রাতকানা রোগ কেন হয়
রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে হয়। রাতকানা রোগ বা নাইট ব্লাইন্ডনেস এমন একটি চক্ষু সমস্যা যেখানে অন্ধকারে বা কম আলোতে চোখে পরিস্কার দেখা যায় না। দিনের বেলায় স্বাভাবিক দেখলেও সন্ধ্যা নামলে চোখ দুর্বল হয়ে পড়ে। বাংলায় একে রাতকানা বলা হয় আর ইংরেজিতে এর আরেক নাম হল নাইট ব্লাইন্ডনেস বা নিক্তালপিয়া।
অনেকেই ভাবেন এটি শুধুমাত্র একটি সাধারণ দৃষ্টি জনিত অসুবিধা কিন্তু আসলে এর পেছনে রয়েছে চোখের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ কোষের দুর্বলতা। এই সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ভিটামিন-এ এর অভাব এবং বিশেষ ধরনের চক্ষু রোগ। তাই রাতকানা নিয়ে সচেতন হওয়া এবং এর মূল কারণগুলো জানা অত্যন্ত জরয়া।
পেজ সূচিপত্রঃ রাতকানা রোগ কেন হয়
- রাতকানা রোগ কেন হয়
- রাতকানা রোগের কারণ ভিটামিনের অভাব
- রাতকানা রোগ কি ভালো হই
- রাতকানা রোগের প্রতিকার কি
- ভিটামিন এর অভাব রাতের অন্ধকার
- ডাইবেটিক রেটিনা ক্ষয় করে
- রাতের অন্ধকার প্রতিরোধ
- লাইফস্টাইল এর পরিবর্তন
- রাতকানা রোগের লক্ষণ গুলো কি কি
- রাতকানা রোগ নির্ণয়
- রাতকানা উপেক্ষা করার জটিলতা
- চিকিৎসা না করলে কি হতে পারে
- রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধের সহজ উপায়
- রাত কানা রোগ থেকে বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- লেখকের শেষ কথা
রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে
রাত কানা কেমন একটি চক্ষু সমস্যা যেখানে মানুষ দিনের বেলা স্বাভাবিকভাবে দেখতে
পেলেও রাতের বেলা বা অল্প আলোতে দেখতে বেশ অসুবিধায় পড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের
ভাষায় এটিকে নাইট ব্লাইন্ডনেস বা নীতলপিয়া বলা হয়। রাতকানা রোগ মূলত চোখের
রেটিনার কার্যক্ষমতা সঙ্গে সম্পর্কিত। রেটিনার ভেতরে থাকা রড কোষ আমাদের চোখকে
অন্ধকার বা আলোতে দেখতে ক্ষমতা দেয়। যখন এই রড কোষ ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারাতে
থাকে তখন মানুষ রাতকানা রোগের সমস্যায় ভোগে।
রাতকানার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা নামের একটি রোগকে।
এটি একটি জেনেটিক বা বংশগত রোগ যেখানে রেটিনার কোষ ক্ষয় হতে থাকে। সাধারণত
শিশুদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলেও প্রাপ্তবয়স্করাও আক্রান্ত হতে পারে।
চোখ ধীরে ধীরে আলোর প্রতি সাংবিধানশীলতা হারাতে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত রাতের
বেলায় প্রায় কিছুই দেখা যায় না।
তবে শুধু জেনেটিক কারণ নয় অপুষ্টিজনিত ভিটামিনের অভাব ও রাতকানা রোগের অন্যতম
বড় কারণ। বিশেষ করে ভিটামিন-এ এর ঘাটতি হলে এই রোগ দেখা দেয়। ভিটামিন-এ আমাদের
শরীরের জন্য অপরিহার্য একটি পুষ্টি উপাদান। যা চোখের দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিক
রাখতে বড় ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন-এ এর অভাবে কর্নিয়া শুকিয়ে যায় চোখ অসুস্থ
হতে থাকে চোখের পানি কমে যায় এবং ধীরে ধীরে রাতকানা রোগের উপসর্গ প্রকাশ পায়।
সাধারণত শিশুদের মধ্যে রাতকানা প্রবণতা বেশি দেখা যায় কারণ অনেক সময় তারা সঠিক
পুষ্টিকর খাবার পায় না। তবে বয়স্কদের মধ্যেও এটি দেখা দিতে পারে বিশেষ করে যারা
অপুষ্টিতে ভুগছেন বা জন্মগতভাবে চোখে সমস্যায় আক্রান্ত আছেন। যেগুলো কারণে
রাতকানা রোগ হতে পারে
- জন্মগত চোখের সমস্যা
- চোখের আঘাত
- করনিয়া রোগ
- লিভারের অসুখ
- ভিটামিন এর অভাব
যে খাবারগুলো ভিটামিন-এ সরবরাহ করে সেগুলো হলোঃ মাছের তেল, গরুর
কলিজা, ডিমের কুসুম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার। গাজর মিষ্টি কুমড়া সবুজ শাকসবজি
লাল বা হলুদ রঙের ফলমূল যেমন পাকা আম পেঁপে কলা ইত্যাদি এবং ছোট মাছ এসব
খাবারের প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ থাকে। নিয়মিত এই খাবারগুলো খেলে রাতকানার
ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
সবশেষে বলা যায় স্বাভাবিক জীবনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সময়মতো
সচেতনতা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললে এই রোগ
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
রাতকানা রোগের কারণ ভিটামিনের অভাব
ভিটামিন মানব দেহের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান। এটি শরীরকে স্বাভাবিক
কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে
চক্ষু স্বাস্থ্য পর্যন্ত প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে ভিটামিন একটি বিশেষ ভূমিকা রাখে।
আমাদের শরীর কিন্তু স্বাভাবিকভাবে ভিটামিন উৎপন্ন করতে পারে না তাই প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকার মাধ্যমে শরীরের ভিটামিন সরবরাহ করতে হয়। এর মধ্যে ভিটামিন-এ এমন
একটি উপাদান যা না থাকলে চোখে নানা সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে রাত কানা বা
নাইট ব্লাইন্ডনেস। তাই রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে এই প্রশ্নের
উত্তর খুবই স্পষ্ট এর মূল কারণ হলো ভিটামিন এর ঘাটতি।
রাতকানা রোগ কে বাংলায় বলা হয় রাতের অন্ধত্ব। এই রোগে ভোগা মানুষরা সাধারণত
রাতের বেলা বা অল্প আলোতে কিছুই দেখতে পান না বা দৃষ্টি খুব অস্পষ্ট হয়। এটি
কেবল একটি সাধারণ অসুবিধা নয় বরং অনেক সময় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা
মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। ভিটামিন-এ এর অভাব হলে শরীরে রডোপসিন নামক এক বিশেষ
প্রোটিন তৈরি হয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন যা কম আলোতে চোখকে সঠিকভাবে কাজ করতে
সাহায্য করে। যখন শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে না তখন সিম তৈরি হতে পারে না এবং
এর ফলে মানুষ রাতে বা কম আলোতে দেখতে সমস্যা অনুভব করে।
তবে শুধু ভিটামিন এ এর অভাবী রাতকানায় একমাত্র কারণ নয় কিছু জেনেটিক ব্যাধিও এই
রোগের জন্য দায়ী। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা।
এটি এক ধরনের বংশগত রোগ যা ধীরে ধীরে রেটিনার কার্যক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে। যাদের
মধ্যে এই রোগটি থাকে তারা প্রথমে অল্প আলোতে বা রাতের বেলায় দেখতে অসুবিধা বোধ
করেন। সময়ের সাথে সাথে এ সমস্যা আরো বাড়তে থাকে এবং অনেকে হাঁটাচলার সময়ও
বিপদে পড়েন।
আরো পড়ুনঃ কাশির জন্য তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
পুষ্টির অভাবও রাতকানা রোগের আরেকটি প্রধান কারণ। যাদের খাদ্য তালিকায় দুধ ডিম
মাছ কলিজা গাজর মিষ্টি কুমড়া পাকা আম পেঁপে বা সবুজ শাকসবজি থাকে না তাদের মধ্যে
ভিটামিন এর ঘাটতি বেশি হয়। দীর্ঘদিন ভিটামিন এ এর ঘাটতি থাকলে চোখ শুকিয়ে যায়
কর্মীয়ার ক্ষতি হয় এবং রাতে দৃষ্টি শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। সবমিলিয়ে বলা যায়
রাতকানা রোগের প্রধান কারণ হলো ভিটামিন এ এর অভাবে। এর পাশাপাশি জেনেটিক রোগ
জন্মগত সমস্যা বা চোখে আঘাতও এই রোগের জন্য দায়ী হতে পারে। তবে নিয়মিত ভিটামিন
এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ নিলে রাতকানা অনেক অংশ প্রতিরোধ করা
যায়। তাই রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে হয় এ সকল বিষয়গুলো ভালোভাবে
জানা দরকার।
রাতকানা রোগ কি ভালো হই
রাতকানা রোগ মূলত চোখের এক ধরনের অসুবিধা। যেখানে অন্ধকার নামলেই বা আলো কম থাকলে
দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায় অর্থাৎ দিনের বেলায় সবকিছু ঠিকভাবে দেখা গেলেও রাতে
হলেই চোখে কিছু বোঝা যায় না। সাধারণভাবে ভিটামিন এ এর অভাবকেই এ রোগের প্রধান
কারণ ধরা হয়। বিশেষ করে শিশু আর গর্ভবতী নারীরা এর ঝুঁকিতে বেশি থাকে। তবে শুধু
ভিটামিন এ এর অভাব নই কারো লিভারের সমস্যা থাকলেও বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না
থাকলেও কিংবা বংশগত কারণে অনেক সময় রাতকানা দেখা দিতে পারে।
অনেকে মনে করেন একবার রাতকানা হলে আর কোনোভাবেই তা সারানো যায় না। কিন্তু
বাস্তবতা হলো প্রচুর ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত খেলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা নিলে চোখ আবার আগের অবস্থায় ফেরা সম্ভব। অর্থাৎ প্রশ্ন
যদি ওঠে রাতকানা রোগ কি ভাল হয়? উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ। তবে সেটি তখনই সম্ভব যখন
রোগটি শুরুর দিকে ধরা পড়ে এবং যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করা যায়।
রাতকানা রোগের প্রতিকার কি
রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার আসল ভারসা হল সঠিক খাবার আর যথাযথ চিকিৎসা। এ
রোগের মূল প্রতিকার হিসেবে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারের গুরুত্ব সব থেকে বেশি। যেমন
গাজোর মিষ্টি কুমড়া কলিজা ডিমের কুসুম কিংবা পাকা আম এসব খাবারের প্রচুর ভিটামিন
এ থাকে যা চোখের জন্য বিশেষ উপকারী। আবার শিশুদের নিয়মিত টিকা দান কর্মসূচির অংশ
হিসেবে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো রাতকানা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
তবে শুধু খাবারই শেষ নয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ খুব জরুরী। অনেক সময় দেখা
যায় চোখের ভেতরে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে চিকিৎসার পাশাপাশি অস্ত্রপচারের
প্রয়োজন হয়। তাই উপসর্গগুলো শুরুর হওয়ার পর দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে
যাওয়া উচিত। সব মিলিয়ে বলা যায় রাতকানা রোগ প্রতিকারের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো
সচেতনতা সঠিক খাদ্যাভাস আর সময় মতো চিকিৎসার সাহায্য নেওয়া।
ভিটামিন এ এর অভাবে রাতের অন্ধকার
রেটিনাল বা ভিটামিন এ এর ঘাটটি রাতকানা রোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ভিটামিন
এতে মূলত পাওয়া যায় মাছের তেল কলিজা দুধ ও অন্যান্য দুধ জাতীয় খাবার। এর মধ্যে
নিয়মিত এসব খাবার খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ মজুদ থাকে। কিন্তু এই
ভিটামিনের অভাব হলে শুধু রাতকানা নয় আরো অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে ভিটামিন এ এর ঘাটতি ডায়রিয়া হাম বা নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়
ওজন কমতে থাকে এবং ধীরে ধীরে অপুষ্টি দেখা দেয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই ঘাটতি থাকলে
চোখের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত রাতকানা রোগের
রূপ নেয়।
চোখের কোষগুলো যখন শুকিয়ে যেতে থাকে তখন তা অল্প আলোতে সাড়া দিতে পারে না ফলে
রোগীর সন্ধ্যার পর বা সূর্যাস্তের পরে থেকে দেখতে অসুবিধা বোধ করেন যেটি রাতকানা
রোগের প্রধান লক্ষণ। এসব সমস্যা সাধারণত কয়েকটি কারণে হয়ে থাকে যেমনঃ
- ভিটামিন এ এর ঘাটতি শরীরে থাকলে এ রোগ দেখা দেয়
- বংশগত বা জেনেটিক সমস্যা থাকলে এটি হতে পারে
- চোখের অস্ত্র বাজারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- দীর্ঘদিন নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ সেবন করা
- বার্ধক্যের কারণে চোখের লেন্স শক্ত হয়ে যাওয়া
সব মিলিয়ে বলা যায় শরীরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি রাতকানার প্রধান কারণ হলেও আরো
কিছু শারীরিক ও বংশগত কারণে এ রোগ দেখা দিতে পারে।
ডায়াবেটিক রিটিন ক্ষয় করে
রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে তা বোঝার আগে ডায়াবেটিসের প্রভাবও
জানা দরকার। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে রেটিনার ক্ষুদ্র রক্তনালী
গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে। এর ফলে চোখের ড্রেটিনা ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না
আর রাতে স্পষ্টভাবে দেখতে অসুবিধা হয়। অনেক সময় আলো চোখে পৌঁছালেও রেটিনা
সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া দিতে পারেনা। তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত অনেকেই রাতকানার
সমস্যায় ভোগেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথেও এই সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। বয়স্কদের
মধ্যে দেখা যায় কম আলোতে ঝাপসা দেখা ঘন ঘন হোঁচট খাওয়া এবং হাটতে গিয়ে
অসুবিধা হওয়া এসব রাতকানার প্রাথমিক উপসর্গ।
তবে এখানে আসল কথা হচ্ছে নিয়মিত ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে চোখ অনেকটা
সুরক্ষিত থাকে। যেমন গাজর মিষ্টি আলু কলিজা কুমড়া শাকসবজি ও দুধ জাতীয়
খাবারের প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায় যা চোখের কোষকে শক্তি যোগায় এবং
রাতকানা ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের
পরামর্শ নেয়া উচিত।
রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ
রাতকানা রোগ হয় কোন ভিটামিনের অভাবে তা জানা থাকলে তার প্রতিরোধের উপায়ও জানা
সহজ হয়। ডিমের কুসুম ভিটামিন এ এর একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব যা চোখের দৃষ্টি
শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন ও
খনিজ যুক্ত খাদ্য নিয়মিত খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রাতকানা থেকে
ঝুঁকি কমে। শিশুর ক্ষেত্রে জন্মের পর থেকে প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের বুকের দুধ
খাওয়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে
যায়। মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে যার শিশুর দৃষ্টি শক্তি উন্নত
রাখে।
প্রাপ্তবয়স্কর জন্য ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরী। গাজরের মধ্যে থাকা
প্রচুর বিটাকেরোটিন শরীরে ভিটামিন এ সরবরাহ করে। এছাড়া পালংশাক মিষ্টি আলু ও
অন্যান্য রঙিন শাকসবজি নিয়মিত খেলে চোখের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বজায় থাকে।
এসব খাবার দৃষ্টিশক্তি সুস্থ ও সুন্দর রাখার জন্য সহায়ক। তবে জন্মগত ত্রুটি বা
জেনেটিক রোগ যেমন উষার সিনড্রোম থাকলে রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করা যায় না। তাই
সঠিক খাদ্যাভাস ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার এবং শিশুর জন্য বুকের দুধ নিশ্চিত করা
হলো রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধের মূল উপায়।
লাইফস্টাই এ পরিবর্তন
রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে তা জানা আমাদের জীবনে সচেতনতা এবং
প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার সুযোগ দেয়। আমাদের লাইফস্টাইল যদি চোখেরও
স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে না তাহলে রাতকানা রোগ বা চোখের অন্যান্য সমস্যা বাড়তে
পারে। তাই লাইফ স্টাইলের পরিবর্তন চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
প্রথমেই নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো উচিত একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে চিকিৎসা
শুরু করা সহজ হয় এবং জটিলতা এড়ানো যায়।
আরো পড়ুনঃ মরিঙ্গা ট্যাবলেট খেলে কি মোটা হয়
একজন সচেতন ব্যক্তি হিসেবে খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখা জরুরি। খাদ্য তালিকায় ভিটামিন
এ সি এবং ই সমৃদ্ধ এন্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার রাখলে চোখের কার্যক্ষমতা উন্নত
হয়। যেমন তাজা সবুজ শাক গাজর মিষ্টি আলু কলিজা ডিমের কুসুম দুধ জাতীয় খাবার
এবং রঙিন ফল। এই খাবারগুলো চোখের পুষ্টি দেয় রেটিনার কষ্টের সুরক্ষিত রাখে এবং
রাতের অন্ধত্বের ঝুকি কমায়। পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম চোখের ক্লান্তি দূর করে।
ঘুমের অভাব হলে চোখের দৃষ্টি দুর্বল হয় এবং রাতকানা রোগের প্রাথমিক উপসর্গ আরও
বাড়তে পারে।
এছাড়া সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্নি চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে তাই
রোদে বের হলে সানগ্লাস ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লাইফ স্টাইলের মধ্যে
এই পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। রাতকানা রোগের
প্রাথমিক লক্ষণগুলো সহজে বোঝা যায় এবং দৈনন্দিন জীবনে পরিচালনা করা সহজ হয়।
ছোট ছোট অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমিক দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করা সম্ভব যা
দীর্ঘমেয়াদী চোখ সুস্থতা নিশ্চিত করে।
রাতকানা রোগের লক্ষণগুলি কি কি
বাংলাদেশের রাতকানা রোগ বেশ প্রচলিত এবং বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা
যায়। সরকারের জরিপ অনুযায়ী দেশে প্রায় বছরে আড়াই লাখ মানুষ রাতকানা রোগে
আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে ভিটামিন এ এর অভাবে শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রভাব
বেশি। সাধারণত যাদের বয়স এক থেকে ছয় বছর তাদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
রাতকানা মানে হলো রাতে বা কম আলোতে দেখতে না পাওয়া। সাধারণত সূর্য ডোবার পর পরই
রোগের এই অসুবিধা দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগের নাম নিত্য লেপিয়া এ
রোগে অন্ধকারের সাথে চোখের সম্পর্ক ধীরে ধীরে কমে যায় যার ফলে রাতের দৃষ্টি
শক্তি হাস পায় ।
রাত কানা রোগের প্রধান লক্ষণ গুলো হলঃ
- আবছা আলোতে দেখতে অসুবিধাঃ প্রথম পর্যায়ে সন্ধার পরে বা কম আলোতে চোখ হাত খাইয়ে নিতে অসুবিধা হয়।
- দুর্বল রাতের দৃষ্টিঃ দিনে বা বেশি আলোতে স্বাভাবিকভাবে দেখলে অন্ধকার বা কম আলোতে চোখ খাপ খাওয়াতে অসুবিধা হয়।
- একদৃষ্টিসংবেদনশীলতা বৃদ্ধিঃ রাতে বা ঝলমলে আলোতে চোখ অতি সংবেদনশীলতা হয়ে ওঠে।
-
পেরিফেরাল দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পাওয়াঃ নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে
কম আলোতে জিনিস দেখা কঠিন হয়ে যায়।
-
চোখের শুষ্কতাঃ চোখ শুষ্ক অনুভূত হয় এবং বিরক্তি তৈরি
করে।
-
চোখে ছোট ছোট দাগ দেখাঃ কখনো কখনো চোখের কারনি আর ছোট রঙের
দাগ লক্ষ করা যায়।
-
কর্নিয়ার সমস্যাঃ দীর্ঘ সময়ে কর্মিয়ার ঘা বা ঝলমলে হয়ে
যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
-
চোখের ঘোরার মত প্রভাবঃ কিছু সময় অস্পষ্ট দেখা যায় অর্থাৎ
কর্নিয়া ঘোড়ার মত হয়ে যায়।
রাতকানা রোগের এই লক্ষণগুলো প্রাথমিক সর্তকতা হিসেবে কাজ করে। যদি এগুলো সময়
মত সনাক্ত করা হয় তবে খাদ্যাভাস ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট এবং চোখের যত্নের
মাধ্যমে প্রয়োজনের চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব যা দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করতে
সাহায্য করে।
রাতকানা রোগ নির্ণয়
রাতকানা একটি আলাদা রোগ হিসেবে পুরোপুরি অন্ধত্ব সৃষ্টি করে না। তবে কম আলোতে
দেখা কঠিন হয়ে যায়। বিশেষ করে যারা রাতে গাড়ি চালানো বা রাতে কাজ করেন তাদের
জন্য এটি অসুবিধা জনক। অনেক সময় রাতকানা অন্যান্য চোখের সমস্যার প্রাথমিক
উপসর্গ হিসেবেও দেখা দিতে পারে। তাই রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে
তা জানা থাকলে এটি সনাক্ত করা সহজ হয়।
রাতকানা রোগ নির্ণয় করার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে যেমনঃ
- চোখের পরীক্ষাঃ প্রথমে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পূর্ণাঙ্গ চোখের পরীক্ষা করানো প্রয়োজন।এতে বোঝা যায় যে দৃষ্টি শক্তির হাস পাচ্ছে কেন এবং কোন কারণে হচ্ছে। চোখের বিভিন্ন ফাংশন পরীক্ষা করে রোগের প্রকৃতি সনাক্ত করা সম্ভব হয়।
-
ফান্ডাস পরীক্ষাঃ রেটিনার দিকে তাকিয়ে পরীক্ষা করা হয় এখানে দেখা
যায় সানি বা রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা এর প্রাথমিক লক্ষণ। এই সমস্যা
প্রায়শই ভিটামিন এ এর অভাবে সৃষ্টি হয়। ফান্ডাস পরীক্ষার মাধ্যমে রেটিনার
ক্ষতির মাত্রা এবং রোগের গতি বোঝা যায়।
-
জেনেটিক টেস্টিংঃ কিছু ক্ষেত্রে রাতকানা রোগ জিনগত কারণে হয়। যদি
পরিবারের মধ্যে চোখের জেনেটিক সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী
জেনেটিক পরীক্ষা করানো যেতে পারে। এতে রোগীর সম্ভাব্য কারণ এবং উত্তরাধিকার
সূত্রে প্রাপ্ত সমস্যা সনাক্ত করা যায়।
-
রক্ত পরীক্ষাঃ শরীরে স্বাস্থ্যগত অবস্থার বিশ্লেষণের জন্য রক্ত
পরীক্ষা প্রয়োজন হতে পারে। ভিটামিন এ এর অভাব বা অন্যান্য পুষ্টি জনিত
কারণগুলো নির্ণয়ে রক্ত জনিত পরীক্ষা সহায়ক। এটি রোগ নির্ণয়ের সহায়ক
হওয়ার পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা ও খাদ্য পরিকল্পনা নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে।
রাতকানা রোগের সঠিক নির্ণয় করা গেলে প্রাথমিক সর্তকতা গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয়
চিকিৎসা শুরু করা সহজ হয়। যা চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং রাতকানা রোগের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
রাতকানা উপেক্ষা করার জটিলতা
রাতকানা রোগ একটি সংবেদনশীল চোখের সমস্যা যা কম আলোতে দেখতে অসুবিধা সৃষ্টি
করে। এই সমস্যা কখনো কখনো ভিটামিন এর অভাবের কারণে দেখা যায়। বিশেষত
রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা মত মারাত্মক চোখের রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে শুধু
ভিটামিন এ নয় অন্যান্য ভিটামিনের অভাব ও পুষ্টি ঘাটতির কারণে ও রাতে দেখার
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যারা এই সমস্যাকে উপেক্ষা করেন বা চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করেন না তাদের জন্য
সমস্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই সময়মতো চিকিৎসকদের পরামর্শ স্বরপন্ন হওয়া
অত্যন্ত জরুরী। প্রাথমিক সর্তকতা গ্রহণ করলে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করলে
রাতকানা রোগের আরোগ্যতা বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
অপেক্ষার ফলে সম্ভবত জটিলতাঃ
- ক্রমশ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিঃ প্রাথমিকভাবে রাতের অন্ধত্ব দেখা দেয় কিন্তু চিকিৎসা না নিলে ধীরে ধীরে দিনেও দৃষ্টি শক্তি কমতে শুরু করে। বিশেষ করে কম আলোতে জিনিস চিনতে অসুবিধা হয়।
- দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধিঃ রাতে বা কম আলোতে চলাফেরার সময় বিপদে দুর্ঘটনা সম্ভাবনা বেড়ে যায়। যেমন হঠাৎ ধাক্কা লাগা রাস্তা পারাপার সমস্যা বা অন্য ধরনের আহত হওয়া।
- স্থায়ী ক্ষতিঃ যদি রেটিনাইটিস পিগমেন্টও এর চিকিৎসা দ্রুত করা না হয় তবে রেটিনার কার্যক্ষমতা ক্রমশক ক্ষয় পেতে পারে। এর ফলে দৃষ্টি শক্তি স্থায়ীভাবে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা পরবর্তীতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে।
রাতকানা রোগে অপেক্ষা না করে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার
গ্রহণ করলে চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা সম্ভব এবং রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধ
করা যায়। তাই রাতকানা রোগ কেন হয় কোন ভিটামিনের অভাবে তা ভালোভাবে জানা
উচিত।
চিকিৎসা না করলে কি হতে পারে
যদি রাতকানা রোগের চিকিৎসা একেবারেই না করা হয় তবে এর ফল কতটা ভয়াবহ হতে
পারে তা ভাবলেও অবাক হতে পারেন। শুরুতে হয়তো শুধু অন্ধকার কিছু দেখা কঠিন
হয়ে দাঁড়ায় কিন্তু সময় মত সঠিক পদক্ষেপ না দিলে সমস্যা ধীরে ধীরে গুরুতর
হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে ভিটামিন এ এর ঘাটতি চলতে থাকলে চোখে নানা জটিলতা তৈরি
হয়। যার ফলে দৃষ্টিশক্তি স্থায়ীভাবে হারানোর আশঙ্কা দেখা দেয়। এমন কি চোখে
শুষ্কতা এতটা বাড়তে পারে যে কর্ম নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গিয়ে পরিণতিতে
সম্পূর্ণ অন্ধত্ব ডেকে আনতে পারে।
এই কারণেই চোখের সামান্য অসুবিধা দেখা দিলেই অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের
কাছে যাওয়া প্রয়োজন। ভিটামিন এ ক্যাপসুল ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সুষম খাবার আর
সচেতন জীবন যাপন এই তিনটি বিষয় একসাথে মেনে চললে রাতকানা থেকে মুক্তি পাওয়া
অনেকটাই সম্ভব।
রাতের অন্ধত্ব প্রতিরোধের সহজ উপায়
রাতকানা রোগ কেবল চোখের সমস্যা নয় এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও প্রভাব ফেলে।
রাতের অন্ধকারে দেখতে অসুবিধা হলে চলাফেরায় ঝুঁকি বেড়ে যায়। ভিটামিন এ হলো
চোখের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য কারণ এটি রেটিনা রোড কোসকে শক্তিশালী রাখে যা
কম আলোতে দেখার ক্ষমতা উন্নত করে। এই ভিটামিন পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক
খাবারের মধ্যে যেমন মাছের তেল কলিজা দুধ জাতীয় খাবার সবুজ শাকসবজি রঙিন ফল
যেমন পাকা আম কুমড়া গাজর ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ কাঁঠালের বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
নিয়মিত এই ধরনের খাবার খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং রাতকানা রোগের
ঝুঁকি কমে যায়। শুধু তাই নয় ভিটামিন এ এর অভাব দূর করার মাধ্যমে চোখের
অন্যান্য সমস্যা যেমন রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা বা রডকশিম ক্ষয় প্রতিরোধ করা
সম্ভব। সর্তকতা এবং সঠিক খাদ্যাভাসের মাধ্যমে আমরা নিজের চোখকে সুস্থ রাখতে
পারি এবং রাতের অন্ধকারে দেখতে সক্ষম হতে পারি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস আক্রান্ত
ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ভিটামিন এ এর সঠিক গ্রহণ চোখের দৃষ্টি শক্তি ধরে রাখতে
সাহায্য করে।
রাত কানা রোগ থেকে বাঁচার গুরুত্বপূর্ণ টিপস
শিশুর চোখের স্বাস্থ্য আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের মধ্যে একটি। চোখ
ঠিকমতো কাজ না করলে শিশুর দৈনন্দিন জীবনে পড়াশোনা ও খেলাধুলা সবই প্রভাবিত
হবে। রাতকানা রোগ বা নাইট নামে রোগ সাধারণত ভিটামিন এর অভাব বা জন্মগত সমস্যার
কারণে দেখা দেয়। তাই এটি প্রতিরোধের জন্য প্রাথমিকভাবে শিশুর পুষ্টিকর দিক
দিয়ে খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী। শিশুর জন্মের পর থেকে মায়ের দুধ খাওয়ানো
উচিত অন্তত ৬ মাস পর্যন্ত। মায়ের দুধে থাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ জা শিশুর
চোখের রড কোষকে শক্তিশালী রাখে এবং রাতের অন্ধকারে দেখতে সাহায্য করে।
ছয় মাসের পর থেকে শিশুর খাদ্য তালিকায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা
আবশ্যক। এর মধ্যে রয়েছে গাজর পালং শাক মিষ্টি আলো কলিজা এবং রঙিন ফল যেমন পাকা
আম ও কুমড়া। এই খাবারগুলো নিয়মিত খেলে শিশুর চোখের দৃষ্টি শক্তিশালী হয় এবং
রাতকানা রোগের ঝুঁকি কমে। শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা করতে বছরে দুবার ভিটামিন এ
ক্যাপসুল দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুর
জন্য এটি চোখে সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এছাড়া শিশুকে নিয়মিত চেকআপ
করানো প্রয়োজন। যে কোন প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নেওয়া
উচিত যাতে বড় সমস্যা এড়ানো যায়।
শিশুর চোখের যত্নের জন্য আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস হলঃ
- শিশুর খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সি ও এ সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। যেমন খেজুর কমলা আমলকি বাদাম এবং বিভিন্ন সবুজ শাকসবজি।
- পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন কারণ ঘুম চোখের ক্লান্তি দূর করে এবং চোখের কোষকে পুনর্জীবিত করে।
- শিশুকে সরাসরি সূর্যের ক্ষতিকর আলোর হাত থেকে রক্ষা করতে সানগ্লাস ব্যবহার করতে উৎসাহ দিন।
- ডায়রিয়া বা নিউমোনিয়ার মত শিশু রোগ থেকে সাবধান থাকুন। কারণ এই ধরনের অপুষ্টি জনিত রোগ থেকে সমস্যা হতে পারে। রাতকানা রোগের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।
এডভেঞ্চার আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়;
comment url