আয়ারল্যান্ড বেতন কত / বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাওয়ার উপায়

আয়ারল্যান্ড বেতন কত যদি আপনি আয়ারল্যান্ডে কাজ বা অভিবাসনের সুযোগ খুঁজছেন তাহলে এটি আপনার জন্য লাইফ চেঞ্জিং তথ্য হতে পারে। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় আয়ারল্যান্ডে সব ক্যাটাগরির কাজের মান এবং বেতন অনেক বেশি যা বাংলাদেশী প্রকাশীদের কাছে এটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তোলে।

আয়ারল্যান্ড-বেতন-কত

২০২৫-২৬ অর্থবছরে আয়ারল্যান্ড সরকার তাদের দেশে ওয়ারকার শূন্য পদপূরণের জন্য আন্তর্জাতিক কর্মীদের নিয়োগ কার্যক্রম চালু করেছে। এই কারণে বাংলাদেশ থেকে অনেক প্রবাসী দেশটিতে ক্যারিয়ার গড়ার এবং অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করার সেরা গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করেছে।

পেজ সূচিপত্রঃ আয়ারল্যান্ড বেতন কত

আয়ারল্যান্ড বেতন কত

ইউরোপের অন্যতম ধনী দেশ আয়ারল্যান্ড। বর্তমানে দক্ষ শ্রমিকদের জন্য বড় চাহিদা তৈরি করেছে। দেশের বিভিন্ন সেক্টরের কাজের জন্য স্কিলড ওয়ার্কারদের নিয়োগ চলছে। এই সুযোগটি ব্যবহার করে বাংলাদেশ বা মধ্যপ্রাচ্য মিডেলিস্ট থেকে যারা কাজ করছেন তারা আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে গেলে আপনি মান্থলি প্রায় তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক তিন লাখ থেকে 5 লাখ টাকা। যদিও আয়ারল্যান্ড একটি ধনী দেশ হওয়ায় জীবনযাত্রার খরচ কিছুটা বেশি।

বিশেষ করে রাজধানী শহরে থাকার খরচ খাওয়া-দাওয়া পোশাক-আশাক পরিচ্ছদ ও বিভিন্ন ট্যাক্স মিলিয়ে মাসিক ব্যয় ভালোই থাকে। তবুও সঠিক বাজেট পরিকল্পনা করলে প্রতি মাসে দের থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত সেভ করা সম্ভব। সাধারণত আয়ারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশি টাকায় ৬০ হাজার থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার পর্যন্ত হয়। বেতন নির্ভর করে আপনার কাজের ক্যাটাগরি দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর।

যদি কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন হন তাহলে তাদের মাসিক আয় হতে পারে তিন লাখ থেকে 5 লাখ টাকা। নতুন কর্মীরা সাধারণত ৬০ হাজার টাকার উপরে ইনকাম শুরু করেন। তবে অভিজ্ঞতার সঙ্গে হাজার থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার মধ্যে হতে পারে। আয়ারল্যান্ডে বেতন মূলত নির্ভর করে কাজের ধরন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ওপর এবং সঠিক ক্যাটাগরি ও স্কেল থাকলে এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই লাভজনক সুযোগ হবে।

আয়ারল্যান্ড কোন কাজে চাহিদা বেশি

আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে আসার জন্য সব ধরনের কাজের সুযোগ নেই। দেশটি নির্দিষ্ট কিছু প্রেসার ওপর ভিসা অনুমোদন দেয় যা ক্রিতিক্যাল স্কিল অকুপেশন নামে পরিচিত। এই পেশা গুলোতে দক্ষতা থাকলে আপনিও আয়ারল্যান্ডের ওয়ার্ক ভিসার মাধ্যমে যেতে পারবেন।
  • ডক্টর
  • নার্স
  • আইডি স্পেশালিস্ট
  • প্রোগ্রামার
  • ইঞ্জিনিয়ার
  • হেলথ প্রফেশনাল
আয়ারল্যান্ড-কোন-কাজে-চাহিদা-বেশি
এই পেশাগুলার ক্ষেত্রে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও প্রফেশনাল অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
সাথে আছে কিছু টেকনিক্যাল ও প্র্যাকটিক্যাল কাজের সুযোগ যেখানে শিক্ষাগত যোগ্যতার চাহিদা নেই। তবে বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং প্রমাণপত্র থাকতে হবে। যেমন
  • ওয়েল্ডিং
  • প্লাম্বিং
  • পেইন্টিং
  • কনস্ট্রাকশন সেক্টর
আয়ারল্যান্ডে কাজের চাহিদা মূলত দুই ধরনের প্রফেশনাল স্কিলড ওয়ার্কার্স ডক্টর নার্স আইটি ইঞ্জিনিয়ার এবং টেকনিক্যাল। প্র্যাকটিশনাল স্কিল ওয়ার্কার্স ওয়েল্ডিং কন্সট্রাকশন যথাযথ দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকলে এই পেশা গুলোতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজ পাওয়া অনেক সহজ হয়।

আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

প্রত্যেক বছর আয়ারল্যান্ডে সরকার নির্দিষ্ট সময়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সাধারণত দেশে কাজের চাহিদা কম থাকলে সরকার সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন গ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়ায় অনলাইনের মাধ্যমে সহজ এবং তুলনামূলক কম খরচে আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।

আয়ারল্যান্ডে মূলত দুই ধরনের ওয়ার্ক পারমিট ভিসা রয়েছে একটি নাম জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যা যেকোনো কাজের অভিজ্ঞ ব্যক্তির জন্য প্রয়োজন হয় এটি মূলত যারা পি ইউ নাগরিক নয় তাদের কাজ করার অনুমতি দেয় তবে জেনারেল ওয়ার্ক পারমিট পেতে হলে কিছু ধাপ এবং প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়

দ্বিতীয়টি হল স্কিলড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা যা শুধুমাত্র দক্ষ এবং উচ্চ মানের আন্তর্জাতিক কর্মীদের জন্য এটি সাধারণত ক্রিটিকাল স্কেল এমপ্লয়মেন্ট এর আওতায় জারি হয় এই ভিসার আওতায় যে পেশাগুলো আসে তার মধ্যে রয়েছে ন্যাচারাল সায়েন্স আইসিটি সোশ্যাল সাইন্স শিক্ষকতা ও শিক্ষা এবং ইঞ্জিনিয়ারিং আয়ারল্যান্ডে ভিসা পেতে হলে আপনার কাজের ধরন এবং দক্ষতা অনুযায়ী সঠিক হিসাবে মেনে নিতে হবে জেনারেল ওয়ার্ক বারমিট অভিজ্ঞ যেকোনো কর্মের জন্য আর স্কিল্ড ওয়ার্ক পারমিট দক্ষ এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন প্রফেশনালদের জন্য

আয়ারল্যান্ড কাজের ভিসা খরচ কত

আয়ারল্যান্ডে কাজের সুযোগ ও বেতন কত তা জানা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার খরচ সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। বাংলাদেশের অনেকের স্বপ্ন ইউরোপের কোন একটি দেশে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা। ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় আয়ারল্যান্ডে কাজের মান সুযোগ এবং জীবনযাত্রার মান অনেক ভালো। এই কারণে হাজারো বাংলাদেশি আয়ারল্যান্ডে কাজের সুযোগ খুঁজতে আগ্রহী। সাধারণত আয়ারল্যান্ডে যেতে হলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা থাকা অবশ্যই জরুরী।

ভিসা প্রসেসিং শুরু করার আগে খরচ সম্পর্কে ধারনা নেওয়া জরুরী। সময়ের সাথে সাথে ডলারের রেট পরিবর্তনের কারণে ভিসার খরচ কম বেশি হতে পারে। সরাসরি এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করলে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়। আর যদি কোন এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করেন তবে খরচ কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। এজন্য অনেকেই আয়ারল্যান্ডে কাজের ভিসার খরচ জানার জন্য অনলাইনে সন্ধান করে থাকেন।

বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসার জন্য ভারতের এম্বাসির মাধ্যমে আবেদন করলে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা খরচ হতে পারে। অন্যদিকে এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে খরচ প্রাই ৬ থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। মূলত এমবাসির মাধ্যমে আবেদন করলে খরচ কিছুটা কম হয় আর এজেন্সি ব্যবহার করলে প্রক্রিয়ার সঙ্গে অতিরিক্ত ফি যুক্ত হয় খরচ বেশি হয়। বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাওয়ার জন্য মূলত দুটি পাত্র রয়েছে। আপনি চাইলে সরাসরি মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন যা কম খরচে এবং সরাসরি সরকারিভাবে হয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশে বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি আছে যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠায়। এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করলে প্রক্রিয়াটি কিছুটা সহজ হয় তবে খরচ কিছুটা বেশি হয়। ভিসা অনুমোদনের পর শুধু বিমানের টিকিট কাটলে সহজে আয়ারল্যান্ডযাত্রা সম্ভব। আয়ারল্যান্ডের কাজের ভিসার খরচ আবেদন প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার উপায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা থাকা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করলে আপনি কম খরচে এবং নিরাপদ ভাবে আয়ারল্যান্ডে যেতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাওয়ার উপায়

বর্তমানে যারা আয়ারল্যান্ড ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বা কাজের ভিসায় যেতে চান তাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না কিভাবে সহজ ভাবে আয়ারল্যান্ড পৌঁছানো যায়। তাই আয়ারল্যান্ডে বেতন কত তা জানার যেমন জরুরী ঠিক তেমনি বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাওয়ার উপায় গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা খুবই জরুরী। সাধারণত আয়ারল্যান্ডে কাজ করতে চাইলে ওয়ারক পারমিট ভিসা থাকা বাধ্যতামূলক। ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে হলে সরকারি সার্কুলার অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ভিসা প্রসেসিং সম্পন্ন হলে শুধু বিমানের টিকিট কাটলে আয়ারল্যান্ডে যাওয়া সম্ভব।

আপনি চাইলে সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারেন। সরকারি এজেন্সির মাধ্যমে গেলে প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয় এবং খরচ তোলারামুলকভাবে কম হয়। এছাড়া বাংলাদেশে অনেক নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সি আছে যারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠায়। এজেন্সির সাহায্যে আবেদন করলে প্রক্রিয়াটি সহজ হয় তবে খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে।

আয়ারল্যান্ড যেতে কোন কোন কাগজপত্র লাগে

আয়ারল্যান্ড যাওয়া অনেকেরই স্বপ্ন কারণ ইউরোপের যে দেশগুলোতে সুযোগ সুবিধা বেশি তার মধ্যে অন্যতম দেশ হলো আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের মূলত দুই ধরনের ভিসা আছে একটি হল স্কিল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা এবং অন্যটি হলো জেনারেল স্কুল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা। ক্রিটিক্যাল স্কিল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা সবাই পেতে পারেনা শুধুমাত্র যারা কাজে অত্যন্ত দক্ষ অর্থাৎ যাদের বিশেষ যোগ্যতা বা দক্ষতা আছে তারাই এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।

অন্যদিকে জেনারেল এমপ্লয়মেন্ট ভিসা তাদের জন্য যারা মোটামুটি কোন কাজ করতে পারে বা একটি কাজে ন্যূনতম দক্ষতা আছে। এই দুই ধরনের বিসর্জন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র লাগবে সেগুলো হল
  1. জব অফার লেটারঃ যে কোম্পানি আপনাকে আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যাচ্ছে তাদের থেকে অবশ্যই একটি জব অফার লেটার থাকতে হবে। এটি হলো ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
  2. পাসপোর্টঃ পাসপোর্ট অবশ্যই ন্যূনতম ৬ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে। এছাড়া পাসপোর্টে পাঁচ থেকে সাত পৃষ্টা খালি থাকা উচিত।
  3. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদঃ আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ সরবরাহ করতে হবে।
  4. কাজের অভিজ্ঞতা সনদঃ যদি আপনার পূর্বের কাজের অভিজ্ঞতা থাকে যা তার প্রমাণ হিসেবে অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিতে হবে।
  5. স্বাস্থ্য বীমাঃ আয়ারল্যান্ডে থাকা অবস্থায় কোন জরুরী চিকিৎসা খরচের জন্য হেলথ ইন্সুরেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
  6. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটঃ আপনি কোন অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত না থাকেন তা প্রমাণ করার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দরকার।
  7. ব্যাংক স্টেটমেন্টঃ ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে যাতে আপনার আর্থিক সক্ষমতা প্রদর্শিত হয়।

বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে

আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার আগে জানা গুরুত্বপূর্ণ শুধু আয়ারল্যান্ড বেতন কত নয় বরং বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যেতে মোট কত টাকা খরচ হবে তারও একটি স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরী। বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে আসতে হলে আপনাকে হায়ার স্কিল ওয়ার্ক পারমিটে আবেদন করতে হবে। এই আবেদন শুধুমাত্র এক হাজার ইউরো। একইভাবে যদি আপনি জেনারেল ওয়ার্কার ক্যাটাগরিতে আবেদন করেন সেখানে ফ্রী একই অর্থাৎ ১০০০ ইউরো। মনে রাখবেন এটি শুধুমাত্র আবেদন ফি।

সর্বমোট বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার জন্য আপনার খরচ পূর্বে প্রায় ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। তবে যদি আপনি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন এজেন্সি বা দালানের মাধ্যমে ভিসা প্রসেসিং করান তাহলে খরচ বেড়ে যাবে। এমন ক্ষেত্রে মোট খরচ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১০ লাখ টাকা। যদি কোনো কারণে আপনার আবেদন ব্যর্থ হয় তবুও আপনি প্রায় ৯০% আবেদন ফ্রি ফেরত পাবেন অর্থাৎ প্রায় 900 ইউরো ফেরত পাওয়া সম্ভব।

আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব কিভাবে পাবেন

আয়ারল্যান্ডে যেতে চাইলে শুধু আয়ারল্যান্ড বেতন কত জানা যথেষ্ট নয় বরং আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব কিভাবে পাবেন সেটাও জানা খুবই জরুরী। আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্ট কে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পাসপোর্ট গুলোর মধ্যে একটি হিসেবে ধরা হয়। এই পাসপোর্ট পাওয়া মানে আপনার জন্য ভিসা ছাড়া অনেক দেশে ভ্রমণের সুযোগ খুলে যাবে। আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্ট পাওয়ার মাধ্যমে আপনি ১২৭ টি দেশে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে 142 টি দেশ যেখানে আপনি সম্পূর্ণ ভিসা ফ্রি এক্সপ্রেস পাবেন এবং ৩৪ টি দেশে আপনি ভিসা অন এরাইভাল সুবিধা পাবেন।

এই সুবিধা গুলো একদিকে যেমন আপনাকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বাধীন ভ্রমণের সুযোগ দেয় অন্যদিকে ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা দেয়। আয়ারল্যান্ডের পাসপোর্ট বিশ্বের পাসপোর্ট রেংকিংয়ের পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এটি সত্যি খুবই মর্যাদাপূর্ণ যারা আয়ারল্যান্ড বৈধভাবে বসবাস করতে চান এবং নাগরিকত্ব নিতে চান তাদের জন্য ন্যাচারালাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পাসপোর্ট পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে হয়।
আয়ারল্যান্ডের-নাগরিকত্ব
নাগরিকত্ব পেতে হলে আপনাকে এই দেশের পাঁচ বছর বৈধভাবে বসবাস করতে হবে। এই পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত এক বছর টানা আয়ারল্যান্ডে থাকতে হবে। অর্থাৎ এই এক বছরের মধ্যে দেশের বাইরে কোন সফর করা যাবে না। এটি অবশ্যই পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। এই শর্ত পূরণ করলে আপনি ন্যাচারালাইজেশনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যদি কেউ আইরিশ নাগরিকের সঙ্গে বিবাহিত হন তাহলে এই প্রক্রিয়ার সময়সীমা ছোট হয়।

বিবাহিত ব্যক্তি তিন বছর পর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে এই সময়ে আপনাকে দেশের ভিতরে থাকতে হবে এবং আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় উপস্থিতির বজায় রাখতে হবে। এছাড়া প্রক্রিয়ার সময় আবেদনকারীর প্রতিবছর ১৫০ পয়েন্টে স্কুল বা অফিসে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। এই পয়েন্ট এবং উপস্থিতি দেশের নাগরিকত্ব কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করা হয়। আপনি চাইলে আপনার রেসিডেন্সি ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে হিসাব করতে পারেন। বর্তমানে আপনি ন্যাচারালাইজেশনের জন্য যোগ্য কিনা।

এটি একটি কার্যকর টুল যা আপনার উপস্থিতি বসবাসের সময় এবং অন্যান্য শর্ত মিলিয়ে দেখায়। এইভাবে আয়ারল্যান্ডে নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে আপনি শুধু আইরিশ পাসপোর্ট পাবেন না বরং স্থায়ীভাবে বসবাসের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ সুবিধা কাজের সুযোগ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশে প্রবেশাধিকার পাবেন। নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আপনি দেশে ও বিদেশে অনেক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন যা সাধারণ ভিসা বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্সে সম্ভব হয় না।

আয়ারল্যান্ড জব অফার পাওয়ার প্রক্রিয়া

আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাওয়া যায় এবং কোন ধাপে জব অফার লেটার বা জব কন্ট্রাক্ট প্রাপ্ত হয় এটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আয়ারল্যান্ডের বিদেশী শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইকোনমিক এরিয়ার বাইরে থাকা দেশগুলো থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আবেদন করে। তবে সরাসরি আয়ারল্যান্ডে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া সম্ভব নয়। বিদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট পেতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে একটি বৈধ জব অফার লেটার বা জব কন্ট্রাক্ট।

এখন প্রশ্ন হলো এই জব অফার লেটার বা কন্ট্রাক্ট কিভাবে পাওয়া যাবে? এর জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে প্রথমত আপনি আপনার নিকট আত্মীয় বা বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে খোঁজ নিতে পারেন যারা আয়ারল্যান্ডে বসবাস করছে বা কাজ করছে। তারা আপনাকে সম্ভাব্য নিয়োগ কারী সংস্থার সাথে সংযুক্ত করতে পারবে।

দ্বিতীয়ত আপনি অনলাইনে বিভিন্ন জব পোর্টাল ব্যবহার করতে পারেন। আয়ারল্যান্ডের চাকরি দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত কভার লেটার ও রেজমে বা সিভি দেখে প্রার্থী নির্বাচন করে। যদি তারা আপনার প্রোফাইল ও অভিজ্ঞতাকে প্রযুক্ত মনে করেন তখন তারা আপনাকে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকতে পারে। ইন্টারভিউ উত্তীর্ণ হলে এবং যদি আপনি তাদের প্রয়োজনীয় মানদন্ড পূরণ করেন তখন তারা আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সমস্ত প্রয়োজনের কাগজপত্র চাইবে।

এরপর নিয়োগ কারী প্রতিষ্ঠানে আপনার জন্য আয়ারল্যান্ডের ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারপ্রাইজ ট্রেড এন্ড ইমপ্লয়মেন্ট এর কাছ থেকে ওয়ার পার্মেন্টের জন্য আবেদন করবে। এই প্রক্রিয়ায় সংস্থা আপনার সব তথ্য যাচাই করবে এবং নিশ্চিত করবে যে আপনি নির্দিষ্ট পেশায় যোগ্য। আপনার নামের উপর যখন ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা হবে তখন কোম্পানি আপনাকে জব অফার লেটার এবং ওয়ার্ক পারমিটের কপি প্রদান করবে। এই কপি ছাড়া আপনি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

সুতরাং আয়ারল্যান্ডে জব অফার পাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি মূলত তিনটি ধাপে বিভক্ত। প্রথম ধাপ হল প্রার্থী খোঁজা এবং আবেদন করা। দ্বিতীয় অধ্যাপক ইন্টারভিউ এবং কাগজপত্র যাচাই এবং তৃতীয় ধাপ হল DETE এর মাধ্যমে অফিশিয়াল ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা। এই প্রতিক্রিয়া মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে শুধুমাত্র যোগ্য প্রার্থী আয়ারল্যান্ডে বৈধভাবে কাজের সুযোগ পাবে।

আয়ারল্যান্ডের টাকার মান কত

আয়ারল্যান্ডের দেশীয় মুদ্রা হলো ইউরো। ইউরোর মান বাংলাদেশি টাকার সাথে মুদ্রার বাজার ভিত্তিক রেট অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে বাজারে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে আনুমানিক রূপে এক ইউরো সমান ১২০ থেকে ১২৫ বাংলাদেশি টাকা। তবে মনে রাখবেন রেট নিয়মিত পরিবর্তিত হয়। র‍্যাঙ্ক বা মানি এক্সচেঞ্জে মুদ্রা বিনিময়ের সময় কিছু পার্থক্য থাকতে পারে।

আয়ারল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে

বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার সময় কাল মূলত ভিসার প্রক্রিয়া এবং বিমান যাত্রা ও উপর নির্ভর করে। সাধারণত ধাপে ধাপে এটি এভাবে হিসাব করা যায়।

প্রথম ধাপ হল ওয়ার্ক পারমিট বা স্কিলড জেনারেল ওয়ার্ক ভিসার আবেদন। বিদেশ থেকে আবেদন করলে ওয়ার্ক পারমিটের প্রক্রিয়া সাধারণত তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগে। যদি সমস্ত কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকে এবং আবেদন সঠিকভাবে করা হয় তাহলে এটি কমপক্ষে তিন মাসের মধ্যে শেষ হতে পারে।
আয়ারল্যান্ড-যেতে-কত-সময়-লাগে
দ্বিতীয় ধাপ হল এম্বাসি বা ভীএফএস গ্লোবাল এর মাধ্যমে ভিসা আবেদন এবং প্রক্রিয়াকরণ। এই ধাপেও আনুমানিক এক থেকে দুই মাস সময় লাগতে পারে। তাই ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিসা উভয় ধাপ মিলিয়ে মোট সময় প্রায় ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।

শেষ ধাপ হলে বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ডের বিমান যাত্রা। ঢাকা থেকে ডাবলিন যাওয়ার সরাসরি ফ্লাইট নেই সাধারণত সংযুক্ত ফ্লাইট যেমন মধ্যপ্রাচ্য উপায় ইউরোপের কোন হাবের মাধ্যমে ব্যবহার করতে হয়। ফ্লাইটের সময় সর্বাধিক 10 থেকে 12 ঘন্টা লাগতে পারে। সংক্ষেপে বলতে গেলে বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড পৌঁছাতে সব প্রক্রিয়া মিলে চার থেকে ছয় মাস লাগতে পারে এবং বিমান যাত্রা ১০ থেকে ১২ ঘন্টা লাগতে পারে।

লেখকের শেষ কথা

আয়ারল্যান্ড একটি ইংলিশ ভাসি দেশ যেখানে উচ্চ আয়ে আধুনিক এবং বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি বিরাজমান। ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র হিসেবে এটি বৈদেশিক বিনয়ক প্রযুক্তি খাট এবং রপ্তানি উপর নির্ভরশীল। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে আয়ারল্যান্ডকে ইউরোপের শ্রেষ্ঠ কর্মসংস্থান ও বসবাসযোগ্য দেশগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটিতে প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশিরা বসবাস করছে। রাজধানীর পাশাপাশি কর গ্যালিলিও অঞ্চলে বড় একটি বাংলাদেশি কমিউনিটি গড়ে উঠেছে।

সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে প্রবাসী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যার নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে। রেস্টুরেন্ট এবং খাদ্য খাতের ব্যবসায় বাংলাদেশিরা আয়ারল্যান্ড সুনাম অর্জন করছে। পাশাপাশি অন্যান্য খাতে প্রবাসীরা উদ্ভাবন ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সাফল্য তুলে ধরেছে। আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশীরা দিন দিন নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে চলেছে যা কমিউনিটির বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অবদান প্রতিফলিত হচ্ছে। উন্নত জীবন যাপন সন্তানদের জন্য ভালো শিক্ষা এবং নিরাপদ পরিবেশের কারণে আয়ারল্যান্ড এখন বহু বাংলাদেশের জন্য স্বপ্নের দেশ। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;

comment url