জবা ফুলের তেল বানানোর উপায়
জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিস্তারিত
জানানোর চেষ্টা করব। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন জবা ফুল শুধু
দেখতে সুন্দর নয় বরং চুল ও ত্বকের জন্য একটি প্রাকৃতিক দ্ধমে।
ঘরে বসেই জবা ফুলে তেল চুলকে ঘন নরম ও চকচকে করে আর চুলকে রাখে কমল উজ্জ্বল। জবা
ফুলের তেল মাথায় ব্যবহার করার নিয়ম এবং অন্যান্য উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। আরো
থাকছে কিভাবে ব্যবহার করলে চুল ও ত্বক থাকবে সুস্থ ও সুন্দর। চলুন তাহলে জানা
যাক।
পেজ সুচিপাত্রঃ জবা ফুলের তেল বানানোর উপায়
- জবা ফুলের তেল বানানোর উপায়
- জবা ফুল মাথায় দেয়ার নিয়ম
- জবা ফুলের তেলের উপকারিতা
- চুলের যত্নে জবা ফুলের উপকারিতা
- নতুন চুল গজাতে জবা ফুলের ব্যবহার
- জবা ফুলের হেয়ার প্যাক
- জবা পাতার ব্যবহার
- লাল জবা ফুলের উপকারিতা
- জবা ফুলের তেলের অপকারিতা
- জবা ফুল নিয়ে লেখক এর শেষ কথা
জবা ফুলের তেল বানানোর উপায়
চুলের যত্নে জবা ফুলের নাম আমরা সকলেই শুনেছি। আমাদের মধ্যে এমন আছেন অনেকে বাজার
থেকে নানা রকম তেল কিনে ব্যবহার করেন। কিন্তু ঘরেই যদি নিজের হাতে তেল বানিয়ে
নেওয়া যায় তাহলে সেটা আরো ভালো কাজ করে। আসল কথা হল জবা ফুলের তেল বানানোর
উপায় খুবই সহজ এবং ঘরে বসেই বানানো যায়। এর জন্য খুব বেশি খরচ লাগে না শুধু
কিছুটা সময় আর যত্ন নিলেই তৈরি করা যাই জবা ফুলের তেল। চলুন তাহলে জেনে নেই
বাড়িতে বসে কিভাবে জবা ফুলের তেল তৈরি করবেন।
প্রথমে আপনাকে কিছু তাজা জবা ফুল আর কয়েকটা জবা পাতা সংগ্রহ করতে হবে। তারপর
এগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে যাতে কোন ময়লা বা ধুলো না থাকে। তারপর নারকেল তেল
বা সরিষার তেল যেটা আপনি পছন্দ করেন সেটা নিয়ে নিন। অনেক আবার নারকেল তেলের সাথে
সামান্য তিলের তেল মিশিয়েও ব্যবহার করেন।জেটা ভালো লাগে আপনার সেটাই নিবেন। এবার
জবা ফুল ও পাতাগুলো ছোট ছোট করে কেটে ওই তেলের মধ্যে দিয়ে দিন। এরপর আপনাকে
রান্না করা চুলার আচ খুব কম করে তেলটা গরম করে নিতে হবে। একদম বেশি আচে দিলে ফুল
ও পাতার ভেতরে গুনাগুন সকল কিছু নষ্ট হয়ে যাবে। তাই চুলার আচ কম করে ধীরে ধীরে
ফুটতে থাকলে তেলের ভেতর থেকে হালকা লালচে রং বের হবে আর সুন্দর একটা গন্ধ আসবে।
সাধারণত ১০ থেকে ১৫ মিনিট গরম করলেই যথেষ্ট। তারপর তেলটা নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
ঠান্ডা হয়ে যাবার পরে সেটি ভালোভাবে একটি কাঁচের বোতলে ভরে রাখুন।
এভাবেই ঘরে তৈরি হয়ে যাবে খাঁটি জবা ফুলের তেল। নিয়ম করে ব্যবহার করলে চুল পড়া
অনেকটাই কমে যাবে চুল হবে ঘন ও কালো। অনেকে বলেন যে বাজারের তেলের চেয়ে ঘরে
বানানো তেল অনেক বেশি কার্যকর। আর সবচেয়ে ভালো দিক হলো আপনি নিজের চোখে দেখতে
পাবেন তেলের মধ্যে কি কি ব্যবহার করছেন। তাই কোন ভেজাল বা ক্ষতিকারক কিছু
ঢোকার কোন সুযোগ থাকবে না। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো আপনি যদি এই তেল বানানো একবার
শিখে যান তাহলে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় মনে রাখা খুবই সহজ। এই তেলটি সপ্তাহে
একদিন বানিয়ে নিলে একমাস আরামে ব্যবহার করা যায়। যদি বেশি পরিমাণে বানাতে চান
তাহলে ফুল ও তেলের পরিমাণ একটু বাড়িয়ে নিলেই হবে। অনেকেই আবার তেলের মধ্যে
মেথির দানা বা অ্যালোভেরা জেল ও মিশিয়ে নেন এতে করে তেলের উপকারিতা আরো বেরে
যায়।
তাই আমার মতে বাজারে কেমিক্যাল মিশ্রিত তেলের পিছনে অযথা টাকা খরচ না করে ঘরে
বানানো তেল ব্যবহার করা অনেক বেশি উপকারী হবে। বিশেষ করে যাদের চুল পড়া খুশকি বা
রুক্ষ চুলের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ঘরোয়া উপায়ে বানানো তেল এক ধরনের
প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে। সংক্ষেপে বললে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় হল জবা
ফুল ও পাতা ভালো করে ধুয়ে ছোট করে কেটে নিতে হবে। এরপরে নারকেল তেল দিয়ে হালকা
আচে গরম করে ভালোভাবে সেকে বোতলে ভরে রাখতে হবে। এটুকু কাজ করলে আপনি পেয়ে যাবেন
চুলের যত্নের জন্য অসাধারণ একটি প্রাকৃতিক তেল।
জবা ফুল মাথায় দেওয়ার নিয়ম
চুলের যত্নে জবা ফুল শুধু তেলেই নয় সরাসরি মাথায় দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে
পারে। অনেকে ভাবেন ফুল মাথায় দেওয়ার নিয়ম হয়তো খুবই জটিল কিন্তু আসলে
ব্যাপারটি খুবই সহজ। ঘরে বসে কয়েক মিনিটে সময় দিলেই এটা করা যায়। চলুন তাহলে এ
বিষয়টিও জানা যাক ভালোভাবে।
প্রথমে কিছু তাজা জবা ফুল আর কয়েকটি পাতা সংগ্রহ করতে হবে। এগুলো ভালোভাবে ধুয়ে
নিতে হবে যাতে ময়লা বা ধুলা না থাকে। তারপর ফুল ও পাতাগুলো পিষে একটা পেস্ট তৈরি
করে নিতে হবে। চাইলে শীলপাটা বা ব্লেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন। যদি পেস্ট খুব ঘন
হয় তবে সামান্য পানি বা নারকেল দুধ মিশিয়ে নিতে পারেন। এবার এই পেস্টটা মাথায়
ত্বকে ভালোভাবে লাগান বিশেষ করে চুলের গোড়ায় লাগালে খুব ভালো উপকার পাওয়া যায়।
কারণ চুলের যত্ন আসলে শুরু হয় গোড়া থেকে। পেস্ট লাগানোর পর হালকা হাতে মালিশ
করতে হবে। যাতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায় এবং চুলের গোড়া শক্ত হয়।
সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট মাথায় জবা ফুলের পেস্ট রাখলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে একেবারে হালকা শ্যাম্পু
ব্যবহার করতেও পারেন তবে খুব বেশি কেমিক্যাল যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার না করাই
ভালো। নিয়মিত সপ্তাহে অন্তত একদিনে এভাবে জবা ফুল মাথায় দিলে চুল পড়া অনেকটাই
কমে যাবে। এছাড়া চুল হয় মসৃণ কালো আর উজ্জ্বল। শুধু তাই নয় জবা ফুল মাথায়
দেওয়ার ফলে খুশকি দূর হয়ে যায় আর মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আবার জবা ফুলের পেস্ট এ দই মেথি বা অ্যালোভেরা মিশিয়ে নেন।
এতে ফলাফল আরো ভালো হয়। বিশেষ করে রুক্ষ ও শুষ্ক চুলের জন্য জবা ফুলের এই
ব্যবহার সত্যি অসাধারণ কাজ করে থাকে। তাই বলা যায় বাজারে কেমিক্যাল ব্যবহার না
করেও একদম প্রাকৃতিক উপায় চুলের যত নেওয়া সম্ভব। আর সেই সহজ উপায় হলো নিয়ম
করে জবা ফুল মাথায় দেওয়া।
জবা ফুলের তেলের উপকারিতা
প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে জবা ফুলের তেল সত্যিই অসাধারণ কাজ করে চুলের যত্ন
নেওয়ার জন্য। অনেকেই বছরের পর বছর বাজারে কেমিক্যালযুক্ত তেল ব্যবহার করে ফল পান
না। কিন্তু নিয়ম করে জবা ফুলে তেল ব্যবহার করলে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন আসে।
ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় শিখে নিলে নিজের হাতে খাঁটি তেল তৈরি করা
যায়। আর সেই তেলের উপকারিতা গুনে শেষ করা যায় না। তাহলে চলুন জবা ফুলের তেলের
উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
- জবা ফুলের এই তেল চুল পড়া কমাতে দারুন কাজ করে। চুলের গোড়া শক্ত করে দেয় বলে সহজে আর চুল পড়ে না ।
-
জবা ফুলের তেল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। অনেকের মাথায় ফাঁকা জায়গা দেখা
যায় সেখানে নিয়মিত জবা ফুলে তেল মালিশ করলে আস্তে আস্তে নতুন চুল গজাতে
শুরু করবে।
-
জবা ফুলে তেল খুশকি দূর করতে সাহায্য করে খুবই। মাথার ত্বক যদি সবসময় শুষ্ক
থাকে বা চুলকানি হয় তাহলে এই তেল আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং খুশকি নিয়ন্ত্রণে
আনে। শুধু তাই নয় এই তেল চুলকে করে দেয় আরো নরম মসৃণ ও চকচকে।
অন্যদিকে জবা ফুলের তেল মাথার ত্বক রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। নিয়মিত মালিশ করলে
চুল পুষ্টি পায় এবং দ্রুত চুল লম্বা হয়ে যায়। এছাড়া গরমে এই তেল মাথায়
ঠান্ডা অনুভূতি এনে দেয় যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। সবচেয়ে বড় সুবিধা
হল জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় এত সহজ যে আপনি চাইলে ঘরে বসে বানিয়ে ব্যবহার
করতে পারবেন। এতে কোন কেমিক্যাল থাকে না তাই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোন
ভয় নেই। অনেকে আবার এই তেলের সঙ্গে মেথির দানা কারি পাতা বা অ্যালোভেরা
মিশিয়ে ব্যবহার করেন, এতে করে উপকারিতা আরো বেড়ে যায়।
আমার মতে আমি সংক্ষেপে কিছু বলতে চাইলে জবা ফুলের তেলের উপকারিতা হলেও চুল পড়া
নতুন চুল গজানো খুশকি দূর করা চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনা এবং মাথার ত্বক
ঠান্ডা রাখা। তাই নিয়মিত জবা ফুলে তেল বানানোর উপায় অনুসরণ করে ঘরে বানানো তেল
ব্যবহার করলে চুলের সব ধরনের সমস্যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায়।
চুলের যত্নে জবা ফুলের উপকারিতা
জবা ফুল শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয় বরং চুলের জন্য এক অসাধারণ প্রাকৃতিক উপাদান।
যারা চুল পড়া খুশকি বা রুক্ষ চুলের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য জবা ফুলের তেল
হতে পারে সহজ একটি সমাধান। নিচে পয়েন্ট আকারে চুলের যত্ন জবা ফুলের প্রধান
উপকারিতা গুলো দেওয়া হল।
- চুল পরা রোধ করাঃ নিয়মিত জবা ফুল বা জবা ফুলের তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া অনেকটাই কমে যাবে। ফুলে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান চুলেরগোরা শক্ত করে তুলতে সাহায্য করে। তাই বয়স যাই হোক না কেন নিয়মিত যত্ন নিলে চুল আগের মত ঘন হয়ে উঠবে। এজন্য ঘরে বসে জবা ফুলে তেল বানানোর উপায় শিখে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো।
- নতুন চুল গজাতে সাহায্য করেঃ অনেকের মাথায় দেখা যায় চুল পরে গিয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। তখন আপনি যদি সেখানে নিয়মিত জবা ফুলের তেল মালিশ করেন তাহলে ধীরে ধীরে নতুন চুল গজাতে শুরু করবে। কারণ জবা ফুল মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় যার ফলে নতুন চুল গজানোর জন্য খুবই উপকার হয়ে ওঠে।
-
খুশকি দূর করেঃ আমাদের মাথায় খুশকি অনেক সময় বড় সমস্যায় ফেলে
দেয়। মাথার ত্বক শুকনো হয়ে যায় চুলকানি হয় আরো চুল পড়তেও থাকে। জবা ফুল
দিয়ে তৈরি তেল খুশকি দূর করতে দারুন কার্যকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু
তেল নয় ফুল ও পাতা বেটে পেস্ট বানিয়ে মাথায় লাগালেও খুশকি অনেকটা কমে
যায়।
-
রুক্ষ চুল মসৃণ করেঃ যাদের চুল শুস্ক এবং রুক্ষ থাকে তাদের জন্য জবাব
ফুলের তেল প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের মত কাজ করে। আর এই জবা ফুলের তেল ব্যবহার
করলে চুল হয় নরম ও সহজে চুলগুলো আশ্রাড়ানো যায়।
-
চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনেঃ যাদের চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে গেছে
তারা প্রতিদিন জবা ফুলের তেল ব্যবহার করলে চুলের প্রাকৃতিক একটা উজ্জ্বলতা
এনে দেয়। বাজারে কেমিক্যালযুক্ত মেশানো তেল ব্যবহার করলে অথবা সিরাম দিয়ে
সাময়িক উজ্জ্বলতা পাওয়া গে্লেও দীর্ঘ মিয়াদে তার ক্ষতি অনেক হয়ে যায়।
কিন্তু ঘরে বানানো তেল একদম নিরাপদ এবং দীর্ঘস্থায়ী উজ্জ্বলতা চুলে এনে
দেয।
-
চুল লম্বা করতে সাহায্য করেঃ যারা চুল লম্বা করতে চান তাদের জন্য জবা
ফুল দারুন কার্যকর একটি ভূমিকা পালন করে থাকে। জবা ফুলের তেল চুলের গোড়া
থেকে পুষ্টি যোগায় এবং মাথায় ত্বকে্র রক্তচঞ্চল বারিয়ে চুল দ্রুত লম্বা
করতে সাহায্য করে। নিয়মিত জবা ফুলে তেল বানানোর উপায় অনুসরণ করে তেল
বানিয়ে ব্যবহার করলে কয়েক মাসের মধ্যেই পার্থক্য বোঝা যায়।
-
মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখেঃ গরমকালে অনেক সময় মাথায় গরম হয়ে যায়। ফলে
মাথা ব্যথা বা অস্বস্তি ভাব হয়। জবা ফুলের তেল মাথায় মালিশ করলে মাথা
ঠান্ডা থাকে এবং মানসিক চাপও কমে যায়।
-
কেমিক্যাল থেকে সুরক্ষা দেয়ঃ আমরা অনেক সময় হেয়ার কালার শ্যাম্পু
বা বিভিন্ন কেমিক্যাল যুক্ত পণ্য ব্যবহার করি। এতে চুলের স্বাভাবিক গঠন নষ্ট
হয়ে যায়। কিন্তু জবা ফুলের তেল চুলকে ভেতর থেকে শক্ত করে তোলে এবং
কেমিক্যাল ক্ষতি কমায়।
-
আগা ফাটা চুল কামায়ঃ, যাদের চুলের আগা ফেটে যায় তারা জবা ফুলের
পেস্ট বা তেল ব্যবহার করলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। কারণ ফুলে থাকা
প্রাকৃতিক আদ্রতা চুলের আগা মসৃণ রাখে এবং চুলকে আগা ফাটা ক্ষতিকারক দিক থেকে
চুলকে. শুষ্ক এবং ্মস্রিন করতে সাহায্য করে।
-
সবার জন্য সহজলভ্য ব্যবহারঃ সবচেয়ে বড় সুবিধা হল জবাব ফুল প্রায় সব
জায়গাতেই পাওয়া যায়। তাই খুব সহজে ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায়
মেনে নিয়ে তেল তৈরি করা হয়। এতে কোন খরচ নেই ফলে চুল থাকে সুস্থ ও
সুন্দর।
নতুন চুল গজাতে যাব ফুল
চুল পড়া আজকাল প্রায় সবারই একটা বড় সমস্যা হয়ে গেছে। কারণ বয়স খাদ্যভাস
মানসিক চাপ কিংবা কেমিক্যাল ব্যবহার সবমিলিয়ে চুল পড়া যেন নিত্যদিনের ব্যাপার
হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যা কমানোর পাশাপাশি নতুন চুল গজানোর জন্য জবা ফুল
আপনার জন্য একেবারে প্রাকৃতিক একটি সমাধান হতে পারে। অনেকেই বছরের পর বছর
বাজারের দামি তেল বা ওষুধ ব্যবহার করেও ফল পান না। অথচ নিয়মিত জবা ফুল ব্যবহার
করলে আসলেই নতুন চুল গজাতে শুরু করে। প্রথমে বলা যায় জবা ফুলে এমন কিছু
প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। যখন রক্ত চলাচল
ভালো হয় তখন চুলের গোড়া শক্ত হয় এবং নতুন চুল গজানোর জন্য প্রয়োজনীয়
পুষ্টি পায়। তাই সপ্তাহে কয়েকদিন জবা ফুল বা জবা ফুলের তেল দিয়ে মাথায়
মালিশ করলে ধীরে ধীরে মাথার ফাঁকা জায়গায় ছোট ছোট নতুন চুল উঠতে দেখা
যায়।
তেলের পাশাপাশি সরাসরি জবা ফুল ও পাতা বেটে প্যাক তৈরি করে মাথায় লাগানো যায়।
তবে পেস্টটা চুলের গোড়া ও ফাঁকা জায়গায় ভালোভাবে লাগাতে হবে। লাগানোর পরে ৩০
থেকে ৪৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে নতুন চুল ওঠার
সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। আরো ভালো ফল পাওয়া যায় যখন অনেকেই জবা ফুলের
সাথে মেথি দানা কারি পাতা বা অ্যালোভেরা মিশিয়ে ব্যবহার করেন। এই উপাদান গুলো
চুলের গোড়া শক্ত করে এবং দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যাদের মাথায়
মাঝখানে টাক পড়তে শুরু করেছে তাদের জন্য জবা ফুল সত্যি কার্যকর একটি প্রাকৃতিক
উপাদান।
আমার মতে সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এখানে কোন কেমিক্যাল নেই তাই পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়ার কোন ভয় থাকে না। একদম প্রাকৃতিক উপায়ে ধীরে ধীরে নতুন চুল
গজাতে সাহায্য করে। হ্যাঁ এটা হঠাৎ করে এক সপ্তাহে ফল দেখাবে না কিন্তু নিয়মিত
ব্যবহার করলে কয়েক মাসের মধ্যে পার্থক্য বোঝা যাবে। তাই যারা চুল পড়া ও টাকের
সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য প্রাকৃতিক সমাধান হলো জবা ফুল। আর সবচেয়ে সহজ
ব্যবহারিক রূপ হল ঘরে বসেই জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় অনুসরণ করে তেল তৈরি
করে নিয়মিত ব্যবহার করা যায়।
জবা ফুলের হেয়ার প্যাক
চুলকে সুস্থ ঘন আর সুন্দর রাখার জন্য শুধু তেল নয় হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা
খুবই জরুরী। বাজারের নানা ব্র্যান্ডের হেয়ার ্প্যাক পাওয়া যায়। কিন্তু
সেগুলোতে কেমিক্যাল থাকার কারণে দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হতে পারে।
তাই ঘরে বসে জবা ফুল দিয়ে প্রাকৃতিক হেয়ার প্যাক বানানো সবচেয়ে ভালো উপায়।
সহজ কিছু উপকরণ দিয়ে বানানো এসব প্যাক শুধু চুল পড়ানো কমায় না বরং নতুন চুল
গজাতেও সাহায্য করে।
প্রথমে মনে রাখতে হবে জবা ফুলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন খনিজ আর এন্টিঅক্সিডেন্ট যা চুলের গোড়া শক্ত করে। তাই যখন আমরা
হেয়ার প্যাক বানায় তখন শুধু ফুল নয় জবা ফুলের পাতাও ব্যবহার করা উচিত। এতে
ফলাফল আরো ভালো হবে। নিচে জবা ফুলের হেয়ার প্যাক সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো
হলো।
- জবা ফুল+ দই হেয়ার প্যাকঃ কিছু তাজা জবা ফুল ও পাতা নিয়ে ব্লেন্ডারে পেস্ট বানাতে হবে। এরপর এর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণ মাথায় ভালোভাবে লাগানর ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। দই চুলকে নরম করবে আর জবা ফুল চুলের গোড়া শক্ত করে তুলবে
- জবা ফুল+ মেথি হেয়ার প্যাকঃ প্রথমে এক মুঠো মেথি দানা আগে রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে মেথি ও কয়েকটা জবা ফুল একসাথে ব্লেন্ডার করে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এই প্যাক খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে অসাধারণ কাজ করে।
- জবা ফুল+ এলোভেরা হেয়ার প্যাকঃ জবা ফুল ও পাতা পিষে এর সঙ্গে দুই টেবিল চামচ এলোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে হবে। এই প্যাক চুলে লাগালে মাথার তক ঠান্ডা হয় চুল হয় মসৃণ ও ঝলমলে।
- জবা ফুল+ ডিমের কুসুম হেয়ার প্যাকঃ চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হলে জবা ফুলের পেস্টের সঙ্গে একটা ডিমের কুসুম মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ডিম চুলে প্রোটিন যোগ করে আর জবা ফুলে চুলের গোড়া শক্ত করে ফলে চুল হয় ঘন কালো আর উজ্জ্বল।
এসব প্যাক ব্যবহার করার নিয়মও খুব সহজ। সপ্তাহে অন্তত একদিন এই প্যাকগুলো
যেকোনো একটি সময় ব্যবহার করলে চুল অনেক সুন্দর হয়ে ওঠে। লাগানোর পর ধুয়ে
ফেলার সময় খুব গরম পানি ব্যবহার করা উচিত নয় শুধু কুসম গরম পানি ব্যবহার
করলেই ভালো। সবচেয়ে বড় সুবিধা হল বারিতে বানানো এসব প্যাকে কোনরকম
কেমিক্যাল থাকে না। এগুলো একেবারেই প্রাকৃতিক উপায় তৈরি করা হয়। যার কারণে
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কোন ভয় থাকে না। আর এগুলোত বানাতে খরচও খুব কম হয়।
চাইলে তেলের পাশাপাশি প্যাক ব্যবহার করলে দ্বিগুণ উপকার পাওয়া যায়।
তাই বলা যায় জবা ফুল দিয়ে তৈরি হেয়ার প্যাক হল প্রাকৃতিক উপায়ে চুলের যত
নেওয়ার সেরা উপায়। আর এর সঙ্গে যদি আপনি ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর
উপায় মেনে তেল বানিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে চুল হবে ঘন কালো এবং
ঝলমলে। আশা করি পুরো ব্যাপারটি আপনি বুঝতে পেরেছেন।
জবা পাতার ব্যবহার
জবা ফুল যেমন চুল ও সৌন্দর্যের জন্য উপকারী তেমনি জবা পাতার ব্যবহারও কম
নয়। অনেকেই শুধু ফুলকে গুরুত্ব দেন কিন্তু পাতার ভেতর রয়েছে অনেক অসাধারণ
গুণ। চুলের যত্ন ও ত্বকের যত্ন এমনকি স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রেও জবা পাতার
ব্যবহার দারুন কার্যকারী উপাদান হিসেবে পালন করে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক
জবা পাতার ব্যবহার সম্পর্কে।
- চুল পড়া কমায়ঃ জবা পাতায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান চুলের গোরা শক্ত করে। আপনি কয়েকটা তাজা পাতা নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ব্লেন্ড করে পেস্ট বানিয়ে মাথায় এবং মুখে লাগালে চুল পড়া অনেকটা কমে যায়। অনেকে ফুলের সঙ্গে পাতাও একসাথে ব্যবহার করেন এতে ফলাফল আরো ভালো হয়। আর এই সময় যদি ঘরে বানানো তেল ব্যবহার করেন তবে আরও উপকার পাওয়া যায়। এই কারণে সবাই ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় সম্পর্কে ভালোভাবে শিখে নিবেন।
- খুসকি দূর করেঃ মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে খুশকি বেড়ে যায়। জবার পাতার পেস্ট খুশকি কমাতে দারুন কাজ করে। নিয়মিত সপ্তাহে একদিন জবা ফুলের পাতার পেস্ট মাথায় লাগালে মাথা পরিষ্কার থাকে এবং খুশকির নিয়ন্ত্রণে থাকে।
-
প্রাকৃতিক হেয়ার কন্ডিশনারঃ জবা পাতার পেস্ট চুলে লাগালে চুল হয়
মসৃণ ও নরম। যাদের চুল পাকানো থাকে বা রুক্ষ হয়ে যায় তারা এই পাতার
ব্যবহার করলে অনেকটা আরাম পান।এটি লাগানোর ফলে চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতাও
ফিরে আসে।
-
ব্রণ ও দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ শুধু চুল নয় ত্বকের যত্নে ও জবার
পাতার ব্যবহার করা যায়। পাতা বেটে সামান্য হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে মুখে
লাগালে ব্রণ কমে এবং দাগ হালকা হয়। বিশেষ করে যাদের ত্বকে সহজে ব্রণ হয়
তাদের জন্য এটা খুবই উপকারী।
-
ছোটখাটো ক্ষত সারাতে সহায়তা করেঃ গ্রামে অনেক সময় দেখা যায় ছোট
কোনো ক্ষত হলে মানুষ জবা পাতার রস ক্ষত জায়গায় লাগায়। এতে দ্রুত আরাম
পাওয়া যায় কারণ পাতায় এন্টি ভিক্টোরিয়াল গুণ থাকার কারণে ক্ষত ভালো
করতে সাহায্য করে।
-
মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখেঃ গরমে মাথার ত্বক অনেক সময় অস্বস্তি তৈরি
করে। জবার পাতার পেস্ট লাগালে মাথা ঠান্ডা থাকে চুলকানি কমে যায় এবং আরাম
পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে আপনি বলতে পারেন শুধু ফুল নয় জবা পাতার ব্যবহার চুল ও ত্বকের
যত্নের সমানভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত পাতা ও ফুল দিয়ে যত্ন নিলে
অনেক সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা প্রাকৃতিক উপায় চুলের যত্ন
নিতে চান তারা ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় মেনে তেল তৈরি করে পাতার
সঙ্গে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুল হবে আরো ঘন কালো ও মজবুত।
লাল জবা ফুলের উপকারিতা
লাল জবা ফুল শুধু দেখতে সুন্দর নয় এর মধ্যে রয়েছে অসাধারণ স্বাস্থ্য ও
সৌন্দর্যের গুণ। প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ ঘরোয়া চিকিৎসকরা লাল জবা ফুল
ব্যবহার করে আসছে। চুল ত্বক আর শরীরের জন্য এই ফুলের উপকারিতা সত্যি অনেক
বেশি। নিজের লাল জবা ফুলের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হলো।
- চুল পড়া কমায়ঃ লাল জবা ফুলে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান চুলের গোরা শক্ত করে। নিয়মিত এই ফুলের তেল বা পেস্ট ব্যবহার করলে চুল পড়া অনেকটা কমে যায়। অনেকে ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় শিখে লাল জবা দিয়ে তেল তৈরি করেন এতে চুল সুস্থ ঘন হয়।
- নতুন চুল গজাতে সাহায্য করেঃ যাদের মাথায় ফাঁকা জায়গা বা টাক দেখা দিয়েছে তাদের জন্য লাল জবা ফুল খুবই কার্যকর একটি উপাদান। ফুল বা তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে নতুন নতুন চুল আসতে শুরু করে। বিশেষ করে মাথার গোড়ায় মালিশ করলে দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
- খুশকি দূর করেঃ শুষ্ক ও খুশকির সমস্যাইয় অনেকেই বিরক্ত হয়ে থাকেন। লাল জবা ফুলের তেল বা পেস্ট মাথায় লাগালে আদ্রতা বজায় রাখে এবং খুশকি কমে যায় ফলে চুলও স্বাস্থ্যবান হয়ে ওঠে।
- ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করেঃ লাল জবা ফুল শুধু চুলের জন্য নয় ত্বকের জন্য দারুন উপকারে আসে। ফুলের পেস্ট মুখে লাগালে ত্বক হয় মসৃণ ও উজ্জ্বল। ব্রণ দাগ বা মলিনত কমাতে লাল জবা ফুল খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখেঃ গরমে মাথার ত্বক অস্বস্তিকর হয়ে যায় ফলে অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে। লাল জবা ফুলের পেস্ট বা তেল মাথায় মালিশ করলে টক ঠান্ডা থাকে চুলকানি কমে যায় এবং আরাম পাওয়া যায়।
- প্রাকৃতিক উপায়ে চুল ও ত্বকের পুষ্টি দেয়ঃ লাল জবা ফুলে থাকা ভিটামিন ও খনিজ চুল ও ত্বক উভয়কে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে। এতে চুল হয় শক্ত উজ্জ্বল এবং ঘন তক থাকে নরম কোমল এবং উজ্জ্বল।
- সবার জন্য নিরাপদ ব্যবহারঃ লাল জবা ফুল প্রায় সব জায়গায় সহজে পাওয়া যায়। ঘরে বসে সহজ ভাবে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় মেনে ব্যবহার করলে চুল ও ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। একেবারে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ ভাবে হওয়ার কারনে পারশপ্রত্রিকায়া কোন ভয় থাকে না।
- দীর্ঘ সময় ধরে চুল ও ত্বকের সমস্যা কমায়ঃ নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পড়া খুশকি রুক্ষ চুল ও দাগের সমস্যা অনেকটা কমে যায়। দীর্ঘমেয়াদ এর নতুন চুল গজায় চুল ও ত্বক উভয় স্বাস্থ্যবান রাখতেও সাহায্য করে।
- ঘরে বানানো তেলের সঙ্গে ব্যবহার করলে দ্বিগুণ উপকার হয়ঃ লাল জবা ফুল দিয়ে ঘরে বানানো তেল ব্যবহার করলে উপকারিতা আরো বেড়ে যায়। চুল শক্ত ঘন ও চকচকে হয় বিশেষ করে যারা প্রাকৃতিকভাবে চুলের যত্ন নিতে চান তাদের জন্য এটি একেবারে উপযুক্ত।
সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও চুলের যত্নের একটি রত্ন।
ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় সেখানে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল হবে
সুস্থ ঘন ও উজ্জ্বল এবং সাথে সাথে ত্বক থাকবে কমল এবং মসৃণ।
জবা ফুলের তেলের অপকারিতা
যদিও জবা ফুলের তেল অনেক উপকারী তবুও কিছু ক্ষেত্রে এর অপকারিতা থাকতে পারে।
সাধারণত জবা ফুলের তেল প্রাকৃতিক হলেও ভুল ভাবে ব্যবহার করলে কিছু সমস্যা হতে
পারে। যেমন
- অতিরিক্ত ব্যবহারঃ যদি বেশি পরিমাণে জবা ফুলের তেল নিয়মিত ব্যবহার করা হয় তাহলে মাথায় ত্বককে খুব চিপচিপে ভাব করে দিতে পারে। এতে চুল তাড়াতাড়ি ধুলই বা ময়লায় আটকে যেতে পারে। তাই নিয়মে তো ব্যবহার করার সময় অবশ্যই স্বল্প আকারে ব্যবহার করতে হবে।
-
এলার্জির সমস্যাঃ যাদের ত্বকের সংবেদনশীল অর্থাৎ যাদের অ্যালার্জির
সমস্যা আছে তারা প্রথমবার জবা ফুলের তেল ব্যবহার করার আগে ছোট অংশ পরীক্ষা
করতে হবে। কখনো কখনো ত্বকে লালচে দাগ চুলকানি বা খুশকি দেখা দিতে পারে এই তেল
ব্যবহার করার ফলে।
-
মাথায় খুব বেশি রাখলে চুলে তৈলাক্ত হয়ঃ অল্প পরিমাণ তেল চুলের জন্য
ভালো কিন্তু অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করলে চুল খুব তৈলাক্ত হয়ইলাক্ত।পরে চুল
ধোয়ার সময় বেশি শক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হতে পারে যা চুলের জন্য ভালো
নয়।
-
সঠিকভাবে না বানালে ফলাফল কমেঃ যদি তেল বানানোর সময় ফুল ঠিক ভাবে
পরিষ্কার না করা হয় তাহলে চুলের তেলের কার্যকারিতা কমে যায়। এমন তেল কখনো
কখনো চুলকে ফাটা বা রুক্ষ করে দিতে পারে তাই সব সময় খেয়াল রাখতে হবে।
-
কিছু মানুষের জন্য এলার্জিঃ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যারা খুব
সংবেদনশীলতা অর্থাৎ এলার্জি সমস্যায় ভুগছেন তাদের চামড়ায় জবা ফুলের তেল
অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রথমে সামান্য পরিমাণে পরীক্ষা করে
ব্যবহার করা উচিত।
জবা ফুলে তেল খুবই কার্যকর তবে সর্বদা মাধ্যম পরিমাণে ব্যবহার করুন এবং নতুন
ব্যবহার করার আগে ছোট অংশ পরীক্ষা করুন। এছাড়া ঘরে বসে জবা ফুল তেল বানানোর
উপায় সঠিক ভাবে মেনে তেল তৈরি করলে অপকারিতা কম হয়।
জবা ফুল নিয়ে লেখকের শেষ কথা
প্রাকৃতি আমাদের একটি অসাধারণ উপহার দিয়েছে সেই উপহারটি হল জবা ফুল। কারণ জবা
ফুল থেকে আমাদের চুল ত্বক ও সৌন্দর্যের যত্নে একটি প্রাকৃতিকভাবে অনেক সাহায্য
করে। ঘরে বসে জবা ফুলের তেল বানানোর উপায় মেনে তেল তৈরি করলে চুল শক্ত ঘন ও
চকচকে হয় আর তক হয় কমল উজ্জ্বল। শুধু তাই নয় ফুল ও পাতার পেস্ট ব্যবহার করে
নতুন চুল গজানো খুশকি দূর করা এবং তকের দাগ দূর করা সম্ভব। যদি নিয়মিত ব্যবহার
করা যায় তবে বাজারের কেমিক্যাল যুক্ত পণ্য ছাড়াই চুলও ত্বকের যত্ন নেয়া সম্ভব।
তবে মনে রাখবেন যে কোন প্রাকৃতিক তেলের মতই জবা ফুলের তেলেও মাধ্যম পরিমাণ এবং
সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। তাহলে সেরা ফলাফল পাওয়া যাবে।
শেষ পর্যায়ে এসে শুধু এটুকু বলতে চাই প্রাকৃতিক উপহার কে ঠিক ভাবে ব্যবহার করলে
আমাদের চুল ও ত্বক হবে সুস্থ ও সুন্দর এবং প্রাণবন্ত। তাই ঘরে বসে প্রাকৃতিক
উপায়ে যত্ন নিন আর জবা ফুলের সব গুণ উপভোগ করুন।
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনারা পুরোটি পড়েছেন এমনকি বুঝতেও পেরেছেন জবা
ফুলের তেল বানানোর উপায় সম্পর্কে। আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই
পরিস্থিতি তাদের কাছে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ
এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url