ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম - উপকারিতা এবং সতর্কতা

ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার সঠিক নিয়ম ও উপকারিতা জানুন বিস্তারিতভাবে। এটি হজম  বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর ও গ্যাস কমাতেও সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণ ও দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে যা ডায়েট প্ল্যানে আমাদের জন্য একদম উপকারী। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ ও কোলেস্টেরল কমাতে অনেক উপকারে আসে। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা ইসবগুল ও তোকমাখা নিয়ম সম্পর্কে আরো ভালোভাবে বিস্তারিত জানবো।
ইসবগুলের-ভুসি-ও-তোকমা-খাওয়ার-নিয়ম
গরমের দিনে আমাদের শরীর ঠান্ডা রাখা ও ডিহাইড্রেশনের হাত থেকে রক্ষা করা এটি হলো একটি প্রাকৃতিক সমাধান। এসিডিটি  ও পেটের অস্বস্তি দূর করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমাদের যুক্ত করা যায় এই তোকমা ও ইসুবগুলের ভুষি। সঠিক পরিমাণ এবং নিয়ম মেনে কতটুকু দিনে খাওয়া উচিত চলুন তবে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম

ইসবগুলের ভুষি ও তোকমার দানার পুষ্টিগুণ

ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা হল প্রাকৃতিক খাদ্য, যেগুলা অনেক বছর ধরে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য রক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়। ইসবগুলের ভুষি মূলত ওভাটা উদ্ভিদের বীজের খোসা, যা অন্তত শরীরের জন্য পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর উপাদান। ইসবগুলের ভুষিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার জা পানির সাথে মিশিয়ে পেটের মধ্যে নরম জেলির মত একটি আবরণ তৈরি করে। এই আবরণ গুলো শরীরের মলকে নরম করে বের করে দেয় ফলে আমাদের শরীরে থাকা কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ সমস্যায় বিশেষ উপকার হয়। তাছাড়া ইসবগুলের ভুষি আমাদের শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে যা বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।

অন্যদিকে তোকমার বিজ তুলসীর গাছ থেকে পাওয়া যায় এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ক্যালসিয়াম আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো পানিতে ভিজিয়ে খেলে এই বীজগুলো ফুলে ওঠে এবং শস্য জেলির মত দেখা যায়। এটি খেলে শরীরকে শীতল রাখতে সাহায্য করে এবং হজমের ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। এতে থাকা ও মেগা-৩ ফ্যাটি এসিড মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম হয়। তবে এসব উপকার পেতে হলে অবশ্যই সঠিক নিয়মে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চলা উচিত। অতিরিক্ত বা ভুল পদ্ধতিতে খেলে পেট ফাঁপা গ্যাস বা শরীর অস্বস্তি বোধ হতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি খেলে রক্তে কোলেস্টেরল কমে যায় এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। সুতরাং প্রতিদিন উপযুক্ত পরিমাণে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা সঠিক সময়ে খাওয়া শরীরের জন্য একটি বিরাট উপকার। এতে পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। রক্তচাপ থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে শরীরের ওজন এবং দীর্ঘমেয়াদে বিভিন্ন জটিলতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে। তাই আপনার খাদ্য তালিকায় ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা যুক্ত করা আজকের দিনে অত্যন্ত প্রয়োজন।

কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের জন্য ইসুবগুলের ভুসি ও তোকমার ব্যবহার 

কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগটি হলো এমন একটি সমস্যা যা প্রায় সবার জীবনে একবার হলেও অনুভব করেন। এটি একটি অস্বস্তিকর অবস্থা যা দৈনন্দিন জীবনে একটি বড় ধরনের বিরক্তি সৃষ্টি করতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে পেট ভারী লাগে  এবং গ্যাসের কারণে পেট ফাঁপা হয়ে যায়। যা আমাদের শরীরকে অস্বস্তিকর ও অস্বাভাবিক করে তোলে। এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা   অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। আমাদের পাচনতন্ত্রকে সচল করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

ইসবগুলের ভুষি খাওয়ার অন্যতম প্রধান গুণ হলো এতে থাকা দ্রবণীয় আঁশ জা পানি শোষণ করে জেলের মতো আকার ধারণ করে। যখন এটি পেটে পৌঁছে তখন এটি তন্ত্রের দেয়ালে নরম আবরণ তৈরি করে এবং মলকে সঠিকভাবে নরম করে এবং সহজে বের করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে কাজ করবে। ইসবগুলের ভুষি নিয়মিত গ্রহণ করলে আমাদের মলের গঠন ঠিক থাকে এবং পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য-গ্যাসের-জন্য-ইসুবগুল-ও-তোকমার-ব্যবহার
তোকমার বীজ আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি হজমশক্তি কেউ সাহায্য করে। বিশেষ করে যারা গরম এবং মসলাযুক্ত খাবার খান তাদের জন্য তোকমা অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। এটি গ্যাস কমাতে সাহায্য করে এবং পেটের অস্বস্তি দূর করতেও সাহায্য করে। ভিজিয়ে খেলে এর গুনাগুন আরো বৃদ্ধি পায়। কোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাসের জন্য ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম জানা অত্যন্ত জরুরি। সাধারণত 1 থেকে 2 চামচ ইসবগুলের ভুষি এবং এক চামচ তোকমা বীজ নিয়ে ঠান্ডা পানির ভেতরে বা দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। খাওয়ার পরে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ।

প্রতিদিন সকালে খাবারের আগে অথবা রাত্রে ঘুমানোর আগে ইসবগুলের ভুষি এবং তোকমা ব্রিজ ভিজিয়ে খেলে পাচনতন্ত্রে ভালো প্রভাব ফেলে। তবে বেশি মাত্রায় খাওয়ার চেষ্টা করবেন না কারণ অতিরিক্ত ফাইবার পেটের গ্যাস বা পেট ফাঁপা বাড়াতে পারে। অতএব সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করায় উচিত।

ওজন নিয়ন্ত্রণে তোকমা ও ইসবগুলের ভুষির ব্যবহার

বর্তমান সময়ে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। অতিরিক্ত ওজন নানা জটিল রোগের কারণ হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন ইসবগুলের ভুষি ও তোকমার ব্যবহারও আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। এই দুটি উপাদান হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে খুদা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। ইসবগুলের ভুষি পানির সাথে মেশানো হলে পাকস্থলীতে হয়ে ওঠে যা পেট ভর্তি থাকার অনুভূতি দেয় ফলে ক্ষুধা কমে যায় এবং বেশি খাওয়ার চেষ্টাও নিয়ন্ত্রণে আসে।
ওজন-নিয়ন্ত্রণে-তোকমা-ও-ইসবগুল-ব্যবহার
অন্যদিকে তোকমা বীজ শরীরে পুষ্টি প্রদান করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফেটি অ্যাসিড শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তোকমা বীজ পানিতে ভিজিয়ে খেলে তা জেলের মত হয় এবং দীর্ঘ সময় খোদা কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের জলীয় বা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সকালে বা বিকেলে পানি কিংবা লেবুর সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে খেলে বিশেষ করে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যদি কারো স্বাস্থ্যের সমস্যা থাকে তবে খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেছেন শুধু ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার উপর নির্ভর না করে সঠিক ডায়েট ও নিয়মিত ব্যায়ামের সঙ্গে এগুলো খেলে বেশি উপকারী পাওয়া যায়। যাদের ওজনে একেবারে বেশি তারা অল্প অল্প করে শুরু করতে পারেন তাহলে ভালো ফল পেতে পারবেন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা একটি প্রাকৃতিক নিরাপদ পদ্ধতি। যারা অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাদের জন্য এটি খুবই কার্যকরী এবং সহজ একটি উপায়। তবে সঠিক নিয়ম এবং সঠিক পদ্ধতিতে এই উপাদান দুটো গ্রহণ করলে শরীরের সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় চর্বি কমে পেটের মেদ কমতে সাহায্য করবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমার কার্যকারী পদ্ধতি

ডায়াবেটিস রোগটি হলো একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেখানে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এই রোগের জন্য জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও পছন্দের খাদ্য পরিবর্তন করতে হয়। ইসবগুলের ভুষি হল একটি প্রাকৃতিক দ্রবণীয় ফাইবার যা আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি খাবারের পর গ্লুকোজ শোষণ ভিড় করে রক্তের শর্করা দ্রুত বৃদ্ধির প্রতিরোধ করতে থাকে। তখন ২০ থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত এবং সঠিক মত ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে রক্তের গ্লুকোজ মাত্র স্থিতিশীল এবং রোগীর জীবনমান উন্নত করতে থাকে।

তবে ডাইবেটিস রোগীদের ইসবগুলের ভুষি ও তকমা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। কারণ ওষুধের সঙ্গে মিশিয়ে কখনো কখনো রক্তের শর্করা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে। যা ডাইবেটিস  রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে। ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা ভেজানো পানি খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করাও জরুরী। কারণ কম হলে ভুসি পেটে জমে গ্যাস বা অন্য ধরনের সমস্যা করতে পারে। সঠিক নিয়মে খেলে এই প্রাকৃতিক উপাদান গুলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে তবে এর সাথে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং ব্যায়াম বজায় রাখতে হবে।

কোলেস্টেরল কমাতে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা

আজকের এই আমাদের ব্যস্ত জীবনে উচ্চ কলেস্টেরল একটি বড় স্বাস্থ্যের ঝুঁকি হয়ে উঠেছে। কোলেস্টেরল যখন বেশি হয় তখন হার্টের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইসবগুলের ভুষি এই ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর কারণ এতে থাকা দ্রবণীয় আর রক্তে থেকে খারাপ কোলেস্টেরল শোষণ করে এবং মলের সাথে বের করে দেয় যা রক্তনালীর প্রদাহ ও ব্লকেজ কমাতে সাহায্য করে। তোকমা বিযে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হার্টের স্বাস্থ্যের রক্ষা করে থাকে এবং শরীরের রক্ত প্রবাহকে ভালো রাখে। নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে হৃদরোগ ও উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।

এই দুটি উপাদান খাদ্যের সঙ্গে বা পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি অবশ্যই পান করতে হবে। কোলেস্টেরল কমানোর জন্য ভুসি ও তোকমার সাথে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সাথে সাথে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য শারীরিক সক্ষমতা ব্যায়াম করতে হবে। শরীর এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তোকমা এবং ইসবগুলের ভুষি একটি কার্যকারী উপাদান যা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষভাবে কার্যকারী একটি ভূমিকা পালন করে। সুতরাং যারা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য ইসুবগুলের ভুষি এবং তকমা একটি কার্যকারী উপাদান.

ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধে ইসবগুলের ভুষি এবং তোকমার ভূমিকা

অনেক সময় আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় ঘামের মাধ্যমে যার ফলে আমরা ডিহাইড্রেশন বা পানিসূন্যতার সমস্যায় পড়তে পারি। ডিহাইড্রেশন শরীরকে দুর্বল করে দেয় যা থেকে মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব সহ নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থায় ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে। ইসবগুলের ভুষি পানিতে মিশিয়ে খেলে তা পাকস্থলীতে ফুলে ওঠে এবং শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণ জল ধরে রাখার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে শরীরের জলীয় ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ডিহাইড্রেশন থেকে শরীরকে রক্ষা করে। তোকমার বিজ শরীর ঠান্ডা রাখে এবং গরমের কারণে বিভিন্ন সমস্যাকে কমাতে সাহায্য করে।

গরমের সময় অনেক মানুষের খিদে কমে যায় তবে পানি মিশ্রিত পানিও খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় জলের সরবরাহ ঘটে এবং শরীর ঠান্ডা থাকে ও এবং দেহকে শক্তি দেয় এবং গরমের থেকে অস্বস্তি কমায়। গরমে নিয়মিত এই পানীয় গ্রহণ করলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে ডিহাইড্রেশন জনিত অসুস্থ থেকে মুক্তি দেয়। তবে অবশ্যই খাওয়ার আর সাথে সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে কারণ ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা পানিতে ফুলে ওঠে এবং পানি ছাড়া এগুলো বলতে পারে না। যার ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।

সুতরাং গরমের মৌসুমে ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করতে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করলে শরীরকে সুস্থ ও সঠিক রাখতে সম্ভব হয়।

শরীরের অস্বস্তি ও এসিডিটি কমাতে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমার ব্যবহার

এসিডিটি পেটের একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেকের জীবনযাত্রাকে বিঘ্নিত করে। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার খেলে ও মসলাযুক্ত খাবার এবং মানসিক চাপের কারণে এই সমস্যা বেড়ে যায়। ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা পেটের এসিডিটি কমাতে প্রাকৃতিক ও কার্যকারী উপায়। অনেক সময় বিভিন্ন চিকিৎসকদের মধ্যে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার জন্য সাজেস্ট করেন। কারণ ইসবগুলের ভুষির মধ্যে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার পেটের নরম আবরণ তৈরি করে যা অতিরিক্ত এসিড থেকে পেটকে সুরক্ষা দেয় এবং পেটের জ্বালা যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
অস্বস্তি-ও-এসিডিটি-কমাতে-ইসবগুল-ও-তোকমার-ব্যবহার
একই সঙ্গে এটি হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ থেকে বের করতে সাহায্য করে। তোকমা বীজ গ্যাস কমাতে সহায়ক এবং পেটের অস্বস্তি দূর করতে অনেক সময় চিকিৎসকরা মতামত দিয়ে থাকেন। এতে থাকা প্রাকৃতিক  অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেটের জ্বালাপোড়া কমাতে সহায়তা করে। এসিডিটির সমস্যা হলে নিয়মিত এবং সঠিক মাত্রায় ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম অনুসরণ করলে স্বাভাবিকভাবে পেটের অস্বস্তি কমে যায়। খাবারের পরে বা দিনে একবার পানিতে ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে তবে খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। কারণ পানি ছাড়া ভুষি জমে গ্যাস বা অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

সতর্কতা হিসেবে যাদের পেটের আলসার বা অন্যান্য গুরুতর সমস্যা আছে তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই উপাদান গুলো ব্যবহার করে খেতে পারবেন। সাধারণত এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি নিরাপদ ও কার্যকর এবং নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে এসিডিটি ও গ্যাস জনিত অস্বস্তি অনেকটাই কমে যায়। সুতরাং যারা পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাদের জন্য ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চলা একটি উত্তম উপায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমার কার্যকারিতা

বর্তমান সময়ে ওজন বৃদ্ধি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে ফাস্টফুড অনিয়মিত খাবারের সময়সূচী এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে । অতিরিক্ত ওজন শুধু সৌন্দর্যের প্রভাব ফেলে না বরঞ্চ ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ সহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে থাকে। এই সমস্যার সমাধানে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা ব্যবহার করা খুবই কার্যকর। ইসুবগুলের ভুষি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে দেখা যাবে কিছুক্ষণ পরে ফুলে এক ধরনের জেল তৈরি করে যা পাকস্থলীতে গিয়ে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পেট ভরা অনুভূতি করতে সাহায্য করে। এতে অপ্রয়োজনে খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ রাখতে থাকে ।

একইভাবে তোকমা পানিতে ফুলে হজম প্রক্রিয়া ধীরে ধীরে কমে দেয় ফলে খুদা কম লাগে এবং ওজন কমানোর জন্য সহায়তা করতে থাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য সকালে নাস্তার আগে অথবা রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানি বা দুধের সাথে মিশিয়ে  ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তবে খাওয়ার আগে অত্যন্ত ৫ থেকে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখা জরুরী যাতে বীজগুলো ভালোভাবে ফুলে। এইভাবে নিয়ম মেনে নিয়মিতভাবে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে শুধু ওজন কমানো নয় শরীরের প্রয়োজনে ফাইবারের ঘাটতিও পূরণ করতে থাকবে।

তবে মনে রাখতে হবে ইসবগুলের ভুষি ওতকমা কোন জাদুকারই সমাধান নয়। এগুলোর পাশাপাশি সুষম খাদ্যভাস ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে যাতে করে শরীরের সমস্ত সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন। এগুলোর পাশাপাশি যাদের শাশ কষ্ট ও নানারকম সমস্যার মধ্যে আছেন অর্থাৎ শারীরিক কোন জটিলতা আছে কিনা দেখে নিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। যারা স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান তাদের জন্য ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। নিয়ম মেনে খেলে নিরাপদ সমাধান পেতে পারেন আশা করি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।

রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইসবগুলের ভুষি ও তোকমার ভূমিকা

ডায়াবেটিস বা রক্তের শর্করার  অসমঞ্জস্য  বর্তমান সময়ে একটি বড় স্বাস্থ সমস্যা । অনেকেই  ওষুধের পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপায়ে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা বীজ এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারি। ইসবগুলের ভুসিতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার খাবারের কার্বোহাইড্রেট ধীর ভাঙতে সাহায্য করে, ফলে খাবারের পরো রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি কমে যায়। একইভাবে , তোকমা বীজে উপস্থিত জেল জাতীয় পদার্থ হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে, যা ইনসুলিনের পাদার্থ হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে, যা ইনসুলিনের চাহিদা কমায় এবং রক্তের মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক  ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম হলো- প্রতিদিন সকালে বা রাতে খাবারের আগে এক গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি বা তোকমা ভিজিয়ে খাওয়া।
রক্তে-শর্করা-নিয়ন্ত্রণ-করার-জন্য-ইসবগুল-ও-তোকমার-ভূমিকা
খাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি, যাতে অন্ত্রে কোনো ধরনের শুষ্কতা বা ব্লকেজ না হয়।নিয়মিত ব্যবহারে এই দুই প্রাকৃতিক উপাদান শুধু রক্তে শর্করার মাত্রাই নিয়ন্ত্রণে রাখে না. বরং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে. কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা হ্রাস করে। তাছাড়া. এগুলোর কোনো কৃত্রিম রাসায়নিক উপাদান না থাকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে কম। তবে যারা ইনসুলিন বা ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহন করছেন , তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পারামর্শ নিয়ে এই উপাদানগুলো ব্যবহার করবেন, কারণ এটি ওষুধের কার্যকারিতা  বাড়িয়ে ‍ দিতে পারে, ফলে শর্করার মাত্রা খুব বেশি নেমে যেতে পারে। সুতরাং. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে নিয়মিত   ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম    মেনে চলা একটি নিরাপদ, কার্যকরী এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতি হতে পারে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমার কার্যকারিতা

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ কিন্ত বিরক্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা দীর্ঘস্থায়ী হলে পাইলস , অ্যানাল ফিশার বা অন্যান অন্ত্রে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এর কারণে আমাদের অনেক ধরনের সমস্যা হবে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো পর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পানি পান করা । ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা এই ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক ও কার্যকর সমধান হিসাবে কাজ করে।  ইসবগুলের ভুুসি একটি উচ্চ ফাইবারযুক্ত প্রাকৃতিক উপাদান , যা অন্ত্রে  গিয়ে পানি শোষণ করে এবং নরম জেল জাতীয় আকর ধারণ করে।

এই জেল মলকে নরম করে,ফলে সহজে বের হয়ে আসে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। অন্যদিকে , তোকমা বীজও হজম  প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়ায়, যা মলত্যাগ সহজ করে।  কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম  হলো- রাতের খাবারের পরে বা সকালে নাশতার আগে ১-২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি বা তোকমা এক গ্লাস গরম বা ঠান্ডা পানিতে মিশিয়ে খাওয়া । এরপর অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, যাতে অন্ত্রে জেল গঠন হয়ে কর্যকরভাবে কাজ করতে পারে। এই উপাদানগুলো শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে না, বরং অন্ত্রের ভিতরের ক্ষতিকর পদার্থ ও টক্সিন বের করে দেয়, ফলে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে।

নিয়মিত ব্যবহারে পেটের ফাঁপা ভাব, গ্যাস ও অ্যাসিডিটিও কমে যায়। তবে মনে রাখতে হবে, যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘদিন ধরে থাকে এবং অন্য উপসর্গ যেমন রক্তপাত, পেট ব্যথা বা ওজন কমে যাওয়া দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ইসবগুল ও তোকমা প্রাকৃতিক ও নিরাপদ হলেও, অতিকিক্ত মাত্রায় খেলে পেটের অস্বস্তি বা ডায়রিয়া হতে পারে, তাই পরিমাণমতো খাওয়াই ভালো সুতরাং, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ ও দূরীকরণে নিয়মিত ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চলা েএকটি সহজ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী উপায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমার ভূমিকা

আজকাল অতিরিক্ত ওজন একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ডায়াবেটিস , উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ নানা জটিলতা ডেকে আনে । ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস , ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামের পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার অনেক সহায়ক হতে পারে। এর মধ্যে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা অন্যতম কার্যকর সমাধান। ইসবগুলের ভুসি পানির সাথে মিশে একটি জেল জাতীয় পদার্থ তৈরি করে, যা পেটে গিয়ে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত পূর্ণতার অনুভুতি দেয়। ফলে অযথা ক্ষুধা লাগা  বা বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। 

তোকমা বীজও একইভাবে পানির সাথে মিশে স্ফীত হয় এবং পাকস্থলীতে জায়গা নিয়ে রাখে, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়াতা করে। ওজন কমানোর জন্য  ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম হলো - খাবারের ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি বা ১ চা চামচ তোকমা ভিজিয়ে খাওয়া । এতে খাবারের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবে কমে যায়, তবে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।  এছাড়া , ইসবগুল ও তোকমার ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, শরীরে জেমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।

তবে মনে রাখতে হবে, ওজন কমানোর জন্য শুধুমাত্র ইসবগুল ও তোকমার উপর নির্ভর না করে, কম ক্যালোরিযুক্ত সুষদ খাবার এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে। বেশি পরিমাণে  এই উপাদান খেলে পেটের অস্বস্তি হতে পারে, তাই নির্দিষ্ট মাত্রা মেনে  চলা জরুরি।  সুতারাং , স্বাস্থ্যকর জীবনধরা ও সঠিক খাদ্যাভ্যাসের সাথে ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম  মেনে চললে ওজন নিয়ন্ত্রণ সহজ ও কার্যকর হয়। 

ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার সতর্কতা ও সঠিক পরিমাপ 


যতই উপকারী  হোক, ইসবগুলো ভুসি ও তোকমা খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা  অবলব্ধন করা জরুরি। সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ না মানলে উপকারের বদলে অস্বস্তি বা স্বাস্থা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সবচেয়ে  গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো - এই দুটি উপাদান গ্রহণের সময় অবশ্যই হলো- এই দুটি উপাদান গ্রহণের সময় অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করা  । কারণ ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা পানির সাথে মিশে ফুলে  ওঠে এবং পাকস্থলীতে স্থান দখল করে। যদি পর্যাপ্ত পানি না পান করা হয়, তবে পেটের গ্যাস , কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজম সমস্যা হতে পারে।

সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে ১-২ বার , প্রতি বারে ১-২ চা চামচ ইসবগুলের ভুসি  বা ১ চা চামচ তোকমা বীজ গ্রহণ যথেষ্ট । তবে নতুন করে শুরু করলে প্রথমে অল্প পরিমাণে খাওয়া ভালো, যাতে শরীর ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। শিশু , গর্ভবতী নারী বা যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া  এই উপাদান গ্রহণ না করাই নিরাপদ। এছাড়া, যারা নিয়মিত ওষুধ খান , বিশেষত ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ , তারা ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে আলোচনা করবেন ।
ইসবগুল-ও-তোকমা-খাওয়ার-সতর্কতা-ও-পরিমাপ
কারণ ফাইবার জাতীয় উপাদান কিছু ওষুধের শেষণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-কখনোই  শুষ্ক অবস্থায় সরাসরি মুখে ইসবগুলের ভুসি বা তোকমা খাবেন না । এতে গলায় আটকে শ্বাসকষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সবসময় েএগুলো ভালোভাবে পানিতে বা হালকা উষ্ণ পানীয়তে ভিজিয়ে নিন এবং  সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। মোট কথা, সঠিকভাবে  ইসবগুলের ভুসি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম মেনে চললে  এগুলো আপনার স্বাস্থের জন্য আশীর্বাদ হতে পারে। তবে মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া বা নিয়ম না মানলে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই সচেতনভাবে, সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিতভাবে এই প্রাকৃতিক উপদান গ্রহণ করাই স্বাস্থ্য রক্ষার মূলমন্ত্র।

ইসবগুলের ভুষি ও তোকমা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে লেখক এর শেষ কথা 

ইসুবগুলের ভুষি ও তোকমা শুধু একটি প্রাকৃতিক খাদ্য এবং উপাদানই নয় বরং এটি আমাদের শরীরের জন্য একটি উপকারী একটি ঔষধ বলা যায়। প্রাচীনকাল থেকে মানুষ এটি হজম শক্তি বাড়াতে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং শরীরকে হালকা রাখতে ব্যবহার করে আসছে । আধুনিক গবেষণায় এটা প্রমাণ হয়েছে যে সঠিক পরিমাণে নিয়মিত গ্রহণ করলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ রক্তের শর্করা ও কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে। গরমের সময় এটি আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।  আবার শীতকালেও হজম ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের শরীরকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

তবে মনে রাখতে হবে যেকোন প্রাকৃতিক খাদ্যের মতো এটি সঠিক পরিমাণ ও নিয়ম মেনে খাওয়াও জরুরী। অতিরিক্ত গ্রহণ করলে পেটে খারাপ ডায়রিয়া বা অন্যান্য অস্বস্তি ভাব হতে পারে বিশেষ করে শিশু ও গর্ভবতী নারী এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url