করতে যাতে আপনার শরীর এবং সকল সমস্যা
থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।
নিম পাতার অপকারিতা
উপরের দিকে আপনারা নিম পাতার ২০টি উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। নিমপাতা
কতটুকু আপনাদের উপকারে আসতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এখন আমরা কিছু
অপকারিতা সম্পর্কে জানব। আমরা নিম পাতার নানান উপকারিতা দিকগুলো সম্পর্কে উপরে
জেনেছি তবে নিম পাতার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে।
নিচে নিম পাতার কিছু অপকারিতা গুলো তুলে ধরা হলো........
- কোন কিছু যদি আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত হয়ে যায় তাহলে সে জিনিসটা মোটেও ভালো হয় না। নিম পাতার রস আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে সেদিকে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে।
- প্রয়োজনের তুলনায় আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ নিম পাতা খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা অনেকটা কমে যাবে। সম্ভাবনা থাকে তবে আগের তুলনায় অনেকটা কমে যায় এজন্য প্রয়োজনের তুলনায় নিম পাতা বেসি খাওয়া যাবে না। খাওয়ার আগে গর্ভবতীদের জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- আপনারা হয়তোবা জানেন নিম পাতা সাধারণত তিতা ধরনের হয়ে থাকে আর এ কারণে নিম পাতা খেলে আপনার অনেক সময় বমি হতে পারে।
- আপনি যদি অতিরিক্ত নিম পাতার রস খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। নিম পাতার রস অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া, মাথাব্যথাসহ আরো অন্য সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। নিম পাতা বা রস খাওয়ার পরে যাদের এই সমস্যাগুলো হয় তারা আর নিম পাতার রস খাবেন না খাওয়া বন্ধ করে দিবেন।
-
যে কোন ধরনের অপারেশনের আগে আপনাকে নিম পাতা খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
কারণ অপারেশনের সময় আপনাকে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে এর জন্য
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
-
আপনাদের যাদের সাধারণত নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা নিম পাতা খাওয়া থেকে
বিরত থাকবেন। এর কারণ হলো নিম পাতা খাওয়ার ফলে তাদের রক্তচাপ আরো কমে যেতে
পারে এমনকি আপনাকে মৃত্যুর দিকেও নিয়ে যেতে পারে।
-
এছাড়াও কারো কারো ক্ষেত্রে নিম পাতা খাওয়ার ফলে অনেক ধরনের সমস্যাগুলো
দেখা দিতে পারে তাই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো।
নিম পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম
উপরে আমরা নিম পাতা খাওয়ার সম্পর্কে 20 টি উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তার
ব্যবহারই বিধি সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা নিম পাতা খাওয়ার কিছু নিয়ম
সম্পর্কে জানব। নিম গাছের পাতা শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের নিম পাতার রস খাওয়া উচিত।
নিম গাছ হলে একটি গুণসম্পন্ন ঔষধি গাছ আমাদের প্রতিটি মানুষের দেহের রোগ
প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ঘরোয়া উপায় হলো নিম গাছের পাতা। আর এই
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিম গাছের পাতা খুবই ভূমিকা পালন করে থাকে। নিম
পাতা সাধারণত বিভিন্ন নিয়মে খাওয়া যায়।
তবে আয়ুর্বেদ চিকিৎসকদের মতে নিম পাতা মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে আমরা অনেক বেশি
উপকার পাব। এর ফলে মানুষের খুশখুসে কাশি যদি থাকে তাহলে তা দূর হয়ে যায়
এছাড়াও আপনি চাইলে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি পাতা সকালে খালি পেটে চিবিয়ে খেলে
অনেক উপকার পাবেন। সাধারণত নিমপাতা তিতা ধরনের হয়ে থাকে যার কারণে আপনি এর
সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
এর ফলে নিমপাতা তিতা স্বাদটা চলে যাবে। আপনার যদি প্রতিদিন নিম পাতা
পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায় তবে আপনি এটা সংরক্ষণ করে প্রতিদিন খেতে পারেন। এজন্য
আপনাকে যে কাজটি করতে হবে সেটা হলো নিম পাতার ডাল থেকে সারিয়ে ভালো করে বেটে
নিতে হবে এরপর ছোট ছোট বড়ির মতো আকারে সেগুলো রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। তারপর
সেই বড়িগুলো কাছের বোতলে সংরক্ষণ করলে অনেক দিন পর্যন্ত থাকবে এবং নিম পাতার
গুণগুলো নষ্ট হবে না। তাহলে আপনি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে নিজেই অনেক ধারনা পেয়ে যাবেন।
আপনি ইচ্ছা করলে প্রতিনিয়ত এই নিম পাতার বড়িগুলো খেতে পারেন। এরপরে যদি আপনি
নিম পাতা বেটে রস খেতে পারেন প্রতিদিন খালি পেটে তাহলে আপনার পেটের সমস্ত
সমস্যা গুলো দূর হয়ে যাবে। আপনি নিমপাতা যেভাবে খান না কেন আপনি এই নিম
পাতার উপকারিতা পেয়ে যাবেন। তবে সবচেয়ে ভালো হলো খালি পেটে নিম পাতা
খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও আপনি যদি চান তাহলে গোলমরিচের সাথে
নিম পাতা খেতে পারেন।
এলার্জি / চুলকানি / রূপচর্চা / ত্বকের যত্ন / ইত্যাদিতে নিম পাতা ব্যবহার
প্রিয় বন্ধুরা আমরা এতক্ষণ নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
সম্পর্কে জানলাম। আমরা আরো জেনেছি নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। এখন এই পর্বে আমরা জানব নিম পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন,
রূপচর্চা, চুলকানি, নিমপাতার ব্যবহার এলার্জিতে কিভাবে কাজ করে সেই
সম্পর্কে জানব। আপনি যদি পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই
বুঝতে পারবেন নিম পাতার গুনাগুন সম্পর্কে।
তাহলে চলুন নিচে আমরা জানি এলার্জি, চুলকানি, রূপচর্চা, ত্বকের যত্ন ইত্যাদিতে
নিম পাতা কিভাবে ব্যবহার করা উচিত....
- নিম পাতা ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আর এই নিম পাতা আপনার ত্বকের সুরক্ষায় কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ করতে নিম পাতা ব্যবহার করা হয় আর এজন্য কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা ভালোভাবে বেটে যদি ত্বকে লাগানো যায় তাহলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত লাগানোর ফলে ত্বক অনেকটা সুন্দর হয়।
- নিম পাতার সেদ্ধ করা পানি দিয়ে যদি আপনি গোসল করতে পারেন তাহলে আপনি এলার্জি সমস্যা চুলকানি সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। এছাড়াও আরো অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
- আপনি যদি নিম পাতা রোদে শুকিয়ে গুড়া করে রাখতে পারেন তাহলে সেটা আপনার ফেস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করাও যেতে পারেন এতে ত্বক আরো ভালো থাকে।
- নিম পাতা দিয়ে আপনি যদি ক্লিনজার তৈরি করেন এতে করে অনেক উপকার পাবেন নিম পাতা আপনার রুক্ষ ত্বকে দ্বিগুণ উজ্জ্বলতায় গড়ে আনতে সাহায্য করে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা যদি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে নিমপাতা ফেসপ্যাক তৈরি করা যায় এজন্য আপনাকে যা করতে হবে সেটা হলো নিম পাতার গুড়োর সাথে চন্দন কাঠের গুঁড়ো এবং কিছু পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এরপর আপনি ব্যবহার করতে পারবেন তবে এটা আপনার মুখে লাগানোর পরে যখন শুকিয়ে যাবে তখন পরিষ্কার পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে আগের তুলনায়।
- আপনি যদি একমুঠো নিমপাতা বেটে এর সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান তাহলে আগের তুলনায় আপনি আপনার ত্বক কে খুবই মসৃণ এবং সুন্দর দেখতে পাবেন। তবে লাগানোর কিছুক্ষণ পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে এভাবে যদি আপনি নিয়মিত লাগান তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন আপনার ত্বক কতটা সুন্দর হয়েছে।
- আপনার যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে ব্রণের সমস্যা দূর করতে চাইলে নিম পাতা ভালোভাবে বেটে আপনার ত্বকে লাগাতে হবে তাহলে আর আপনার ত্বকে ব্রণ উঠবে না।
- নিম পাতা যেহেতু ত্বকের জন্য অনেক উপকারী এজন্য আপনারা যদি চান তাহলে নিমপাতা দিয়ে সাবান বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিদিন গোসলের সময় এই সাবানটি ব্যবহার করতে পারবেন এতে করে আপনাদের ত্বক এবং শরীর বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা পাবে।
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখক এর শেষ মন্তব্য
এতক্ষণ আমরা উপরে আলোচনার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করেছি যে নিম
পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং তার ব্যবহারবিধি সম্পর্কে ভালোভাবে জানানোর
চেষ্টা করেছি। তবে নিম পাতার রস খাওয়ার নিয়ম এবং নিম পাতা ব্যবহার সম্পর্কে
আশা করি আপনারা সকলেই বুঝতে পেরেছেন। তবে এতোটুকু জেনে নিম পাতার উপকারিতা বলে
শেষ করা যাবে না তবে নিম পাতার কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। অর্থাৎ ক্ষতিকর দিকের
থেকেও বেশি উপকারের দিকে রয়েছে। এথেকে আপনি বুঝতে পেরেছেন নিম গাছের গাছ থেকে
শুরু করে ফুল ফল পাতা তেও অনেক উপকার রয়েছে।
তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন কম পরিমাণ হলেও নিয়মিত নিম পাতার রস খাওয়া। এতে
শরীরে বিভিন্ন রোগের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। নিম গাছ
পরিবেশের ব্যাপক উপকার করে থাকে। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি বাড়িতে অন্তত একটি
করে নিম গাছ লাগানো।
আশা করি আপনারা সকলে মনোযোগ সহকারে পুরো আর্টিকেলটি পড়েছেন। নিশ্চয়ই
আপনি বুঝতে পেরেছেন নিম পাতার অর্থাৎ নিম গাছের কতটুকু গুণ রয়েছে। নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ভালোভাবে বুজতে পেরেছেন।
এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের পছন্দ হয়ে থাকে বা যদি কোন উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই
ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, ইত্যাদিতে বন্ধুদের কাছে শেয়ার করবেন।
ধন্যবাদ
এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url