টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া ৭ টি উপায়

আপনি কি টনসিল ফোলা কমানোর সহজ এবং কার্যকারী উপায় খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই এসেছেন। এই পোস্টে আমরা বিস্তারিতভাবে জানব কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে টনসিলের ব্যথা ও ফোলা কমানো যায়। 

টনসিল-ফোলা-কমানোর-ঘরোয়া-উপায়

টনসিলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু যত্নে টিপস এবং আরাম পাওয়ার জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো। তাহলে চলুন শুরু করা যাক

পেজ সূচিপত্রঃ টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়

অনেক সময় হঠাৎ করে টনসিলের ব্যথা এতটাই বেড়ে যায় যে খাওয়া-দাওয়া করতে কষ্ট হয়। কিন্তু ঘরোয়া কিছু উপায় মেনে চললে খুব সহজে এ সমস্যা কমানো সম্ভব। টনসিলের ফোলা ও ব্যথা উপশমের জন্য দৈনন্দিন জীবনে কিছু সহজ নিয়ম মানলেই আরাম পাওয়া যায়। আপনি যদি গলায় অস্বস্তি খচখচ বা ফোলা অনুভব করেন তাহলে ধরে নিতে পারেন টনসিলের সংক্রমণ হয়েছে। টনসিল সাধারণত গলার ভেতরের মাংস পিণ্ড ফুলে উঠলে বোঝা যায়। এ সময় কয়েকটি কার্যকর উপায় অবলম্বন করলে দ্রুত উপকার মিলে। যেমন
টনসিল-ফোলা-কমানোর-ঘরোয়া-৭ টি-উপায়

১. লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন
  • এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে আধা চামচ লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন।
  • তিনে অন্তত তিনবার কুলকুচি করলে গলার ব্যথা ও ফোলা কমে যাবে।
২. আদা দিয়ে চা বানিয়ে পান করুন
  • গরম পানিতে আদা ফুটিয়ে নিন
  • চাইলে এক চামচ মধু যোগ করতে পারেন
  • এটি গলার ইনফেকশন ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
৩. হলুদ ও দুধ ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে পারেন
  • এক গ্লাস দুধে সামান্য কাঁচা হলুদ মিশিয়ে পান করুন
  • এটি প্রাকৃতিক এন্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে
  • এটি করলে ফোলা ভাব ও ব্যথা দ্রুত কমে যাবে
৪. পুদিনা পাতার পানি ব্যবহার করতে পারেন
  • কিছু পুদিনা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে ছেকে নিন
  • ঠান্ডা হলে দিনে একবার পান করুন
  • ঠান্ডা জনিত টনসিলের সমস্যায় এটি বেশ কার্যকর
৫. নরম ও সহজপাচ্য খাবার খেতে পারেন
  • গরম ভাত খিচুড়ি বা সোপ খাওয়ার চেষ্টা করুন
  • শক্তবার উখো খাবার এড়িয়ে চলুন যাতে গলায় চাপ না পরে
৬. নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন
  • যতটুকু সম্ভব হয় কথা কম বলার চেষ্টা করুন
  • টিভি বা মোবাইল দেখে চিৎকার বা জোরে কথা বলা এড়িয়ে চলুন
  • বিশ্রামের শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে
৭. নিয়মিত ভাব নিবেন
  • নিয়মিত গরম পানির ভাব গলায় নিলে ভেতরের জমাট ভাব ও ব্যথা দূর হয়ে যায়
  • এটি দ্রুত আরাম দেয়
নিয়মিত এসব ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলে টনসিলের ব্যথা ও ফোলা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তবে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরী।

টনসিল বারলে কি করনীয়

টনসিল বড় হয়ে গেলে গলায় প্রচন্ড অস্বস্তি দেখা দেয়। অনেক সময় টনসিল এতটাই ফুলে যায় যে খাবার খেতে পানি গিলতে এমনকি কথা বলতে কষ্ট হয়। যদি সময় মত যত্ন না নেওয়া হয় তবে এটি আরো জটিল অবস্থায় পরিণত হতে পারে। তাই টনসিলের ব্যথা বা ফোলা দেখা দিলে ঘরে কিছু করণীয় মেনে চলা উচিত। এতে ব্যথা কমবে ফোলা কমে যাবে এবং শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় নিচে দেওয়া হল।
  • গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করুন।
  • দিনে অন্তত তিনবার গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করা খুবই উপকারী।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে অবশ্যই লবণ মেশানো গরম পানি দিয়ে গারগল করুন।
  • এতে মুখের ভেতরের জীবাণু ধ্বংস হয় এবং গলার ব্যথা অনেকটা কমে যায়।
  • নিয়মিত করলে টনসিলের ব্যথা ও ফলা উভয় দ্রুত কমতে শুরু করে।
  • আদা ও মধুর হালকা গরম চা বানিয়ে খেতে পারেন।
  • আদা প্রাকৃতিক এন্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।
  • হালকা গরম পানিতে কিছু আধা ফুটিয়ে নিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে গলায় আরাম পাওয়া যায়।
  • এটি শুধু গলার ব্যথা কমায় না বরং সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন অন্তত একবার এই চা পান করলে উপকার পাওয়া যায়।
  • গলার উপর চাপ কমাতে হবে।
  • টনসিল হলে কথা কম বলা উচিত।
  • উচ্চশরে কথা বলা বা চিৎকার করলে গলার উপর বাড়তি চাপ পড়ে এবং টনসিল আরো ফুলে যেতে পারে।
  • যতটা সম্ভব কম কথা বলুন এবং বিশ্রামে থাকুন।
  • বিশ্রামে থাকলে শরীর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
  • ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • বরফ ড্রিংক আইসক্রিম বা অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি একেবারে খাবেন না।
  • এগুলো খেলে টনসিলের ফোলা ভাব এবং ব্যথা আরো বাড়িয়ে তোলে।
  • এর পরিবর্তে গরম ভাত খিচুড়ি বা সহজপাচ্য গরম খাবার খেতে পারেন।
  • গরম ও নরম খাবার গলায় আরাম দেয় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • শরীরের অতিরিক্ত যত্ন এবং বিশ্রাম নিয়মিত নিন।
  • পর্যাপ্ত ঘুম গরম পানির ভাব নেওয়া এবং সহজ জীবন যাপন করলে টনশীল দ্রুত ভালো হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায় নিয়মিত এসব ঘরোয়া উপায় মেনে চললে টনসিলের ফোলা ভাব ও ব্যথা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা থাকলে বা জটিলতা বাড়লে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

টনসিল ফুলে গেলে কি পানি খাওয়া ভালো

টনসিল ফুললে গলা শুকিয়ে যায়। তাই পানি খাওয়া খুবই জরুরী। তবে শুধু পানি খেলে হবে না কোন ধরনের পানি খাওয়া উচিত গরম নাকি ঠান্ডা নাকি ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ মেশানো পানি এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নেই বিস্তারিত 
টনসিল-ফুলে-গেলে-কি-পানি-খাওয়া-ভালো
  • হালকা গরম পানি সবচেয়ে ভাল এতে গলা ভিজে থাকে ব্যথাও কমে টনসিলের ফোলা ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
  • বরফ বা ঠান্ডা পানি একদম খাওয়া যাবেনা কারণ ঠান্ডা পানি টনসিল আরো ফুলিয়ে দেয় গলার ব্যথা ও গলা ফোলা বাড়িয়ে তোলে।
  • প্রতিদিন নিয়মিত করে দিনে আট থেকে দশ গ্লাস পানি পান করতে হবে। এতে করে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং রোগ সংক্রমণ থাকলে অনেকটা কমে যাবে।
  • অল্প অল্প করে পানি খাওয়া ভালো যাতে গলা শুকিয়ে না যায়
  • গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করা যেতে পারে এতে করে গলার ব্যথা ও প্রদাহ কমে যাবে।
  • গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করা যায় এটি গলার ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে খুবই কার্যকর। কারণ লেবুতে ভিটামিন সি থাকে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ মিশিয়ে গারগাল করা এতে জীবাণু ধ্বংস হয় এবং ফল আর দ্রুত কমে যায়। নিয়মিত গাঁড় গোল করলে উপকার পাওয়া যায়।
তবে মনে রাখবেন টনসিলের সময় ঠান্ডা পানি একেবারেই খাওয়া যাবেনা। একটু পরপর গরম পানি পান করুন। প্রয়োজনে লেবু মধু মিশিয়ে নিন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ফুলকুচি করতে হবে। এভাবে করলে টনসিলের ব্যথা ও ফোলা অনেকটা কমে যাবে। তাই আপনাকে জানতে হবে টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়।

টনসিলের ব্যথা কতদিন থাকে

টনসিলের ব্যথা সাধারণত তিন থেকে পাঁচ দিন স্থায়ী হয়। তবে এটি নির্ভর করে আপনি কিভাবে যত্ন নিচ্ছেন তার ওপর। যদি টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিত মেনে চলেন তাহলে টনসিলের ব্যথা অনেক কমে যাবে এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকবে। নিচে কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলঃ
  • নিয়মিত বিশ্রাম নিন ও গরম পানি পান করুন।
  • নিয়মিত বিশ্রাম ও গরম পানি পান করলে টনসিলের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কোন ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া পদ্ধতিতেই আরাম পাওয়া সম্ভব হয়।
  • বেশি কথা না বলে ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলুন।
  •  বেশি কথা বললে বা ঠান্ডা কিছু খেলে টনসিলের ফোলা ও ব্যথা বেড়ে যেতে পারে। এমন ক্ষেত্রে ব্যথা ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে যেতে পারে।
  • গরম দুধ মধু আদা চা। গরম পানি নিয়মিত পান করুন গলার সমস্যা কমায় আদাছা ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ।
  •  গরম পানি গলায় শুষ্ক ভাব থাকলে দূর করে এবং গলা আরামদায় ক করে তোলে।
সব সময় মনে রাখবেন টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় মেনে নিয়মিত যত্ন ও খাবারের সচেতনতা মেনে চললে টনসিলের ব্যথা কমে তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় টনসিল অনেকটা কমে গেছে। 

টনসিলা ঘা হলে কি করনীয়

টন্সিলে ঘা হলে গিলতে ব্যথা হয় এবং খাবার খাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা যায় টনসিল ফলা বা সংক্রমণ অবহেলা করলে ঘা হয়ে যায় এই অবস্থায় দ্রুত যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চললে ব্যথা কমে এবং সুস্থ হওয়ার দ্রুত হয়। তবে গুরুতর সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী। নিচে কিছু কার্যকর ঘরোয়া করণীয় দেওয়া হলোঃ
  • কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করুন।
  • দিনে তিনবার কুলকুচি করলে জীবাণু পরিষ্কার হয় এবং ঘা দ্রুত শুকাতে শুরু করে। নিয়মিত কুলকুচি গলার ব্যথা থাকলে কমাতে সাহায্য করে।
  • আদা ও মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • হালকা গরম পানিতে আদা ফুটিয়ে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে গলার আরাম পাওয়া যায়। ঘাড়ে ব্যথা থাকলে অনেকটা কমে যায় এবং গলার শুষ্ক ভাব দূর হয়।
  • ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
  • বরফ আইসক্রিম সফট ড্রিংক ইত্যাদি খেলে ঘা আরো খারাপ হতে পারে।
  • তাই গরম ও নরম খাবার খাওয়া ভালো যেমন সব খিচুড়ি গরম দুধ ইত্যাদি খেতে পারেন।
  • বেশি কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
  • বেশি কথা বললে গলার উপর চাপ পড়লে ঘা আরো বাড়তে পারে। যতটা সম্ভব কম কথা বলুন এবং চিৎকার না করা ভালো।
নিয়মিত এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো মেনে চললে টনসিল ঘা দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং গলার ব্যথা কমে যায়। তবে দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতরো সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

টনসিল কেন ফুলে যায়

টনসিল ফুলে যাওয়ার কারণ অনেক রকম এবং যদি সময় মত সচেতন না হওয়া যায় সমস্যা দ্রুত বাড়তে পারে। টনসিল কেন হয় তা আগেই বুঝে রাখলে পরবর্তীতে এটি কমানো বা নিরাময় করা অনেক সহজ হয়। মূলত ঠান্ডা ও সংক্রমণ টনসিল ফোলার প্রধান কারণ। এছাড়াও কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে যেমনঃ
টনসিল-কেন-ফুলে-যায়
  • গলায় ঠান্ডা বা ধুলোবালির কারণে জীবানু জমে যায়।
  • বাতাসে থাকার জিবানু গলায় জমে গিয়ে টনসিল ফলা শুরু করে। বিশেষ করে শীতকালে বেশি থাকা পরিবেশে এটি বেশি হয়।
  • ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বাড়লে।
  • সংক্রমণ বেশি থাকলে টনসিল ফলে যেতে পারে শিশু বা ছোটদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়।
  • ঠান্ডা খাবার বেশি খেলে এটি হতে পারে।
  • বরফ পানি ঠান্ডা দুধ বা আইসক্রিমের মত ঠান্ডা খাবার টনসিলের ফলা বাড়িয়ে দেয়। এতে করে গলা শুষ্ক ও সংক্রমণ প্রবণ সহজে হয়ে যায়।
  • গলার যত্ন নিন।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ গরম পানি না খাওয়া বেশি কথা বলা বা বিশ্রাম না নেওয়ায় সমস্যা বেড়ে যায়। নিয়মিত গরম পানি খাওয়ার অভ্যাস রাখলে টনসিলের ফলা কমাতে সহায়তা পাওয়া যায়।
মূল কথা হলো টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় ও ঠান্ডা সংক্রমণ এবং গলার পরিচর্যার অভাব হলে টনসিল ফুলার প্রধান কারণ হতে পারে। নিয়মিত গরম পানি পান স্বাস্থ্যকর অভ্যাস এবং প্রয়োজনমতো ঘরোয়া যত্ন নিলে টনসিলের সমস্যা অনেকটা কমানো সম্ভব হয়। 

টনসিল হলে কি গলা শুকিয়ে যায়

অনেক সময় টনসিল হলে গলা শুকিয়ে যায় তখন কথা বলা খাওয়া এমনকি পানি পান করাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। গলা শুকিয়ে গেলে অসুবিধা বেড়ে যায় এবং ব্যথা অনুভূত হয়। এই অবস্থায় কিছু সহজ ঘরোয়া নিয়ম মানলে গলায় আরাম পাওয়া যায়। চলুন এক নজরে দেখে নেইঃ
  • টনসিল হলে গলার ভেতরে জলা হয়।
  • এর ফলে গলা শুকিয়ে যায় এবং খেতে বা পান করতে সমস্যা হয়।
  • পানি কম খাওয়ার কারণে গলা আরও শুকায়। দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করলে গলার শুষ্ক ভাব বেড়ে যায়।
  • দিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি খাওয়া জরুরী।
  • গরম পানিতে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন এতে গলায় আরাম পাওয়া যায় গলার ভেজা ভাব ফিরে আসে এবং ব্যথা কমে যায়।
  • পরিমাণ মতো লবণ নিয়ে পানি দিয়ে কুলকুচি করা।
  • গলা জীবাণু পরিষ্কার করার জন্য গরম পানি দিয়ে কুলকুচি করা হয় এতে করে শুষ্কভাব কমে যায় এবং গলা নরম থাকে।
  • সবসময় সতর্কতা অবলম্বন করা।
  • নিয়মিত ঘরোয়া যত্ন নেওয়া এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া গলার সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
সবসময় আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে টনসিল থাকলেও অবহেলা করা যাবে না প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যদি নিয়মিত এসব পদ্ধতি মানা হয় তাহলে গলায় শুষ্ক ভাব অনেকটা কমে আসে এবং টনসিলের সমস্যার দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

টনসিল হলে কি অপারেশন করতে হয়

আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন টনসিল হলে অবিলম্বে অপারেশন করতে হয়। কিন্তু সব সময় এমন হয় না। টনসিলের ব্যথা বা ফলা কমানোর জন্য ঘরোয়া উপায় গুলো অনেক সময় কার্যকর হয়। তবে যদি টনসিল বারবার ফুলে যায় বা সমস্যার মাত্রা বেশি হয় তখন ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দিতে পারেন। সব সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। যেমন
  • আপনার যদি টনসিল হয় এবং টনসিল বারবার ফুলে যায় তখন ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দেয়। টনসিল একবার ফোলা হলে সাধারণত অপারেশনের প্রয়োজন হয় না।
  • ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করুন।
  • গরম পানি খাওয়া মধু ব্যবহার করা এবং লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করা অনেক সময় টনসিলের ফোলা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  • গলার যত্ন নিন পর্যাপ্ত বিশ্রাম গরম পানি নরম খাবার এবং ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলা টনসিল কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
  • নিয়মিত যত্ন নিলে অপারেশনের প্রয়োজন কমে যায়। টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায়
  • গুরুতর অবস্থা হলে তখন ডাক্তার অপারেশন করার জন্য পরামর্শ দিতে পারেন।
  • যদি টনসিলের কারণে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় ঘুমে সমস্যা হয় বা সংক্রমণ বারবার হয় তখন ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দিতে পারেন।
  • তবে শেষ সিদ্ধান্ত সব সময় ডাক্তার নেবেন।
মূল কথা হলো টনসিল থাকলেই অপারেশন বাধ্যতামূলক নয় ঘরোয়া-যত্ন ও সচেতনতা অনেক সময় যথেষ্ট।  তবে সবসময় সমস্যার মাত্রা বেশি হলে ডাক্তারের সঠিক পরামর্শ নিতে হবে।

টনসিলে কি কি খাওয়া উচিত

টনসিল এর সময় কোন ধরনের খাবার খাওয়া হচ্ছে তা জানা থাকলে ব্যথা ও ফলা কমানো অনেক সহজ হয়। সবশেষে ভালো খাবারই সব রোগের নিরাময়ের উপায়। তাই টনসিলের জন্য সঠিক খাবার নির্বাচন করা জরুরী। নিচে টনসিল থাকাকালীন খাওয়া উপযুক্ত কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলোঃ
  • হালকা গরম পানি পান করা।
  • গরম পানি পান করলে গলা ভেজা থাকে এবং গলার শুষ্ক ভাব কমে যায়।
  • নিয়মিত পানি খেলে গলার আরাম বৃদ্ধি পায়।
  • মধু মিশিয়ে খাওয়া।
  • মধু গলায় আরাম দেয় ব্যথা কিছুটা কমে এবং গলা নরম থাকে।
  • আদার চা বানিয়ে খাওয়া এটি খেলে গলার প্রদাহ জনিত সমস্যা থাকলে তা কমাতে সাহায্য করে।
  • গলা পরিষ্কার থাকে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধেও অনেকটা সহায়তা করে।
  • ঠান্ডা খাবার একদমই না খাওয়া।
  • বরফ পানি আইসক্রিম সফট ড্রিংক ইত্যাদি এড়িয়ে চলা জরুরী।
  • ঠান্ডা খাবার টনসিলের ফোলা ও ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • গরম ভাত খুব ডাল ইত্যাদি নরম খাবার খাওয়া উচিত।
  • শক্ত বা রুক্ষ খাবার থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।
  • . নরম খাবার গলায় চাপ কমায় এবং খেতে সুবিধা হয়।
মূল কথা হলো টনসিল থাকলে গরম নরম ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত এবং ঠান্ডা শক্ত ও রুক্ষ খাবার সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলা ভালো। নিয়মিত এই অভ্যাস মেনে চললে টনসিলের ব্যথা ও ফলাভাব অনেকটা কমানো সম্ভব হয়। তাই টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় মেনে চলা উচিত।

টনসিল থেকে কি ক্যান্সার হয়

টনসিল থেকে যদি ক্যান্সার হয় তাহলে এটি খুবই কম সময়ের মধ্যে ঘটে না। তবে আপনি যদি কিছু সতর্কতামূলক লক্ষণ জানতে পারেন তাহলে চিন্তা কমানো সম্ভব হয়ে উঠবে। টনসিলে কোষের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবে হয় কিন্তু যদি যথাযথ যত্ন না নেওয়া হয় এবং সমস্যা অবহেলা করা হয় তখন জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই নিচের বিষয়গুলো জানা খুবই জরুরীঃ
টনসিল-থেকে-কি-ক্যান্সার-হয়
  • সাধারণত টনসিলটির ফোলা হয় তবে এটি ক্যান্সার নয়।
  • অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় টনসিল ফুলে থাকলে সাধারণ সংক্রমণ বা প্রদয়ের কারণে এটি হয়।
  • টনসিল দীর্ঘদিন ধরে ফুলে থাকলে ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করানো ভালো।
  • গলায় শক্ত গুটি থাকলে সতর্কতা থাকা জরুরী।
  • সব তো কোন গুটি ব্যথা বা অস্বাভাবিক ভাব বৃদ্ধি হলে সতর্ক হতে হবে।
  • রক্ত পড়া বা গলায় টান লাগলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
  • গলায় রক্ত দেখা দিলে বা চলাফেরার সময় অনুভব হলে অবিলম্বে সময় নষ্ট না করে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
  • ধূমপান বা মদ্যপান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • এই ধরনের অভ্যাস যদি আপনার থাকে তাহলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে তাই এগুলো থেকে দূরে থাকাই ভালো।
  • ক্যান্সার হলে সাধারণ ওষুধে কাজ করে না এক্ষেত্রে আপনাকে ডাক্তারের বিশেষ পরীক্ষা ও চিকিৎসা দিয়ে নিরাময় করতে হবে।
মূল কথা হলো সাধারণ টনসিল বা ফলা ভাব আসলে ক্যান্সার হয় না কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা রক্তপাত রক্ত গুটি বা ধূমপান মধ্যপানের মত ঝুঁকি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া অত্যন্ত জরুরী।

পাঠকের কিছু সাধারণ প্রশ্ন

১. প্রশ্নঃ টনসিল ফুলে গেলে গরম পানি খাওয়া কি ভালো?
উত্তরঃ হ্যাঁ অবশ্যই ভালো। কারণ গরম পানির গলা শুষ্ক ভাব কমায় এবং টনসিলের ফোলা ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাই ঠান্ডা পানি বা বরফ এড়িয়ে চলা উচিত।
২. প্রশ্নঃ টনসিলের ব্যথা কতদিন স্থায়ী হয়?
উত্তরঃ সাধারণত ৩-৫ দিন তবে সঠিক ঘরোয়া জত্ন  না নিলে  ৭ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
৩. প্রশ্নঃ ঘরে বসে টনসিলের ব্যথা কমানোর উপায় কি কি?
উত্তরঃ গরম পানি লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি আদা চা মধু খাওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম এবং নরম খাবার খাওয়া অত্যন্ত কার্যকর উপায়।
৪. প্রশ্নঃ টন ছিলে ঘা হলে কি করা উচিত?
উত্তরঃ লবণ পানি কুলকুচি আদা মধু মিশিয়ে খাওয়া এবং ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলা গুরুতর ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখানো জরুরী।
৫. প্রশ্নঃ টনসিল ফোলা হলে কি অপারেশন দরকার?
উত্তরঃ সব সময় নয় যদি টনসিল বারবার ফুলে যায় নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয় বা ঘুমে অসুবিধা হয় তখন ডাক্তার অপারেশনের পরামর্শ দিতে পারেন।
৬. প্রশ্নঃ টন্সিলে কি কি খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ হালকা গরম পানি মধু আদা চা নরম খাবার যেমন সব ডাল গরম ভাত শক্ত বা ঠান্ডা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
৭. প্রশ্নঃ টনসিল থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি কতটা?
উত্তরঃ সাধারণ টনসিল ফোলা ক্যান্সার নয়। তবে দীর্ঘদিন ফোলা শক্ত গুটি রক্তপাত বা ধূমপান মদ্যপানের ক্ষেত্রে পরীক্ষা করা উচিত।
৮. প্রশ্নঃ টনসিল থাকলে গলায় শুকিয়ে যায় তা কিভাবে ঠিক করা যায়?
উত্তরঃ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়া গরম পানি বা লবণ পানি কোকুচি এবং মধু মিশিয়ে পরম পানীয় খেলে গলার ভেজা ভাব ফিরে আসে।

পরিশেষে লেখকের মতামত

যদি আপনার টনসিলে অনেক বেশি ব্যথা থাকে তাহলে আপনি আমাদের দেখানো টনসিল ফোলা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো মেনে সঠিক যত্ন ও চিকিৎসা অবলম্বন করে টনসিলের ব্যথা কমাতে পারবেন। অনেকেই এই সহজ ঘরোয়া উপায় গুলো কাজে লাগিয়ে দ্রুত সুস্থ হয়েছেন। আজকের পোস্টে দেওয়া তথ্য গুলো টনসিলের ডাক্তারদের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে।

আমার মতে এই উপায় গুলো নিয়মিত মেনে চললে আপনার টনসিলের ব্যথা অনেকটা কমানো সম্ভব হবে। তাই নিজের যত্ন নিতে হবে এবং প্রয়োজনে ডাক্তারকে দেখাতে হবে। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url