মালটা যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫ / মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পূর্ণ গাইড
মালটা যেতে কত টাকা লাগে। বর্তমানে ইউরোপে বাংলাদেশীদের জন্য সবচেয়ে সহজ পণ্য দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো মালটা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটি বাংলাদেশ কর্মীদের জন্য কাজের ভিসার প্রক্রিয়া আগের তুলনায় অনেক সহজ করে দিয়েছে। কারণ এখানে বিভিন্ন সেক্টর ও ক্যাটাগরিতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
যদি আপনি মাল্টার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে আগ্রহী হন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার
জন্যই। এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে মালটাই কাজ করার যোগ্যতা প্রয়োজনীয়
কাগজপত্র মোট খরচ প্রক্রিয়ার সময়কাল এবং কিভাবে আবেদন করতে হয়। সবকিছু ধাপে
ধাপে প্রতিটি ধাপে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
পেজ সূচি পত্রঃ মালটা যেতে কত টাকা লাগে
- মালটা যেতে কত টাকা লাগে
- মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- মালটা যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
- মালটা সর্বনিম্ন বেতন কত
- মালটা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
- মালটায় কোন কোন কাজে চাহিদা বেশি
- মালটা আবেদন করার নিয়ম
- মালটা যাওয়ার সেরা সুযোগ কোনটি
- মালটা স্কিল পাস সার্টিফিকেট কিভাবে পাবেন
- বাংলাদেশ থেকে মালটা যাওয়ার উপায়
- মালটা যেতে কত সময় লাগে
- লেখকের শেষ কথা
মালটা যেতে কত টাকা লাগে
মালটা যেতে কত টাকা লাগে এটি নির্ভর করে আপনি কোন প্রক্রিয়ায় যাচ্ছেন তার ওপর।
যদি আপনি সরকারি ব্যবস্থায় যেতে চান তাহলে আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে
পারে। আর যদি বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে যান তাহলে খরচ কিছুটা বেশি হয়। সাধারণত
১২ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে। এর বাইরে আরো কিছু অতিরিক্ত খরচ থাকে যেমন মেডিকেল
পরীক্ষার বাসা ভাড়া বা টিকিটের খরচ ইত্যাদি।
মালটা যাওয়ার মূলত দুটি উপায় আছে একটি হল এজেন্সির মাধ্যমে আরেকটি হলো নিজের
উদ্যোগে কোম্পানির মাধ্যমে সরাসরি আবেদন করে। আপনি যদি নিজে কোম্পানির মাধ্যমে
যেতে চান তাহলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি সঙ্গে যোগাযোগ করে চাকরির চুক্তি কন্ট্রাক্ট
করতে হবে। কোম্পানি আপনার আবেদন গ্রহণ করলে তারা আপনার ভিসা প্রসেসিং শুরু করবে
এবং আপনাকে মালটাই নিয়ে যেতে পারবে।
অন্যদিকে এজেন্সির মাধ্যমে গেলে নির্দিষ্ট কোন খরচ নির্ধারণ করা কঠিন কারণ
প্রতিটি এজেন্সির ফি ও সেবা ভিন্ন হয়। কিন্তু যদি আপনি সরাসরি কোম্পানির মাধ্যমে
যান তাহলে খরচ তোলনামূলকভাবে স্পষ্ট ও নির্ধারিত থাকে। সাধারণভাবে বলতে গেলে
কোম্পানির মাধ্যমে আবেদন করলে প্রথমে আপনার দিতে হবে ওয়ার্ক পারমিট ফি ৬০০ ইউরো।
এরপর ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন পেলে কোম্পানি আপনাকে প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টস
বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। তবে অবসানের জন্য প্রাযক.৩০০ থেকে ৪০০ ইউরো খরচ হতে
পারে।
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া এম্বাসিডার ডিএসএস সেন্টারে ২৫০ ইউরো আর ভিসা ফি হিসেবে
প্রায় ১৫০ ইউরো দিতে হবে। সবশেষে ডকুমেন্ট তৈরি ও অন্যান্য প্রসেসিং এ আরও ১৫০
থেকে ২০০ ইউরো পর্যন্ত খরচ হতে পারে। সব মিলিয়ে মালটাই সরাসরি কোম্পানির মাধ্যমে
যেতে মোট খরচ দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৬০০ থেকে ১৭০০ ইউরো যা বাংলাদেশি টাকায়
আনুমানিক ২ লক্ষ টাকারও কিছু বেশি।
মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
মালটায় যেতে চাইলে শুধু কত টাকা লাগবে তা জানলেই হবে না বরং ওয়ার্ক ভিসার
আবেদন প্রক্রিয়াটা জানা সমান জরুরী। ২০২৫ সালে মালটা সরকার বিদেশী কর্মীদের
জন্য নতুনভাবে বিভিন্ন সেক্টরে নিয়োগের পরিকল্পনা করেছে। বর্তমানে নির্মাণ,
হসপিটালিটি,ফ্যাক্টরি, ডেলিভারি, সার্ভিস এবং কৃষি খাতে প্রচুর কর্মসংস্থান
তৈরি হয়েছে। বিদেশি শ্রমিকদের জন্য মাল্টার সরকার ভিসা প্রক্রিয়া আরো সহজ ও
দ্রুত করার চেষ্টা করেছে।
আগে যেখানে ভিসা প্রসেস শেষ হতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগতো এখন তা কমে এসে তিন
থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হচ্ছে। ২০২৫ সালের মালটাই পুরাই ১৫ হাজার নতুন
কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে যা বিদেশি কর্মীদের জন্য একটি বড় সুযোগ। বর্তমানে
মাল্টার কোম্পানিগুলোর জন্য কিছু নতুন ও কঠোর নিয়ম চালু হয়েছে যাতে কেউ
প্রতারণা শিকার না হয়। বাংলাদেশ থেকে মালটাই কাজের উদ্দেশ্যে যেতে হলে আপনাকে
প্রথমে একটি চাকরির অফার পেতে হবে যা মালটার কোন কোম্পানি বা এজেন্সির মাধ্যমে
পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে রিঙ্কু টি ম এজেন্সিটি সরকার
অনুমোদিত এবং বৈধভাবে নিয়োগ দিচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে
চাকরির অফার পাওয়ার পর সেই কোম্পানির আপনার পক্ষে ওয়ার্ক পারমিট এর জন্য
আবেদন করবে। কোম্পানি থেকে অনুমোদন পাওয়ার পরেই আপনি মালটার ওয়ার্ক অফিসের
আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ মালটাই বৈধভাবে কাজ করতে হলে প্রথমে একটি
নির্ভরযোগ্য কোম্পানি বা অনুমোদিত এজেন্সি সঙ্গে যোগাযোগ করে ওয়ার্ক পারমিট
নিশ্চিত করতে হবে। এভাবেই মাল্টার ওয়ার্ক ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
মালটা যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে
মালটাই কাজের জন্য যেতে হলে প্রথমে আপনার নিয়োগকর্তাকে আপনার হয়ে ওয়ার্ক
পারমিটের জন্য আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন পাওয়ার পর আপনি
মালটার দূতাবাসে বা অনলাইনে পোর্টালের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে পারবেন।
বাংলাদেশ থেকে আবেদন করার ক্ষেত্রে এটি সাধারণত ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে
সম্পন্ন হয়। ভিসা আবেদন করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র অবশ্যই
প্রস্তুত রাখতে হবে। সেগুলো হল
- বৈধ পাসপোর্ট পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনতম ছয় মাস থাকতে হবে।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট আপনার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রমাণপত্র থাকতে হবে।
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ আপনি যে যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে যাচ্ছেন তার সনদ প্রয়োজন হবে।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি সাম্প্রতিক তোলা ছবি জমা দিতে হবে।
- জীবন বৃত্তান্ত সিভি আপনার অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করতে হবে।
- ভিসা আবেদন ফরম মালটার ভিসার জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে।
- কাজের অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট যদি থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট সেক্টরের অভিজ্ঞতার প্রমাণ দিতে হবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট দূতাবাস চাইলে সাম্প্রতিক ব্যাংক লেনদেনের বিবরণ দিতে হবে।
- অফার লেটার নিয়োগ কর্তা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত চাকরির অফার লেটার জমা দিতে হবে।
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এটির বাধ্যতামূলক যাতে আপনার কোন অপরাধমূলক রেকর্ড না থাকে তার প্রমাণ করে।
মালটা যেতে কত টাকা লাগে এই সমস্ত কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রস্তুত থাকলে
মাল্টার ওয়ার্ক ভিসা প্রক্রিয়া অনেক সহজ এবং দ্রুত সম্পন্ন হয়।
মালটা সর্বনিম্ন বেতন কত
প্রথমে জেনে রাখা দরকার ইউরোপের প্রায় সব দেশেই বেতন ঘন্টা ভিত্তিক নির্ধারণ
করা হয় মালটাও এর ব্যতিক্রম নয়। মালটাই সাধারণত প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে কাজ
করতে হয় এবং এই হিসেবে ঘন্টা প্রতি গড় বেতন প্রাই .৭০০ ইউরো দিয়ে শুরু
হয়। বেশিরভাগ কোম্পানি সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজের সুযোগ দেয় তবে কিছু
কোম্পানিতে শনিবারেও ডিউটি করতে হতে পারে। এক সপ্তাহে গড়ে ১৬০ ঘণ্টা কাজ
করলে একজন কর্মী মাস শেষে প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ ইউরো পর্যন্ত বেতন পান। তবে
এর মধ্যে থেকে কর্মীদের বাসা ভাড়া ও দৈনন্দিন খরচ বহন করতে হয়।
মালটাই অতিরিক্ত কাজের ওভারটাইম সুযোগ রয়েছে যা করলে মাসিক আয় এর পরিমাণ
আরো বাড়ে। শুরুতে সাধারণত এই বেতন দেয়া হলো অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পেলে
বেতনও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অতএব মালটাই সফলভাবে কাজ করতে চাইলে সেখানে
যাওয়ার আগে নিজেকে দক্ষ করে তোলা ও নির্দিষ্ট পেশায় পারদর্শী হওয়া অত্যন্ত
জরুরী।
মালটা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়
মালটায় যেতে চাইলে প্রথমে জানার দরকার কিভাবে সহজে মাল্টার ভিসা পাওয়া যায়
এবং পাশাপাশি কত টাকা খরচ হতে পারে বা মালটা যেতে কত টাকা লাগে। বর্তমানে
মালটা সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও শর্ত চালু করেছে।
যারা মালটা যেতে ইচ্ছুক তাদের অবশ্যই এই নিয়মগুলো ভালোভাবে বুঝে আবেদন করতে
হবে।
মালটাই কাজের জন্য এখন স্কিল সার্টিফিকেট থাকা অত্যন্ত জরুরী অর্থাৎ আপনি যে
কাজের জন্য যেতে চান সেই কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে দক্ষ হতে হবে। যারা নিজেদের
পেশায় দক্ষতা প্রমাণ করতে পারেন তাদের জন্য মালটাই যাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি
হয়ে যায়। যদি আপনি জেনারেল ক্যাটাগরিতে মালটা যেতে চান তাহলে মালটা
কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত স্কিল বা ট্রেনিং সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে।
নির্ধারিত লিংকের মাধ্যমে এই সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করা যায়। সেখান থেকে
নির্দিষ্ট পেশার ওপর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে অফিশিয়াল স্বীকৃতি স্কিল
সার্টিফিকেট পাওয়া সম্ভব।
এই সার্টিফিকেট থাকলেই আপনার আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং ভিসা পাওয়ার
সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। মালটা একটি ইংলিশ স্পিকিং কান্ট্রি তাই ইংরেজি
জানা ও বোঝার সক্ষমতা থাকলে এটি বড় একটি সুবিধা হিসেবে কাজ করবে। আপনি চাইলে
ইংরেজিতে দক্ষতা প্রমাণের জন্য ইংলিশ সার্টিফিকেট নিতে পারেন। সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো অনলাইনে মালটা সরকারের নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে
রেজিস্ট্রেশন করতে হবে আপনি কোন পেশায় কাজ করতে চান সেটি উল্লেখ করে
সংশ্লিষ্ট ইস্কিল ট্রেনিং বা কোর্স সম্পূর্ণ করতে হবে। এরপর সেই সার্টিফিকেট
সহ আবেদন করলে আপনার মালটার ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় 99% পর্যন্ত বৃদ্ধি
পায়।
অতএব মালটা যেতে হলে আগে নিজের দক্ষতা তৈরি করুন স্ক্রীল সার্টিফিকেট সংগ্রহ
করুন এবং তারপর সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করুন তাহলেই মালটা যাওয়ার পথ অনেক সহজ
হয়ে যাবে।
মালটায় কোন কোন কাজে চাহিদা বেশি
মালটা যেতে চাইলে শুধু খরচ নয় বরং কোন কোন সেক্টরে কাজের চাহিদা বেশি তা
জানা খুবই জরুরী। বর্তমানে মালটা এমন একটি দেশ যেখানে ইউরোপের অন্যান্য দেশের
তুলনায় বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য সুযোগ অনেক বেশি। সবচেয়ে চাহিদা এখন
নার্সিং পেশায়। বিশেষ করে যারা বিএসসি নার্সিং ডিগ্রিধারী তাদের জন্য মালটা
হতে পারে ইউরোপে যাওয়ার সেরা ও সবচেয়ে সহজ গন্তব্য। মালটার স্বাস্থ্য খাতে
নার্সদের বেতন আকর্ষণীয় এবং বর্তমানে প্রচুর পদ খালি রয়েছে। সবচেয়ে ভালো
দিক হলো এই ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে স্কিল পাস সার্টিফিকেট প্রয়োজন নেই
অর্থাৎ যোগ্যতা ইংরেজি দক্ষতা থাকলে সরাসরি আবেদন করা যায়।
যেহেতু নার্সরা সাধারণত ইংরেজি ভাষায় দক্ষ হন তাই মালটাই তাদের কাজ খুঁজে
নেওয়া ও মানিয়ে নেওয়া তুলনামূলকভাবে সহজ হয়। যারা বাংলাদেশে বা দেশের
বাইরে নার্সিং প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তারা এখন মালটার ভিসার জন্য আবেদন করে
দেখতে পারেন। বর্তমানে মালটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের ৩২ টি দেশের মধ্যে একটি
দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। এখানে ভিসা অনুমোদনের আরো বেশ
ভালো প্রায় 65 থেকে 70% আবেদনকারী সফলভাবে ভিসা পান এবং সাধারণত দেড় থেকে
দুই মাসের মধ্যে বিশা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
নার্সিং ছাড়া মালটায় আরো অনেক সেক্টরে কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে যেমন
- হোটেল রেস্টুরেন্ট
- সুপার মার্কেট
- টুরিস্ট সব
- কনস্ট্রাকশন
- কৃষি কাজ
- এবং ডেলিভারি সার্ভিস সেন্টার
বিশেষ ক।। সেফ ও ওয়েটার পদের চাহিদা মাল্টায় অনেক বেশি। কারণ এটি একটি
পর্যটন নির্ভর দেশ এবং সারা বছরই এখানে বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে। মালটাই
ইংরেজি ভাষার ব্যাপক ব্যবহার থাকায় ইংরেজিতে পারদর্শী কর্মীরা এখানে সহজেই
চাকরি ও যোগাযোগের সুযোগ পান। এছাড়াও মালটাই কাজ শুরু করার পর দ্রুতই
টিআরসি বা অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়া যায় যা ভবিষ্যতে স্থায়ীভাবে
থাকার পথকেও সহজ করে তোলে।
মালটা আবেদন করার নিয়ম
মালটাই কাজের জন্য আবেদন করতে কিছু নির্ভরযোগ্য সাইড রয়েছে যেমন
keepmeposted.com.mt
careersimalta.com
jobsplus.govmt। এই
ওয়েবসাইটগুলোতে গিয়ে প্রোফাইল তৈরি করে আবেদন করা যায়। একটি গুরুত্বপূর্ণ
দিক হলো সিভি এবং কভার লেটার এগুলো আপনার আবেদনের প্রথম ইম্প্রেশন হিসেবে কাজ
করে। কোম্পানি বা কোম্পানির হেড যখন আপনার সিভি দেখবে তখন সেটি হাই কোয়ালিটি
হওয়া উচিত। সেজন্য আপনার সিভি অবশ্যই ইউরোপিয়ান ফরমেটে তৈরি করা উচিত।
সিভি এবং কভার লেটার অবশ্যই ইংরেজিতে স্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক হতে হবে। এতে
আপনাকে উল্লেখ করতে হবে কেন আপনি সেই নির্দিষ্ট যবটি করতে চান এবং আপনি
কিভাবে সেই জবে দক্ষতা অর্জন করবেন। যদি সিবি এইভাবে প্রস্তুত করা হয় তাহলে
মালটার কোম্পানি থেকে ভালো রেসপন্স পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ নেদারল্যান্ডস যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫
যদি কোন মালটার কোম্পানি আপনাকে চাকরি দেয় তারা আপনাকে জব অফার লেটার
এমপ্লয়মেন্ট কন্টাক্ট এবং স্পনসারশিপ লেটার প্রদান করবে। এই ডকুমেন্টগুলো
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং সঠিকভাবে সিভি ও
কভার লেটার তৈরি করা এবং নির্ভরযোগ্য জব সাইট থেকে আবেদন করা মালটাই সফলভাবে
চাকরি পাওয়ার প্রথম ধাপ।
মালটা যাওয়ার সেরা সুযোগ কোনটি
মালটা যেতে চাইলে শুধু খরচ জানা নয় বরং কোন পথে যাওয়া সবচেয়ে সুবিধা জনক
তা জানা সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ থেকে মালটা ইউরোপের একটি সেনজেন
কান্ট্রি হিসেবে পরিচিত যা ইউরোপের ঢোকার একটি গুরুত্বপূর্ণ গেটও বলতে পারেন।
বর্তমানে ইউরোপে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য মালটা একটি অন্যতম সেরা গন্তব্য হতে
পারে।
মালটায় যাওয়ার জন্য মূলত দুই ধরনের ভিসা রয়েছে প্রথমটি হল স্টুডেন্ট ভিসা
এবং দ্বিতীয় টা হল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। প্রথমে আপনাকে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে
যদি পড়াশোনা পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করতে চান তাহলে স্টাডি ভিসা সবচেয়ে
উপযুক্ত হবে। তবে পড়াশোনা ক্লাস ইনমেন্টের পাশাপাশি কাজ চালিয়ে যাওয়া অনেক
চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। তবুও যদি আপনার আত্মবিশ্বাস থাকে স্টুডেন্ট ভিসা
আপনার জন্য কার্যকারী এবং সহজ হতে পারে।
অন্যদিকে যদি আপনার লক্ষ্য একটি পূর্ণকালীন চাকরি করা বা পরিবারকে সাপোর্ট
দেওয়া এবং ইউরোপের স্থায়ীভাবে বসবাস স্থাপন করা হয় তাহলে মালটার
স্কিল পাস ওয়ার্ক পারমিট বিশেষ করে হোটেল সেক্টরে সবচেয়ে বেস্ট ও স্মার্ট
অপশন। মালটাই একাডেমিক সার্টিফিকেট আছে বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতার
প্র্যাকটিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স মূল্য অনেক বেশি। তাই যারা দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা
নিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য এই পথেই সবচেয়ে সুবিধা জনক।
সংক্ষেপে বলতে গেলে আপনার লক্ষ্য ও দক্ষতার উপর নির্ভর করে স্টাডি ভিসা
শিক্ষার্থীদের জন্য সেরা। আর যারা কাজ স্থায়ীভাবে ইউরোপে বসবাস করতে চান
তাদের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সবচেয়ে কার্যকর।
মালটা স্কিল পাস সার্টিফিকেট কিভাবে পাবেন
মালটার স্কেল পাস সার্টিফিকেট পেতে হলে প্রথমে আপনাকে অনলাইনে ৪৭৫ ইউরো পরিষদ
করতে হবে। এরপর প্রক্রিয়াটি শুরু হয় ফেস ওয়ান পরীক্ষার মাধ্যমে যা আপনি
ঘরে বসিয়ে দিতে পারবেন। ফেস উয়ান পরীক্ষামূলক আপনার ইংরেজিতে দক্ষতা যাচাই
করে কতটা ভালো লিখতে এবং বলতে পারেন লেখা পড়ে বোঝার ক্ষমতা কতটা ইত্যাদি।
পরীক্ষার জন্য কিছু ভিডিও ক্লিপ পূর্বে দেখা নেওয়া ভালো।
ফেস ওয়ান পরীক্ষার পর আসে ফেস টু। ফেস টু পরীক্ষা দিতে হলে আপনাকে নিকটস্থ
ডিএফএস গ্লোবাল সেন্টারে যেতে হবে। সেখানে আপনাকে প্রথমে আপনার profession
পেশা নির্বাচন করতে হবে এবং সেই পেশায় আপনার দক্ষতা যাচাই করা হবে। এরপর
ইঞ্জেনারেশন ইংলিশ ইন্টারভিউ নেয়া হবে যেখানে আপনার কাজের জন্য ইংরেজিতে
যোগাযোগ করার ক্ষমতা যাচাই করতে হবে।
ফেস টু উত্তীর্ণ হলে আপনার স্কিল পাস সার্টিফিকেট সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়।
এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমে আপনি পরবর্তী ধাপে যেতে পারেন। ওয়ার্ক পারমিটের
জন্য আবেদন ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন পাওয়ার পর আপনার সার্টিফিকেট এম্বাসিতে
জমা দিলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। সংক্ষেপে বলতে গেলে
স্কিল পাস সার্টিফিকেট হল মাল্টাই কাজের মূল চাবিকাঠি। ফেসওয়ান ও ফেস টু
উভয় পরীক্ষায় সফল হওয়া এবং ইংরেজি ও পেশাগত দক্ষতা প্রমাণ করা অবশ্যই
জরুরী।
বাংলাদেশ থেকে মালটা যাওয়ার উপায়
বাংলাদেশ থেকে মালটা যাওয়ার প্রধান দুটি উপায়ে রয়েছে কোম্পানি বা স্কেল
পাস ওয়ার্ক পারমিট এর মাধ্যমে এবং এজেন্সির মাধ্যমে। যদি আপনি কোম্পানির
মাধ্যমে যেতে চান তাহলে প্রথমে এই মালটার কোন কোম্পানির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ
করতে হবে। কোম্পানি যদি আপনাকে নিয়োগ দিতে রাজি হয় তাহলে তারা ওয়ার্ক
পারমিট এর জন্য আবেদন করবেন। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর আপনাকে ভিসার জন্য
আবেদন করতে হবে এবং মাল্টায় প্রবেশের সুযোগ পাবেন। এই প্রক্রিয়ায় খরচ
কিছুটা নির্ধারিত এবং আপনার দক্ষতা ও স্কিল পাস সার্টিফিকেট থাকলে ভিসা
পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
আরো পড়ুনঃ দুবাই থেকে ইউরোপের দেশ ইতালি যাওয়ার উপায়
অন্যদিকে যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তবে আপনাকে অনুমোদিত এবং নির্ভরযোগ্য
এজেন্সি খুঁজে নিতে হবে। এজেন্সির মাধ্যমে খরচ ও প্রসেস কিছুটা পরিবর্তনশীল
হয় এবং অন্যান্য খরচ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। এজেন্সি সাধারণত পুরো
প্রক্রিয়ার সাহায্য করে চাকরি সুযোগ ডকুমেন্ট প্রস্তুতি এবং ভিসা আবেদন করার
ক্ষেত্রে। মালটা যাওয়ার জন্য আপনার স্কিল পাস সার্টিফিকেট ওয়ার্ক পারমিট
এবং ভিসা অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। এশার ও মালটাই কাজের ধরন এবং সেক্টরের
ওপর নির্ভর করে আপনার ইংরেজি দক্ষতা ও প্র্যাকটিক্যাল অভিজ্ঞতা ও
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সংক্ষেপে বলতে গেলে বাংলাদেশ থেকে মালটা যাওয়ার জন্য সরাসরি কোম্পানি অথবা
নির্ভরযোগ্য এজেন্সি এই দুই পথের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয়
ডকুমেন্টস সম্পন্ন করে রাখতে হবে।
মালটা যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে মালটাই যাওয়ার সময় কাল মূলত আপনার ভিসার প্রকার আবেদন
প্রক্রিয়া এবং ডকুমেন্ট প্রস্তুতির ওপর নির্ভর করে। যদি আপনি ওয়ার্ক পারমিট
ও স্কিল পাস সার্টিফিকেটের মাধ্যমে যান তাহলে প্রথমে কোম্পানি বা নিয়োগ
কর্তার মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট এর আবেদন করতে হবে। ওয়ার্ক পারমিট অনুমোদন
প্রক্রিয়ার সাধারণত দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর
ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। মালটার দূতাবাস বাদ দিয়ে এফ এস গ্লোবালের
মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাধারণত এক থেকে দুই মাস সময় লাগে।
অর্থাৎ সবমিলে প্রায় তিন থেকে পাঁচ মাস সময় লাগতে পারে। তবে এটি ডকুমেন্ট
প্রস্তুতি স্কিল পাস পরীক্ষার সময় এবং কোম্পানির প্রসেসিং এর গোপনে কিছুটা
পরিবর্তিত হতে পারে। ভিসার ক্ষেত্রে সময়কাল তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে। তবে
পার্ট টাইম জবসহ পড়াশোনার পরিকল্পনা থাকলে কিছু অতিরিক্ত সময় প্রয়োজন হতে
পারে। মালটা যেতে কত টাকা লাগে। বাংলাদেশ থেকে মালটা যাওয়ার জন্য সঠিক
প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে প্রায় তিন থেকে পাঁচ মাসের মধ্যে পৌঁছানো সম্ভব।
লেখকের শেষ কথা
মালটা একটি ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র হলেও পর্যটনীয় এবং কর্মসংস্থানের দিক থেকে
অত্যন্ত সুযোগ জনক। এটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সেনজেনভুক্ত এবং পর্যটন হোটেল
রেস্টুরেন্ট ও সার্ভিস সেক্টরের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। মালটার আবহাওয়া
নেতিশীতোষ্ণ যার কারণে পর্যটকরা সারা বছর এখানে আসে। বিশেষ করে ব্রিটিশ পর্যটক
বেশি আসে- ফলে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বিদেশি কর্মীর চাহিদা সব সময় থাকে।
বর্তমানে মালটার ভিসা রেশিও আগের তুলনায় কিছুটা ভালো। যারা মিডিলেস্টে আসেন বা
বাংলাদেশের বাইরে থেকে আবেদন করছেন তাদের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে
বেশি। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকতে
পারে কারণ অনেকেই এখনো স্কিল পাস ও পরীক্ষার সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে
অবগত নন বা ফেস-টেস্ট দিতে পারেনা।
তবে যদি আপনি ইংরেজিতে দক্ষ হন তাহলে মালটাই কাজে সুযোগ গ্রহণ করা আপনার জন্য
দারুন সম্ভাবনা। ইংরেজি দক্ষতা থাকলে সেখানে কাজ করতে গেলে ভালো আয় এবং
দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি বাংলাদেশ থেকে যাত্রা করতে
ইচ্ছুকদের জন্য এক বরো সুযোগ যা শুধু পেশাগত উন্নয়ন নয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের
ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।






এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url