খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা শরীরের জন্য অনেক উপকারী বলে ধরা হয়। চিরতা এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ যার স্বাদ তেতো হলেও এর গুনাগুন অত্যন্ত বিস্ময়কর। বহু শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদ ও ইউনানী চিকিৎসায় এই ভেষজ টি ব্যবহার হয়ে আসছে। সঠিক নিয়মে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে এটি সেবন করলে নানান শারীরিক সমস্যায় উপশম পাওয়া যায়।

খালি-পেটে-চিরতা-খাওয়ার-উপকারিতা

চিরতা সাধারণত জ্বর সর্দি কাশি হজমের সমস্যা লিভারের অসুখ থেকে শুরু করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত নানা রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগে। তবে নিয়ম না মেনে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি গ্রহণ করলে এটি উপকারের বদলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ডেকে আনতে পারে।


পেজ সূচিপত্রঃ খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। চিরতা প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক ও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। খালি পেটে চিরতা সেবন করলে শরীরের টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খালি পেটে চিরতা খাওয়ার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পাচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা অন্যতম হয়। এটি পিত্তরস নিঃসরণে সহায়তা করে ফলে খাদ্য সহজে হজম হয়। একইসঙ্গে গ্যাস্টিক এসিডিটি প্যাট ফুলে যাওয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ফ্যাটি লিভার হোপাটাইটিস জন্ডিস জনিত সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য চিরতা অত্যন্ত উপকারী। খালি পেটে চিরতা সেবনের মাধ্যমে লিভারকে ডিটক্স করা সম্ভব এবং লিভারের কোষ কে সতেজ রাখা যায়। এর ফলে ফ্যাটি লিভার হেপাটাইটিস ও জন্ডিস জনিত জটিলতা কমে যায়। এছাড়া নিয়মিত খালি পেটে চিরতা খাওয়ার মাধ্যমে রক্ত বিশুদ্ধ থাকে এবং ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ ফোসকারি চুলকানি ও এলার্জি অনেকাংশে কমে যায়।

রক্ত থেকে দূষিত পদার্থ দূর হওয়ায় রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। তাছাড়া খালি পেটে চিরতা খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। জ্বর ও সর্দি কাশি কমে কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ ও সহায়তা করে। সঠিক নিয়মে এবং পরিমাণমতো চিরতার সেবন করলে এইসব উপকারিতা পেতে পারেন।

চিরতা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম

আমরা ইতিমধ্যে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। এবার জানা দরকার চিরতা খাওয়ার সঠিক সময়ও নিয়ম। কারণ আপনি যদি চিরতা খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম না জেনে প্রতিদিন নিয়মিত এটি সেবন করেন তাহলে শরীরের উপকারিতা পাওয়া যাবে না বরং ক্ষতি হতে পারে। তাই চিরতার পূর্ণ উপকারিতা পেতে হলে চিরতা খাওয়ার সঠিক সময় এবং নিয়ম জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবার সংক্ষেপে জানবো কখন চিরতা খেতে হবে এবং কিভাবে খাওয়া উচিত।

সকালে খালি পেটেঃ চিরতার সব উপকারিতা পেতে চাইলে সকালে খালি পেটে চিরতা খাওয়া হতে পারে সেরা সময়। কারণ এই সময় পেট খালি থাকে ফলে চিরতার সক্রিয় উপাদান গুলো সরাসরি শরীরের মধ্যে কাজ করতে পারে।
চিরতা-খাওয়ার-সঠিক-সময়-ও-নিয়ম
সকালে নাস্তার তিরিশ মিনিট পরেঃ অনেকের জন্য সকালে খালি পেটে চিরতা খাওয়া সম্ভব হয় না। পেটে ব্যথা মাথা ঘরা বা বমি বমি ভাবের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাদের জন্য চিরতা খাওয়ার সঠিক সময় হল নাস্তা করার প্রায় ৩০ মিনিট পর। এতে পেটের এসিডিটি কমে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

চিরতা খাওয়ার নিয়মঃ চিরতা সাধারণত দুই ভাবে খাওয়া যায় চিরতার গুরা এবং চিরতার পানি। চিরতার পানি তৈরি করতে রাতে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ চিরতার গুঁড়ো ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে পানি ছেঁকে নিয়ে এটি পান করতে হবে। চিরতার গুড়ো খাওয়ার জন্য এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানিতে এক থেকে দুই চামচ চিরতার গুঁড়ো মিশিয়ে পান করা যায়। সাদ বাড়ানোর জন্য সামান্য মধু বা লেবুর রস যোগ করা যেতে পারে।

ভালো ফলাফলের জন্য এই নিয়ম অনুসারে এক থেকে দুই মাস নিয়মিত চিরতা সেবন করতে হবে। সাধারণত ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এর প্রাথমিক ফলাফল চোখে পড়তে শুরু করবে।

খালি পেটে চির তা খাওয়ার অপকারিতা

উপরের অংশে আমরা চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। তবে চিরত খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি রয়েছে কিছু অপকারিতা। চিরাতা প্রাকৃতির হওয়ায় খালি পেটে খেলে অনেকের বমি বমি ভাব হতে পারে। বিশেষ করে যাদের পাকস্থলী সংবেদনশীল তাদের জন্য এটি পেট ব্যথা বা বমি জেনা করতে পারে। যাদের পাকস্থলী দুর্বল বা আগে থেকে আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা যদি খালি পেটে চিরতা সেবন করে তাহলে তাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। 

আবার উপকারের আশায় অতিরিক্ত চিরতা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক এর চাইতে অনেক কমে যেতে পারে। তাই চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে আগে থেকেই। গর্ভবতী নারী ও শিশুদের জন্য খালি পেটে চিরতা একদম অনুচিত। কারণ গর্ভবতী নারীরা এটি খেলে গর্ভের সংকোচন সৃষ্টি হতে পারে যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়। একইভাবে ছোট শিশুদের জন্য অতিরিক্ত চিরতা উপকারের চাইতে ক্ষতি কারী বেশি।

ডায়াবেটিস রোগীরা যদি চিরতার পাশাপাশি ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ করেন তবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমে যেতে পারে। তাই এই ক্ষেত্রে চিরতা পরিমাণে কম খাওয়া বা একদমই না খাওয়া উত্তম। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চিরতা খেলে লিভার ও কিডনির ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

সবমিলিয়ে বলা যায় চিরতা যেমন উপকারী তেমনি এটি অপকারীও হতে পারে। তাই আমাদের উচিত সঠিক নিয়ম ও পরিমান মত চিরতা সেবন করা। অথবা একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।

চিরতা কি ও আসল চিরতা চেনার উপায়

চিরতা একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ যা শতাব্দীকাল ধরে আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি মূলত হজম শক্তি বাড়ানো লিভার পরিষ্কার রাখা এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমান সময়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চিরতার মতো দেখতে কিছু উদ্ভিদ বিক্রি করছে যা খেলে শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ঘটাতে পারে। তাই চিরতার বৈশিষ্ট্য এবং আসল চিরতা সনাক্ত করার উপায় যানা অত্যন্ত জরুরী।

চিরতার সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ
  • চিরতা বাংলা নাম এবং একে বৈজ্ঞানিক ভাষায় swertia chirata বলা হয়
  • চিরতার বৈজ্ঞানিক পরিবার হল gentianaceae
  • চিরতা উদ্ভিদের ধরন বার্ষিক ভেষজ উদ্ভিদ
  • দৈর্ঘ্য ২ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়
  • চিরতার স্বাদ থাকে অত্যন্ত তিতা
  • চিরতার ব্যবহারযোগ্য অংশ গুলা হল মূলত কান্ড পাতা ও শিকল
আসল চিরতা চেনার উপায়ঃ আসল চিরতা চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো এর শাদ ও গন্ধের মাধ্যমে শনাক্ত করা। আসল চিরতার সাদ তীতা যা অল্প পরিমাণে মুখে নিলে অনেকক্ষণ ধরে থাকে।নকল চিরতার স্বাদ তুলনামূলকভাবে কম তিতা বা হালকা তিতা থাকে। গন্ধের দিকে থেকেও পার্থক্য করা যায়। আসল চিরতার গন্ধ হালকা ঘাসের মত আর নকল ছিল তার গন্ধ সাধারণ খরের মতো হয়।

এছাড়াও আসল চিরতার রং হালকা বাধা এবং কাণ্ডের ছোট ছোট গীট দেখা যায় যা নকল চিরতার ক্ষেত্রে সাধারণত পাওয়া যায় না। সঠিকভাবে চিরতা চেনার জন্য এই বৈশিষ্ট্যগুলো যানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র দেখে নয় স্বাদ ও গন্ধ মিলিয়ে যাচাই করা হলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে আপনি আসল চিরতা ব্যবহার করছেন যা শরীরের জন্য নিরাপদ এবং উপকারী।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চিরতা খাওয়ার নিয়ম

চিরতা প্রাচীনকাল থেকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা একটি জনপ্রিয় ভেষজ উদ্ভিদ। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ইনসুলিন এর কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং অগ্নাশয়ের কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক। তবে সঠিক নিয়ম না মানলে চিরতার এই উপকারের বদলে রক্তের শর্করার মাত্রা অত্যাধিক কমে যেতে পারে যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য চিরতা খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে প্রথমে চিরতা খাওয়ার জন্য ২৫০ মিলি লিটারের পানিতে ১ থেকে ২ চামচ চিরতার পাতা রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে চিরতার পাতা সর্বনিম্ন.৮ থেকে ১০ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখা উচিত। এরপরে সকালে খালি পেটে এই পানি খেতে হবে। খালি পেটে চিরতা পান করার তিরিশ মিনিট পর সকালে হালকা নাস্তা করা উচিত। এতে চিরতার সমস্ত উপাদান শরীরে ভালোভাবে শোষণ করতে পারে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হয়।
খালি-পেটে-চিরতা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-নিয়ম
যারা খালি পেটে চিরতার তীব্র তিতা স্বাদ সহ্য করতে পারে না তাদের জন্য চিরতার চা একটি সহজ ও কার্যকর বিকল্প হতে পারে। চিরতার চা বানানোর জন্য প্রথমে এক কাপ পানিতে ২ থেকে ৩ চামচ চিরতা দিয়ে ৫ থেকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর এই পানীয়টি সেদিনে একবার বা সর্বোচ্চ দুই বার পান করা যেতে পারে। তবে এর বেশি খাওয়া হলে রক্তের শর্করার মাত্রা অত্যাধিক কমে যেতে পারে যা শরীরের জন্য বিপদজনক হবে।

সঠিকভাবে চিরতা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা পাওয়া সম্ভব। তবে এটি শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ ও নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার সঙ্গে মিলিয়ে নেয়া উচিত।

লিভার পরিষ্কার রাখতে চিরতার কার্যকারিতা

চিরতা লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষায় একাধিক দিক থেকে সহায়তা করে। লিভার আমাদের শরীরের প্রাকৃতিক ফিল্টার যা রক্ত পরিশোধন করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। তবে অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস অতিরিক্ত চিনি ও তেল যুক্ত খাবার ওষুধের বেশি সেবন ইত্যাদির কারণে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। ঠিক এই সময় চিরতা প্রাকৃতিক উপায়ে লিভার পরিষ্কার করার জন্য কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। তাই চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে আগে থেকেই।

চিরতার মূল উপাদান শুইয়ারিন ও আমারওগেনটিন লিভারের এনজাইম কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি লিভারে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ও বিষাক্ত টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত চিরতা সেবনের ফলে লিভারের ফাংশন উন্নত হয় হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের পিত্তরসের ভারসাম্য বজায় থাকে। চিরতার নিয়মিত ব্যবহার লিভারের ইনফ্লামেশন কমাতে ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হ্রাস করতে এবং লিভারের কোষগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়।

এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং হেপাটোপ্রোটিকটিভ প্রভাব রাখে যা বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রমাণিত। তবে চিরতা লিভার পরিষ্কারের জন্য কার্যকর হতে হলে সঠিক নিয়ম মেনে খেতে হবে। সাধারণত এক গ্লাস পানিতে এক থেকে দুই চামচ চিরতা এক রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে সেই পানি পান করা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এতে চিরতার সংক্রিয় উপাদান সরাসরি শরীরের মধ্যে কাজ করতে পারে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।

ত্বকের সমস্যা দূর করতে চিরতার উপকারিতা

ত্বকের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে চিরতায় রয়েছে বিশেষ কার্যকারিতা। আমাদের অনেকের ত্বক বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে যেমন ব্রণ পুশকরি চুলকানি বা রেস। এসব সমস্যার সমাধানের জন্য অনেকে বাজারের দামি ফেসওয়াশ ক্রিম বা অন্যান্য প্রসাধনে ব্যবহার করে। তবে এসব পণ্যের ব্যবহার মাত্র সাময়িক ফল দেয়। ব্যবহার বন্ধ করলে আবার একই সমস্যা ফিরে আসে। কখনো কখনো আগের চেয়ে আরো জটিল হয়ে দাঁড়ায়।

মূলত ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে হলে ত্বকের বাহিরের যত্নের আগে ত্বকের ভেতর থেকে সুস্থ রাখা অত্যন্ত জরুরী। ভেতর থেকে স্বাস্থ্যবান হলে বাহ্যিক সমস্যা গুলোও কম দেখা দেয়। ঠিক এই জায়গায় চিরতার ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চিরতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যকারিতা ত্বকের জন্য হলঃ
  • রক্ত পরিশোধন করেঃ  চিরতা প্রাকৃতিকভাবে রক্ত বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করে। এটি ব্রণ পুস্কুটি চুলকানি ও অন্যান্য চর্মরোগ কমাতে কার্যকর।
  • এন টি ইনফ্লেমেটরি প্রভাবঃ চিরতার এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ রয়েছে তবে ফুসকুড়ি ও এলার্জি প্রতিরোধে সহায়তা করে।
  • লিভার রিডক্সঃ চিরতা খাওয়ার ফলে লিভার সুস্থ থাকে এবং শরীরে অতিরিক্ত তাপ দূর হয়। এর ফলে ব্রণের প্রবণতা কমে যায়।
  • অ্যান্টিসেপটিক গুনঃ চিরতার মধ্যে থাকা অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ত্বকে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
  • ভেতর থেকে উজ্জ্বলতাঃ নিয়মিত চিরতা সেবনে দেহ ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে। যার ফলে ত্বক প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল ও সতেজ হওয়া দেখায়।
সর্বশেষে আমি বলতে পারি চিরতা শুধুমাত্র বাহিরের দিক থেকে ত্বকের যত্ন নেয় না বরং ভেতর থেকেও ত্বক সুস্থ রাখতে একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপায় হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত সঠিকভাবে চিরতা খেলে ত্বকের সমস্যাগুলো অনেকাংশে দূর করা সম্ভব।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে চিরতা খাওয়ার নিয়ম

চিরতা কেবলমাত্র ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ লিভার পরিষ্কার বা ত্বকের সমস্যার সমাধানের জন্য নয়। এটি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকার একটি ভেষজ উপাদান। চিরতা লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ায় পিত্তরসের নিঃসরণ বৃদ্ধি করে এবং অন্তরে ভালো ব্যাকটেরিয়ার কার্যকারিতা উন্নত করে। যার ফলে খাবার সহজে হজম হয় এবং পেটে গ্যাস বা অস্বস্তি কমে যায়।
চিরতা-খাওয়ার-নিয়ম
চিরতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এবং খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে । প্রথমে এক গ্লাস প্রায় ২৫০ মিলি লিটার পানিতে এক থেকে দুই চামচ চিরতার কুচি পাতা সরাসরি সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভিজানোর সময়কাল যেন সর্বনিম্ন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা হয়। চিরতার কার্যকারী উপাদান পুরোপুরি পানিতে মিশে যায়। সকালে খালি পেটে সেই পানি থেকে পান করা উচিত। খালি পেটে চিরতা পানি পান করার কমপক্ষে ৩০ মিনিট পর হালকা নাস্তা করলে চিরতার কার্যকারিতা সর্বোচ্চ হয় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।

যারা তিতাসাদ খেতে অসুবিধা বোধ করেন তারা চাইলে চিরতার চা বানিয়ে খেতে পারেন। এক কাপ পানি  ৫ থেকে ১০ মিনিট ফুটিয়ে নিন যা শেখ সরাসরি পান করা যায়। বা সা্দ বাড়ানোর জন্য কিছু লেবু বা মধু যোগ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে চিরতা খেলে হজমের সুবিধার পরিবর্তে গ্যাস্টিকের মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চিরতা সর্বদা নির্দিষ্ট পরিমাণ এবং নিয়মমত খাওয়া উচিত। 

কাদের চিরতা খাওয়া একদমই উচিত নয়

আমরা ইতিমধ্যেই খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। চিরতা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ হলেও এটি সকলের জন্য উপযুক্ত নয়। কিছু বিশেষ শারীরিক অবস্থা বা রোগ ব্যবস্থায় চিরতা খাওয়া বিপদজনক হতে পারে। বিশেষ করে গর্ভবতী বা স্তন্যদান কারী মায়েদের জন্য চিরতা একদমই নিরাপদ নয়। শিশুদের বিশেষ করে ৮ বছরের নিচে বাচ্চাদের জন্য চিরতা গ্রহণ নিরাপদ নয়। যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম তারা চিরতা খেলে বিপদে পড়তে পারেন।

এছাড়াও গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য চিরতা গ্রহণের ফলে সমস্যা আরো বাড়তে পারে। যারা ইনসুলিন বা অন্যান্য ওসুধ নিয়মিত নিচ্ছেন তাদের জন্য চিরতা খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। লিভার বা কিডনির সমস্যা যাদের আছে তাদের চিরতা খেলে শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। এলার্জি জনিত সমস্যা থাকলেও চিরতা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। তাই এই সমস্ত ক্ষেত্রে চিরতা গ্রহণের আগে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি। তাই খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে আগে থেকেই।

চিরতা খেলে কি অ্যালার্জি কমে

চিরতা খেলে এলার্জি কমানোর বিষয়টি সত্যি অনেকের কাছে আগ্রহের। চিরতার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান যেমন এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টিসেপটিক উপাদান শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অনেকে এলার্জির মূল কারণ শরীরের মধ্যে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ জমা হওয়া এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া। চিরতা খেলে শরীর থেকে টক্সিন বের হয় লিভার পরিষ্কার থাকে রক্ত পরিশোধিত হয় এবং শরীরের প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। এর ফলে তকে চুলকানি বা অন্যান্য হালকা এলার্জি সমস্যার মাত্রা কমে যেতে পারে।

চিরতা ব্যবহার করতে চাইলে এর সঠিক নিয়ম মেনে খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত রাতে এক গ্লাস পানি বা হালকা গরম পানিতে এক থেকে দুই চামচ চিরোতা ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। যদি খালি পেটে খাওয়া কঠিন হয় তবে চিরতা  চা বানিয়ে খাবার পরেও সেবন করা যায়। দিনে সর্বোচ্চ এক থেকে দুইবার সেবন করা নিরাপদ।

তবে মনে রাখতে হবে চিরতা তীব্র তিতা প্রাকৃতির তাই বেশি পরিমাণে বা দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করলে গ্যাস্ট্রিক হজমের সমস্যা বা রক্তচাপ কমে যাওয়ার মত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যাদের তীব্র এলার্জি শ্বাসনালী সমস্যা বা চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করা দরকার তারা চিরতা কেবল সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করবে। একমাত্র চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে নয়।

চিরতা কতদিন খাওয়া যায়

চিরতা খাওয়ার সময় কাল এবং ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো যাক। চিরতা যদিও প্রাকৃতিক এবং ভেষজ হলেও এর অতিরিক্ত বা অনিয়মিত ব্যবহারে শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সঠিক সময়কাল এবং বিরতির নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

সাধারণভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিয়মিত চিরতা খেতে পারেন। এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত এই সময়কাল ধরে খাওয়ার ফলে শরীরের চিরতার সঙ্গে উপাদান যেমন কার্যকর ভাবে কাজ করতে পারে যা লিভার শক্তি বৃদ্ধি সহ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এক থেকে দুই মাস নিয়মিত খাওয়ার পর শরীরের বিশ্রাম দেওয়ার জন্য এক থেকে দুই সপ্তাহ বিরতি নেওয়া উচিত। এই বিরতির সময় শরীরের হরমোন ও অন্যান্য ফিজিওলজি কাল প্রক্রিয়া ভারসাম্য রাখে এবং চিরতার উপাদান শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে না।
চিরতা-কতদিন-খাওয়া-যায়
বিরতির পর আবার প্রয়োজনে এক থেকে দুই মাসের জন্য চিরতা খাওয়া যায়। চিরতা খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। প্রতিদিন এক থেকে দুই চা চামচ চিরতার গুঁড়ো বা পাতার পানি খাওয়াই যথেষ্ট। বেশি খাওয়া হলে পেট ফাঁপা গ্যাস ডায়রিয়া বমি ভাব এবং রক্তচাপ কমে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী মা ও স্তন্যদান কারী মা ৮ বছরের নিচের বাচ্চা শিশু নিম্ন রক্তচাপের রোগী গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের রোগীর সমস্যা থাকা ব্যক্তি এবং যারা বিভিন্ন ওষুধ সেবন করেছেন তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে এর থেকে বিরত থাকতে হবে।

অতএব চিরতা খাওয়ার সঠিক সময়কাল পরিমাণ এবং বিরতির নিয়ম মেনে চললে এর সর্বোচ্চ উপকার পাওয়া সম্ভব এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকিও কম থাকে।

চিরতা কি কিডনির ক্ষতি করে

চিরতা একটি প্রাকৃতিক ভেষজ যা অনেক সময় লিভার পরিষ্কার হজম শক্তি বাড়ানো এবং রক্ত বিশুদ্ধ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। সাধারণভাবে সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি কিডনির জন্য ক্ষতিকর নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে কিডনির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন অতিরিক্ত চিরতা সেবন করলে কিডনির উপর চাপ বাড়তে পারে। যাদের কিডনিতে পূর্ব থেকে সমস্যা আছে যেমন ক্রনিক কিডনি ভিজিয়ে বা সংক্রমণ তাদের ক্ষেত্রে চিরতা ব্যবহার করলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 

এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে চিরতা খেলে কিডনির উপর নীতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সুস্থ মানুষের জন্য সঠিক নিয়মে এবং পরিমাণ মতো অনুযায়ী চিরতা খাওয়ার সাধারণত নিরাপদ। কিন্তু কিডনির সমস্যা থাকলে বা দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। 

চিরতার দাম কত

চিরতা একটি প্রাচীন ভেষজ উদ্ভিদ যা আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। চিরতা হজম শক্তি বৃদ্ধি লিবার্টিফিকেশন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ত্বক চুলের যত্নে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে বাজারে চিরতা পাওয়া যায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেট ও গুরার আকারে। চিরতার দাম মূলত এর ধরন মান প্রস্তুত প্রক্রিয়া এবং ক্রয় স্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। সাধারণত বাজারে ৫০ থেকে ১০০ গ্রাম চিরতার গু্রার দাম ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সাধারণত বেশি দামে বিক্রি হয় অনলাইনে চিরতার দাম কিছুটা বেশি হতে পারে। কারণ সেখানে প্রায় সেই পরিবহন খরচ এবং প্রিজারভেটিভ খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।

যদি আপনি উচ্চমানের চিরতা ক্রয় করতে চান তবে নিশ্চিত করুন যে এটি অর্গানিক এবং কেমিক্যালমুক্ত। বাজারে কিছু অসাধু বিক্রেতা চিরতার সঙ্গে ভেজাল বা অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে বিক্রি করে থাকে। তাই ক্রয়ের আগে প্যাকেটের লেভেল ভালোভাবে পড়া এবং বিক্রেতার রিভিউ যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।

চিরতার দাম সঠিকভাবে বোঝার জন্য স্থানীয় দোকান সুপারমার্কেট এবং অনলাইন স্টোর এর দামের তুলনা করা উচিত। এছাড়াও বাড়িতে নিজেই চিরতা শুকিয়ে এবং গুড়া করে সংরক্ষণ করা এটি দীর্ঘমেয়াদিভাবে ব্যবহার করা সম্ভব এবং অর্থশাস্ত্রয়েও হয়। সংক্ষেপে চিরতার দাম নির্ভর করে মান প্রক্রিয়াকরণ ব্র্যান্ড এবং ক্রয়ের স্থান অনুযায়ী। ক্রয় করার আগে সব দিক বিবেচনা করা অর্গানিক পণ্য নিশ্চিত করা এবং রিভিউ যাচাই করা জরুরী।

চিরতা খেলে কি ক্ষতি হয়

চিরতা একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিশেষ উদ্ভিদ এবং এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। তবে সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ মতো না খেলে শরীরের উপর নীতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। চিরতার ক্ষতিকর দিকগুলোকে বিস্তারিতভাবে দেখা যাক।
চিরতা-খাওয়ার-উপকারিতা
  • চিরতা অত্যন্ত তিতা প্রাকৃতির হয়। খালি পেটে খেলে অনেকের জন্য পেটের সমস্যা তৈরি হতে পারে। পেট ফাঁপা গ্যাস্ট্রিক অম্বলতা ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের পাকস্থলী সংবেদনশীল বা আলসার সমস্যা আছে তারা খালি পেটে চিরতা খেলে এসব সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
  • বেশি পরিমাণে চিরতা খাওয়া রক্তচাপ কমাতে পারে। যারা আগে থেকে নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন তাদের জন্য এটি বিপদজনক হতে পারে। একই ভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা যারা ইনসুলিন বা রক্তে শর্করার ওষুধ নিচ্ছেন তাদের জন্য চিরতা অতিরিক্ত খেলে রক্তের গ্লোকজের মাত্রা বিপদজনকভাবে কমে যেতে পারে। তাই খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিতে হবে আগে থেকেই।
  • গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য চিরতা খাওয়া একদম নিরাপদ নয়, এটি গর্ভের সংকোচন সৃষ্টি করতে পারে যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও শিশুদের জন্য চিরতা সরাসরি খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ তাদের পাকস্থলী ও দেহের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো শক্তিশালী নয়।
  • দীর্ঘ সময় ধরে বা অত্যাধিক পরিমাণে চিরতা খেলে লিভার ও কিডনির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। লিভার ও কিডনি হলো শরীরের প্রধান সিফিকেশন অঙ্গ এবং অতিরিক্ত তিতা সেবনের ফলে এসব অঙ্গের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
তাই সংক্ষেপে বলা যায় চিরতা স্বাভাবিকভাবে একটি নিরাপদ ভেসজ কিন্তু তা সঠিক নিয়ম ও পরিমাণ মতো না খেলে পেটের সমস্যার রক্তচাপ হাঁ ডায়াবেটিসে ঝুঁকি গর্ভে সমস্যা শিশুদের অসুবিদা এবং দীর্ঘমেয়াদে লিভার ও কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করতে পারে। তাই চিরতা খাওয়ার আগে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থার দিকে খেয়াল রাখা এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে ডাক্তার বা অভিজ্ঞ বিশেষ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উপরিহার্য।

লেখকের শেষ কথা

পরিশেষে বলতে গেলে খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা অত্যন্ত বিস্তুত। আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি কিভাবে এটি দেহ থেকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে লিভার কে সুস্থ রাখে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এবং ত্বককে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়। পাশাপাশি আমরা চিরতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম কখন খাওয়া উচিত কোন বয়স বা শারীরিক অবস্থার ব্যক্তির জন্য এটি নিরাপদ নয় এবং চিরতা সম্ভব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও জেনেছ্।

আমরা চিরতা কি এবং আসল চিরতা চেনার পদ্ধতি সম্পর্কেও সংক্ষেপে আলোচনা করেছি। যাতে ভেজাল থেকে বিরত থাকা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ লিভার ডিটক্সিফিকেশন এবং হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য চিরতার ব্যবহার সহ তার কার্যকারিতা ও সঠিক নিয়্মো আমরা জেনেছি। সব মিলিয়ে এই তথ্যগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লে আপনি খালি পেটে চিরতা খাওয়ার উপকারিতা সতর্কতা এবং সঠিক ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবেন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url